সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৪

“দরুদ এবং সালাম সম্পর্কে আলোচনা”

আল্লাহর দরুদ অর্থ্ৎা নবী (দ:) এর ওপর এবং আল্লাহর ধূতগণ যে দরুদ পড়েন তাকে আল্লাহর দরুদ বলা হচ্ছে। ২২তম পারায় সূরা আহজাবের ৫৬তম আয়াতে তাশাহুদের দরুদের কথা বলা হয়নি, তাশাহুদের দরুদ শুধু নামাযের জন্য নির্ধারিত নামায ছাড়া পড়া যায়। কিন্তু আল্লাহ এবং ফিরিস্তাগণ যে দরুদ এবং সালাম পড়েছেন বা পড়তে বলেছেন তা আলাগ যেমন, ছুল্লোল্লাহু আলাইহী ওয়া ছাল্লেমু তাসলীমা অর্থাৎ সম্মানের সাথে দরুদ এবং সালাম প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে। এ দরুদ এবং সালাম, লঙ্ঘন করবে যে বা পাঠে অবহেলা করবে সে কুরআন পাকের আওতা ভুক্ত থাকবে না। মুসলীম দুনিয়া হতে বঞ্চিত হবে। বাস্তব এবং অবাস্তব শব্দদ্বয়ের আলোচনায়। আল্লাহ নামক সর্বশক্তিমান আলোর কোন কেন্দ্র স্থল বা উৎপত্তির স্থল নেই। যেমন সূর্যের আলোর কেন্দ্রস্থল আছে ঐ আলোর গোলক ফিন্ড কেন্দ্র থেকে আলোর বিকিরণ ঘটছে। সূর্যের সে আলোর গোলক বা বস্তু পদার্থের গোলক ফিন্ডই হোক, মোট কথা সূর্যের কেন্দ্র বিন্দু পরমাণুই হোক, সে পরমাণুর দৈর্ঘ্য প্রস্থ আছে, যার দৈর্ঘ্য প্রস্থ আছে, নিশ্চয়ই তার আকার আছে। যে আলোর পরমাণু নেই, তার দৈর্ঘ্য প্রস্থও নেই সুতরাং সে অনন্ত অসীম আকারহীন অর্থাৎ নিরাকার এবং অতুল, উপমাহীন, অদ্বিতীয় একক, একমাত্র সর্বশক্তিমান। বিশেষ বিষয়, আল্লাহ নামের মহা নূরের আকার নেই, তিনি নিরাকার, অকূল সীমান্তহীন, অনন্ত, অসীম, তাঁর অর্থাৎ আল্লাহ নামের নুরটির উৎপত্তিস্থল নেই, কেন্দ্র বিন্দু নেই, অণু-পরমাণু নেই, অণু পরমাণু থাকলে তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকবে তার কণা থাকবে, কণা থাকলে তার প্রতি ছায়া থাকবে, আল্লাহ নামের নূরের কোন প্রতিশব্দ বা প্রতিচ্ছায়া নেই, এ মহা আলোর কণাও নেই এটাই মহা শক্তিমান একক আলো আল্লাহর নামের বাস্তবতা এখানে কণা বিশিষ্ট আকারের ব্যবধান অর্থাৎ কণা বিশিষ্ট এবং লিঙ্গ বিশিষ্ট ঈশ্বরের মধ্যে মহা শক্তিমান আলোর আল্লাহর ব্যবধান। তাঁর সৃষ্টি জগতের প্রতি পরমাণুতে সে, মহা আলো এবং তাঁরই সৃষ্ট নূরে হাবীব অর্থাৎ নূরে মুহাম্মাদ (দ:) সর্বশক্তিমান নূরে আল্লাহতে মিশে একাকার হয়ে অবস্থান করছেন। যাঁরা ধ্যান, ইন্টারনেট, ফেসবুক খুলেছেন তাঁরাই এদ্বয়ের অর্থাৎ আল্লাহ এবং রাসূলের সাথে বার্তা আদান প্রদান করতে পারছেন এবং পারবেন আল্লাহর অস্তিত্বের  বাস্তবতা এবং নবী (দ:) এর আগমনের বাস্তবতার প্রমাণ রেখে পর্দায় গিয়েছেন, আল্লাহর নূর প্রদর্শন করেছেন, এবং নবী (দ:) কে স্বপ্নে বা তন্দ্রায় বাস্তবাকারে প্রদর্শন করেছেন। তাঁদের পথে যাঁরা থাকবেন তাঁরাই দর্শন করবেন।      

