শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

মহাশক্তিমান আলো (চতুর্থ পর্ব)

মহা প্রলয় ময়দানের, তাঁরই মতো করে আলোতে আলো আকারে নীজেকে প্রদর্শন করাবেন এবং প্রয়োজন বাণী প্রদান করবেন। আল্লাহর প্রেরিত কোন মহা মানব তাঁকে দেখেছে কোন প্রমাণ নেই। শুধু মুসা (আঃ) দেখার জন্য অভিমান করলে, তাঁর সে বাসনা পূরণ করার ল্েয আল্লাহর নূরের ছায়া প্রদর্শন করিয়েছিলেন। কিন্তু নূরের ছায়ার প্রথম ঝলকেই মুসা (আঃ) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, নূরের ঝলকের ঝলকানীতে কূহে তূরের কিয়দাংশ জ্বলে কালো পথরে পরিণত হয়, তা আজও পরিলতি হচ্ছে এবং ল ল মানুষ দর্শনার্থে কূহেতূর পাহাড়ে ধর্না দিচ্ছে। সে জ্বলন্ত কালো পাথর এনে চুসুরমা হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (দঃ) যখন মিরাজ শরীফে অর্থাৎ আকাশ ভ্রমনাবস্থায়, যেখানে আল্লাহর সাথে কথা আদান প্রদান করেছেন, সেখানে, “ইয়া নাবী সালাম আলাইকা” বলেনি “আসসালামু আলাইকা, আইয়্যুহান্নাবিয়্যু” শব্দটি ইয়া শব্দের পরিবর্তে বলা হয়েছে। ইয়া শব্দটি ও বিনোই নম্র ভাব প্রকাশক শব্দ ব্যবহার করে মহান স্র্যষ্টা আল্লাহ তাঁরই সৃষ্টি নবী (দ:) কে সম্বোধন সূচক  শব্দে ডেকে বলেছেন, “ইয়া আইয়্যূহাররাসূল” বলে আহ্বান করেছেন। শব্দটি নিকটতম এবং দূরাবস্থিত জনকে আহবান সূচক শব্দ বুঝায়।
নবী (দঃ) আল্লাহ থেকে দূরে অবস্থান করেননি যে, “ইয়া” সম্বোধন করে ডাক দেবেন। এত নিকটে ছিলেন যে, “ইয়া” ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি, তাই আইয়্যূন্না বিইয়্যূ” শব্দে ডেকেছেন আল্লাহ এবং নবী (দঃ) এর মধ্যে কত দূরত্ব ছিলো যদিও দু একটু বলা আছে কিন্তু মূলত বলার মতো মতা বা সে দূরত্ব মাপ যন্ত্র মানবের নেই। যদি একটু ল্য করা যায় আধা গ্লাস পানির মধ্যে বাকি আধা গ্লাসে দুধ ঢেলে দেয়া হয়, তখন দুধ পানিতে মিশে একাকার হয়ে যাবে। মিশ্রিত পানি এবং দুধ একাকার হয়েছে কিন্তু তা যাঁদের নিকট সে যন্ত্র আছে, তাঁরাই জানতে পারেন দুধ এবং পানির মধ্যে দূরত্ব কত? আমার জানা নেই। তবে মিশ্রিত দুধ এবং পানির মধ্য খানে পদার্থ পর্দা আছে তা আমাদের এই দর্শন শক্তির বাহেরে। বিসমিল্লাহ বাণীটি ঊনিশ পারায় সূরা নমলে আঁয়াত হিসেবে যুক্ত হয়ে এসেছে, তুলনাহীন, সর্ব শক্তিমান একটি বাক্য, এ বাক্যটি হচ্ছে স্রষ্টার সৃষ্টির এবং কুরআনে পাকের ভিত্তি। এ বাক্যটিই স্রষ্টার সৃষ্টির এবং মহা পবিত্র কুরআনে পাকের মালীক এবং রক। এ বাক্যটি যেথা প্রয়োগ করা হবে, সেখানে কোন অবৈধতা মিথ্যা কুচক্রান্ত অসত্য উক্তির স্থান নেই। এ বাক্যে রয়েছে সর্ব শক্তিমান রাহমাত, বারক্বাত, করুণা এবং শক্তির তরঙ্গ। এ বাক্যটি অবহেলিত বা লঙ্ঘীত হলে সে সর্ব শক্তিমান স্রষ্টা আল্লাহর করুনা রাহমত, বারক্বাত থেকে বঞ্চিত হবে। এ বাক্যটি থেকেই সমগ্র সৃষ্টি জগতের একটি অণু পরমাণু ও বঞ্চিত হয় না। এ বাক্য শক্তি বলেই সৃষ্টি রতি হচ্ছে। যে দিন এ আলো মহা শক্তিমান তথা আল্লাহ কে স্মরণ করার মতো কেউ থাকবে না। সে দিন মহা প্রলয় সংঘতি হবে কিছুই থাকবে না।