বিসমিল্লাহ সম্পর্কিত পুনঃ আলোচনা

কুরআনে পাকের ১৯তমাংশে সূরা নমলে, নবী  সোলায়মান (আ:) এর সময় ইয়েমেনের রাণী বিলক্বীসের নিকট পত্রে বিসমিল্লাহ সূরাটির বা বাক্যটি মহা পবিত্র কুরআনের আয়াত বা জুমলা বা বাক্য হিসেবে যুক্ত হয়। ল্য করা যাচ্ছে যে, “বিসমিল্লাহ” সূরা বা বাক্যটি দুরকমে আগমন ঘটেছিলো। প্রথম বার স্বয়ং সূরা হিসেবে দ্বিতীয়বার সূরা নমলে আয়াত বা বাক্য হিসেবে আগমন ঘটেছিলো। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, কুরআনে পাকের মধ্যে অবতির্ণ বা নাজিলকৃত ১১৪ (একশত চৌদ্দ) সূরার মধ্যে “বিসমিল্লাহ” শরীফেই সূরা বাক্য হিসেবে প্রথম অবতির্ণোচ্ছারিত সূরা। পরে ১৯ তম পারায় বা অংশে সূরা “নমলে” আয়াত হিসেবে যুক্ত হয়েছে। ল্য করা যাচ্ছে বিসমিল্লাহ শরীফ স্বাধীন ভাবে প্রথম নাজিল হওয়ায় বিসমিল্লাহ শরীফেই গারে হিরায় প্রথম নাজিলকৃত সূরা, দ্বিতীয় ইক্বরা শব্দটি উচ্চারিত শব্দ।

মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৪

একটু খুলে বলা হচ্ছে “ইয়া”

ইয়া আরবী শব্দ, ইয়া  সম্পর্কিত আলোচনা ইয়া= অর্থাৎ হে, ওহে, ওগো সম্বোধন সূচক। যেমন হে বন্ধু, ওগো প্রিয় ওগো এদিকে এসো ডাক সূচক শব্দ তুমি কোথায় আছ? যেখানেই থাকনা কেন, আমাকে ভুলবে না। আমা হতে মুখ ফিরিয়ে রাখবে না। তুমি পৃথিবীর যে কোন জায়গায় থাক না কেন তুমি আমার অন্তরের-অন্তর হৃদয়ের কেন্দ্র বিন্দুতে চির জীবন্ত। সব সময় তুমি উপস্থিত যে দিকে তাকাই শুধু তুমি আর তুমি আমার, আমায় ভুলবে না। ইয়া আল্লাহ আপনি এবং আপনার দোস্ত মুৃহাম্মাদ (দ:) সদা আমাদের হৃদয়ের গভীর কেন্দ্র বিন্দুতে উপস্থিত। যাঁরা সে শক্তি অর্জন করবেন তাঁরা দেখেন এবং দেখতে থাকবেন। নূরে মুহাম্মদ (দ:) নামে পৃথিবীতে আগমনের বার্তা আদম (আ:) থেকে ঘোষিত হয়ে আসছে। এবং মানবের মুক্তির শান্তির নির্দেশনা গ্রন্থ আল-ক্বোরআন রেখে গেলেন। যাঁরা এ গ্রন্থ অনুসরণ অনুকরণে ব্রত, তাঁরাই মুক্তি পেলেন এবং পাবেন।
বাস্তব এবং অবাস্তব শব্দ দ্বয়ের মধ্যে ব্যবধান কি?
সর্বশক্তিমান নূরে আল্লাহর আবদার জনিত বাণী। “বিসমিল্লাহ” এবং দরুদাল্লাহ অর্থাৎ যে দরুদ আল্লাহ এবং ফিরিস্তাগণ পড়েন। তা দরুদে ইব্রাহীম নয়। দরুদে ইব্রাহীম নামাযের জন্য খাস, আর যে দরুদ সবসময় পড়া যায় যেমন, “ছাল্লেল্লাহু আইহীওয়াসাল্লাম” ছাল্লেল্লাহু আলা ছাইয়্যেদিনা মুহাম্মাদ ওয়া-আলীহি ওয়াসাল্লাম, ইত্যাদি এবং নবী (দ:) এর ওপর সম্মানের সাথে সালাম পাঠের স্রেষ্ট আবদারাদেশ সুতরাং পরিলতি হচ্ছে এ আদেশ লঙ্ঘনকারী ক্বোরআনের আওতাভুক্ত থাকবে না। নবী (দ:) এর মু-মোবারকের মাধ্যমে সরাসরি আগত এবং প্রথমোচ্চারিত বাক্য “বিসমিল্লাহ” শরীফ এটা বাস্তব। ইক্বরা দ্বিতীয় উচ্চারিত শব্দ। বিসমিল্লাহ বাক্যটি অতুল=তথা তুলনাহীন , সর্বশক্তিমান, সর্বস্রেষ্ট বাক্য, যা “কুরআনে পাকের ১১৪তম সূরা থেকে পৃথক ভাবে আগত। নবী (দ:) এর মু- মোবারকের মাধ্যমে সর্ব প্রথম একক অর্থাৎ স্বাধীনভাবে আগত সৃষ্টি জগতে ইসলামের ভিত্তি মূলত “বিসমিল্লাহ” নবী (দ:) কে সরাসরি বিসমিল্লাহ শরীফ শিা দিয়ে আল্লাহ স্বয়ং শিক হলেন- এবং বিসমিল্লাহ দ্বারা ইসলামের ভিত্তিস্থাপন করে আল্লাহ স্বয়ং সাী হলেন বলে বাস্তবে প্রমাণ রাখলেন। বাক্যটি বাংলা ভাষায় “আল্লাহর নামে” আরবী ভাষায় তা “বিসমিল্লাহ”। বিসমিল্লাহ প্রথম উচ্চারিত না হলে ইক্বরা উচ্চারিত হতো না এবং আল্লাহর সৃষ্ট জগতই মহা শক্তিমান আলো বা আল্লাহর বাস্তবতা প্রমাণ করে। নবী (দ:) আকারে এসেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন এবং জীবন জীবিকার পূর্ণ সংবিধান মহাগ্রন্থ আল কুরআন মানবকুলকে প্রদান করে গেলেন এটাই মানবের মুক্তিবিধান এবং মুহাম্মাদ (দ:) এর আগমনের এবং উপস্থিতির বাস্তবতা। 

আলোর নবী মুহাম্মদ (দঃ)

“নূরে আল্লাহ” কে আমরা আল্লাহ শব্দ দ্বারা আমাদের স্রষ্টাকে স্মরণ করি, তিনি সর্ব শেষ সর্ব শক্তিধর একটি আলো, যে আলোর কোন মেছাল বা উদাহরণ সৃষ্টি জগতে নেই। তিনি আলোর কত পর্দা দ্বারা আবৃত বা আল্লাহ নামক আলোর কত গভীরে অবস্থান করছে কারো বলার মতা নেই। যেমন আমরা বাতাস বা হাওয়া নামক পদার্থের মধ্যে জীবন যাপন করছি জান্তাম না। বৈজ্ঞানীকগণ অর্থাৎ গবেষকগণ তা আবিষ্কার করেছেন। আল্লাহর বাণী “ইয়া আইয়্যুহাল্লাজীনা আমানু) আদর বিনোই অর্থাৎ আবদারের সাথে আহবান সূচক বাক্য। হে, ওহে এইযে, আমার বিশ্বাসীগণকে ডাকছি। তোমরা আমার দিকে ল্য কর এবং আমার বাণীটির দিকে মনোনিবেশ কর। আমি তোমাদের ল্েয বলছি “আমি এবং আমার ফিরিস্তাগণ অর্থাৎ আমার দুতগণ দরূদ অর্থাৎ দোয়া করুণা রাহমাত বারক্বাত স্বরূপ (ছোয়াল্লু) শব্দটি পাঠ করি অর্থাৎ পড়ি আমার হাবীব দোস্ত নবী (দঃ) এর ওপর।  