আলোর নবী মুহাম্মদ (দঃ)

“নূরে আল্লাহ” কে আমরা আল্লাহ শব্দ দ্বারা আমাদের স্রষ্টাকে স্মরণ করি, তিনি সর্ব শেষ সর্ব শক্তিধর একটি আলো, যে আলোর কোন মেছাল বা উদাহরণ সৃষ্টি জগতে নেই। তিনি আলোর কত পর্দা দ্বারা আবৃত বা আল্লাহ নামক আলোর কত গভীরে অবস্থান করছে কারো বলার মতা নেই। যেমন আমরা বাতাস বা হাওয়া নামক পদার্থের মধ্যে জীবন যাপন করছি জান্তাম না। বৈজ্ঞানীকগণ অর্থাৎ গবেষকগণ তা আবিষ্কার করেছেন। আল্লাহর বাণী “ইয়া আইয়্যুহাল্লাজীনা আমানু) আদর বিনোই অর্থাৎ আবদারের সাথে আহবান সূচক বাক্য। হে, ওহে এইযে, আমার বিশ্বাসীগণকে ডাকছি। তোমরা আমার দিকে ল্য কর এবং আমার বাণীটির দিকে মনোনিবেশ কর। আমি তোমাদের ল্েয বলছি “আমি এবং আমার ফিরিস্তাগণ অর্থাৎ আমার দুতগণ দরূদ অর্থাৎ দোয়া করুণা রাহমাত বারক্বাত স্বরূপ (ছোয়াল্লু) শব্দটি পাঠ করি অর্থাৎ পড়ি আমার হাবীব দোস্ত নবী (দঃ) এর ওপর।  হে, ওহে আমার ওপর বিশ্বাসীগণ তোমরাও তাঁর ওপর “দরূদ” অর্থাৎ দোয়া রাহামত, বারাক্বাত করুণা সূচক পাঠ কর অর্থাৎ পড়ো এবং সম্মানের সাথে অর্থাৎ তাজীমের আদবের সাথে সালাম, তথা, সালামত, অর্থাৎ শান্তি সূচক শব্দটি তথা সালাম পাঠ। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, উদ্ধৃতোক্তিটি, অতি আবদার জনিত আহবান সূচকোক্তি। আল্লাহর এই করুণ বিনোই সূচক আহবান, আবদার জনিত আহবানটি বা আদেশটি লঙ্ঘীত হলে, সে কুরআন শরীফের  আওয়াতয় থাকবে না, তা সহজে বুঝার মতো ইশারা রয়েছে। এ আদেশ আল্লাহর। আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘনকারী মুনাফিক নিমকহারামের দরজায় পড়ে তাই সে আল্লাহর করুণা হতে বঞ্চিত হবে। সে আল্লাহর পবিত্র ঘরে প্রবেশের অধিকার হতে ছিটকে পড়ে অন্ধকারের অতল গহবরে নিপতিত হবে।
নবী (দঃ) এর নিকট মাধ্যম ব্যতিত সরাসরি আগত সর্ব স্রেষ্ঠ একটি বাক্য, যা স্বয়ং একটি সূরা, পরে ঊনিশ পারাতে সূরা নমলে আঁয়াত হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এ অতুলনীয় সর্ব স্রেষ্ট বাক্য যা একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ সূরা, তার নাম “বিসমিল্লাহ”। এ বাক্যটি কিন্তু কুরআন শরীফের বাক্য বা আয়াত নয়, “বিসমিল্লাহ” পূর্বে যে ছিলো তারই পরিচিতি আমাদেরকে জানিয়েছেন। সূরা নমলের মাধ্যমে  বাতাসের “সাত”টা পর্দা প্রত্যেকটা পর্দা এক একটা জগত এ সাতটি জগতের মধ্যে একটি বিদ্যুৎ তরঙ্গ রয়েছে যার মধ্য দিয়ে বার্তা এবং চিত্র মহুর্তে আদান প্রদান করা হয়। আভ্যন্তরিন তরঙ্গ দিক, ওয়েব দিক বা চিত্র দিক অর্থাৎ আভ্যন্তরিন নেটওয়ার্ক। সর্ব শক্তিমান আলোর