হে, ওহে আমার ওপর বিশ্বাসীগণ তোমরাও তাঁর ওপর “দরূদ” অর্থাৎ দোয়া রাহামত, বারাক্বাত করুণা সূচক পাঠ কর অর্থাৎ পড়ো এবং সম্মানের সাথে অর্থাৎ তাজীমের আদবের সাথে সালাম, তথা, সালামত, অর্থাৎ শান্তি সূচক শব্দটি তথা সালাম পাঠ। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, উদ্ধৃতোক্তিটি, অতি আবদার জনিত আহবান সূচকোক্তি। আল্লাহর এই করুণ বিনোই সূচক আহবান, আবদার জনিত আহবানটি বা আদেশটি লঙ্ঘীত হলে, সে কুরআন শরীফের  আওয়াতয় থাকবে না, তা সহজে বুঝার মতো ইশারা রয়েছে। এ আদেশ আল্লাহর। আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘনকারী মুনাফিক নিমকহারামের দরজায় পড়ে তাই সে আল্লাহর করুণা হতে বঞ্চিত হবে। সে আল্লাহর পবিত্র ঘরে প্রবেশের অধিকার হতে ছিটকে পড়ে অন্ধকারের অতল গহবরে নিপতিত হবে।
নবী (দঃ) এর নিকট মাধ্যম ব্যতিত সরাসরি আগত সর্ব স্রেষ্ঠ একটি বাক্য, যা স্বয়ং একটি সূরা, পরে ঊনিশ পারাতে সূরা নমলে আঁয়াত হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এ অতুলনীয় সর্ব স্রেষ্ট বাক্য যা একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ সূরা, তার নাম “বিসমিল্লাহ”। এ বাক্যটি কিন্তু কুরআন শরীফের বাক্য বা আয়াত নয়, “বিসমিল্লাহ” পূর্বে যে ছিলো তারই পরিচিতি আমাদেরকে জানিয়েছেন। সূরা নমলের মাধ্যমে  বাতাসের “সাত”টা পর্দা প্রত্যেকটা পর্দা এক একটা জগত এ সাতটি জগতের মধ্যে একটি বিদ্যুৎ তরঙ্গ রয়েছে যার মধ্য দিয়ে বার্তা এবং চিত্র মহুর্তে আদান প্রদান করা হয়। আভ্যন্তরিন তরঙ্গ দিক, ওয়েব দিক বা চিত্র দিক অর্থাৎ আভ্যন্তরিন নেটওয়ার্ক। সর্ব শক্তিমান আলোর যত পর্দাই হোক সব আলোর পর্দা নিয়েই তিনি একক, আল্লাহ নামে পরিচিত এ নাম তাঁরই প্রদত্ত। এ নাম মানব কর্তৃক প্রদত্ত নয়। আর বিশেষ আলোচনা, কেউ কেউ বলে, নবী (দঃ) যখন আল্লাহর স্বাাতে যান, আল্লাহ এবং নবী (দঃ) এর মধ্যে দূরত্ব সত্তর হাজার পর্দা ছিলো কেউ বলেন দু- আঙ্গুলের মধ্যে দূরত্ব যত তত ছিলো, কেউ বলেন রোসনের একটি আবরনের মতো দূরত্ব ছিলো। মোট কথা মূল দূরত্বের খবর মানব জানে না। এ আলোর কোন অণু পরমাণু নেই। অণু পরমাণুর দৈর্ঘ্য প্রস্ত থাকে। যার দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে, তার আকার থাকে। আকার না হলে, দৈঘ্য প্রস্ত হয় না। আমাদের এ আল্লাহ নামক আলোর অনু পরমাণু নেই। তাই আকার ও নেই। বর্তমানে প্রকাশিত খবর গভেষকগণ, নাকি ঈশ্বরের কণা আবিষ্কার করেছে। যার আকার থাকে তারই কণা থাকে। কিন্তু সর্ব শক্তি ধর মহান আলো যাঁর নাম “আল্লাহ” তাঁর অণু পরমাণু নেই, তাই আকারও নেই, নিরাকারে সর্ব প্রথম মুহাম্মদ (দঃ) নামের নূর সৃষ্টি করে স্বয়ং সাথে সাথেই একাকার করে রেখেছেন। আরশ নামক জগতে আল্লাহ এবং মুহাম্মদ (দঃ) নাম দ্বয় লিপিপটে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন যা মুসলমানদের একমাত্র মুক্তির চাকি কাঠি সে মুক্তির কাঠির নাম “লা ইলাহা” ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) যারা এ এই চাকিকাটি গ্রহণ করেছে তাঁদের মুক্তি অবধারিত। স্বয়ং আল্লাহর বাণী, যারা আমার প্রদত্ত পথের পথিক হবে, আমি তাদের জন্য নরকের দ্বার চিরকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি। উদ্ধৃত বাণী অবিশ্বাসীদের জন্যে নরক দ্বার চিরকালের জন্য উন্মক্ত। নূরে মাহাম্মদ (দঃ) আল্লাহ থেকে দূরে নয়। নূরে আল্লাহ নূরে মাহাম্মদ থেকে পৃথক নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য ঃ আল্লাহ রাসূল (দ:) বলে সম্বোধন করেছেন একজনকে, যেমন “ইয়া আইয়্যুহাররাসূল” “ মুহাম্মাদর রাসূলল্লাহ (দ:) এর ল্েয। বলে, মুরসালীন শব্দটি আরবিতে জমা অর্থাৎ বাংলায় বহুবচন, এজন্য মুরসালীন শব্দটি বলা সঠিক বলে মনে হয় না। কারণ, স্রষ্টা সৃষ্টি জগতের জন্য, একজন মাত্র রাসূল সর্বপ্রথম সৃষ্টি করে আপন নামের সাথে, যুক্ত করে আরশে আজীমে আপননামের সাথে লিপিপটে, লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, যা প্রথম মানব আদম (আঃ) স্বয়ং প্রত্য করেছেন। স্রষ্টা অর্থাৎ আল্লাহ আর কোন রাসূল পাঠাবেন না। একল, দুল নবী এবং পয়গবর যা বলা হয়, তাঁদেরকে আল্লাহ রাসূল সম্বোধন করেননি কিন্তু প্রত্যেক জাতি বা গোত্র আল্লাহ কিছু বাণী দিয়ে নবী পাঠিয়েছিল যার নাম ছহীফে। যে তিন বড় গ্রন্থ  অর্থাৎ তাওরীদ, যাবর এবং ইনজীল কিতাব তাও অসম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ গ্রন্থ একমাত্র সৃষ্ট লোকের জন্য কুরআন শরীফ প্রেরিত হয়েছে।