যত পর্দাই হোক সব আলোর পর্দা নিয়েই তিনি একক, আল্লাহ নামে পরিচিত এ নাম তাঁরই প্রদত্ত। এ নাম মানব কর্তৃক প্রদত্ত নয়। আর বিশেষ আলোচনা, কেউ কেউ বলে, নবী (দঃ) যখন আল্লাহর স্বাাতে যান, আল্লাহ এবং নবী (দঃ) এর মধ্যে দূরত্ব সত্তর হাজার পর্দা ছিলো কেউ বলেন দু- আঙ্গুলের মধ্যে দূরত্ব যত তত ছিলো, কেউ বলেন রোসনের একটি আবরনের মতো দূরত্ব ছিলো। মোট কথা মূল দূরত্বের খবর মানব জানে না। এ আলোর কোন অণু পরমাণু নেই। অণু পরমাণুর দৈর্ঘ্য প্রস্ত থাকে। যার দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে, তার আকার থাকে। আকার না হলে, দৈঘ্য প্রস্ত হয় না। আমাদের এ আল্লাহ নামক আলোর অনু পরমাণু নেই। তাই আকার ও নেই। বর্তমানে প্রকাশিত খবর গভেষকগণ, নাকি ঈশ্বরের কণা আবিষ্কার করেছে। যার আকার থাকে তারই কণা থাকে। কিন্তু সর্ব শক্তি ধর মহান আলো যাঁর নাম “আল্লাহ” তাঁর অণু পরমাণু নেই, তাই আকারও নেই, নিরাকারে সর্ব প্রথম মুহাম্মদ (দঃ) নামের নূর সৃষ্টি করে স্বয়ং সাথে সাথেই একাকার করে রেখেছেন। আরশ নামক জগতে আল্লাহ এবং মুহাম্মদ (দঃ) নাম দ্বয় লিপিপটে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন যা মুসলমানদের একমাত্র মুক্তির চাকি কাঠি সে মুক্তির কাঠির নাম “লা ইলাহা” ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) যারা এ এই চাকিকাটি গ্রহণ করেছে তাঁদের মুক্তি অবধারিত। স্বয়ং আল্লাহর বাণী, যারা আমার প্রদত্ত পথের পথিক হবে, আমি তাদের জন্য নরকের দ্বার চিরকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি। উদ্ধৃত বাণী অবিশ্বাসীদের জন্যে নরক দ্বার চিরকালের জন্য উন্মক্ত। নূরে মাহাম্মদ (দঃ) আল্লাহ থেকে দূরে নয়। নূরে আল্লাহ নূরে মাহাম্মদ থেকে পৃথক নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য ঃ আল্লাহ রাসূল (দ:) বলে সম্বোধন করেছেন একজনকে, যেমন “ইয়া আইয়্যুহাররাসূল” “ মুহাম্মাদর রাসূলল্লাহ (দ:) এর ল্েয। বলে, মুরসালীন শব্দটি আরবিতে জমা অর্থাৎ বাংলায় বহুবচন, এজন্য মুরসালীন শব্দটি বলা সঠিক বলে মনে হয় না। কারণ, স্রষ্টা সৃষ্টি জগতের জন্য, একজন মাত্র রাসূল সর্বপ্রথম সৃষ্টি করে আপন নামের সাথে, যুক্ত করে আরশে আজীমে আপননামের সাথে লিপিপটে, লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, যা প্রথম মানব আদম (আঃ) স্বয়ং প্রত্য করেছেন। স্রষ্টা অর্থাৎ আল্লাহ আর কোন রাসূল পাঠাবেন না। একল, দুল নবী এবং পয়গবর যা বলা হয়, তাঁদেরকে আল্লাহ রাসূল সম্বোধন করেননি কিন্তু প্রত্যেক জাতি বা গোত্র আল্লাহ কিছু বাণী দিয়ে নবী পাঠিয়েছিল যার নাম ছহীফে। যে তিন বড় গ্রন্থ  অর্থাৎ তাওরীদ, যাবর এবং ইনজীল কিতাব তাও অসম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ গ্রন্থ একমাত্র সৃষ্ট লোকের জন্য কুরআন শরীফ প্রেরিত হয়েছে।