নবী (দ:) যদি নূরের আলোর হয়। আঘাতে রক্তাক্ত এবং দান্দান মোবারক শহীদ হলেন কেন? মহাস্রষ্টা উনাদের উপর দিয়ে, এ সকল ঘটনা সংঘটিত করে, আমাদেরকে এ শিা প্রদান করেছেন যে, উপকার করতে গেলে কিছু তি স্বীকার করতে হবে, পেতে গেলে বিবেক-বিবেচনা, শারীরিক শ্রম শক্তি দিতে হবে সহ্য শক্তি তথা ছবর শক্তি দেখাতে হবে। লাভ করতে হলে কিছু তি স্বীকার করতে হবে। তাতে মালিক খুশি হবেন। স্রষ্টার খুশি বা সন্তুষ্টির জন্য ই-তো মহা মানবগণের আগমন ঘটে। মহা মানবগণের সহ্য-ছবর শক্তি দেখে আমরা যেন তা থেকে শিা নিতে পারি। নবী (দ:) তবিত শরীরে রক্তাক্ত কলেবরে তায়েফ বাসিদের জন্য মঙ্গল প্রার্থনা করেছিলেন। মহামানবগণই মানুষকে মন্দকর্ম বা নরক কর্ম থেকে বাঁচাতে এসে আরামকে হারাম করে মানুষকে মুক্তির পথ প্রদর্শন করে।
জন্ম দিবস সম্পর্কিত বিষয় অর্থাৎ “মিলাদ”
জীবদ্দশায় জন্ম দিবস পালনের প্রশ্নই আসে না। কারণ যে জন্ম নেয়, তাঁর গুণাগুণ, দানাবদান কি? বিশ্ব জাতি তাঁর থেকে কি পেয়েছে, তাঁকে স্মরণ করার জন্য? তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর কর্তৃক শান্তির বা মুক্তির পথ প্রদর্শিত হয়েছে কি? তাঁর অবদানে পুন: জাগরণের সচেতন বিবেক তাঁর আদর্শকে ধরে রাখার জন্য তাঁর জন্ম দিবস পালনের মাধ্যমে জাগরণ, সচেতনতা, সতেজ রাখার জন্য জন্ম দিবস অর্থাৎ মিলাদ অনুষ্ঠান পালন করা অনুসারিদের জন্য ফরজ অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য অতিদায়িত্ব ভবিষ্যত প্রজন্মরা যেন পথ ভ্রষ্ট না হয়। প্রত্যেক ধর্মানুসারিগণ তা পালন করে থাকেন, ধর্ম রার জন্য। পূর্বোদ্ধৃত বাণীটি একটি বিশেষ বাণী অতি আদরের আবদার জনিত বাণী ল্য করা যাক, উক্ত বাণীটি এত আবদারের কেন? পবিত্র কালামপাকের ২২তম পারা, ৫৬তম আয়ত বা বাক্যে একমাত্র আল্লাহর নির্ধারিত, অবধারিত, লঙ্ঘনীয়, মহান আদেশটিতে পরিলতি হচ্ছে যে, এমন একটি আদেশ, যে আদেশটি সর্বস্রেষ্ট আদেশ বলে গণ্য করা যায়। আদেশটি হলো- (ইন্নাল্লাহা= নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ, “ওয়া” (এবং) আমার মালায়েক অর্থাৎ ফিরিস্তা বা দূত্গণ (ইউছাল্লুানা) দরুদ,অর্থাৎ দোয়া, করুণা, রাহমাত,বারক্বাত জনিত শব্দ (আলান্নাবী-ই) নবী (দ:) এর ওপর বর্ষন এবং ইয়া= হে , ওহে (আই ইউহাল্লাজীনা আমানু)= আমার বিশ্বাসিগণ , (ছোয়াল্লু আলাইহি)= তাঁর ওপর দরুদ “ওয়া” (এবং) সাল্লেমু= সালাম সালামত, শান্তি জনিত বাণী বর্ষন অর্থাৎ পাঠ  কর। তাসলীমা= সম্মান অর্থাৎ তাজীমের সাথে। (পূর্ণ আরবী ইন্নাল্লাহা ওয়া মালাই-কাতাহু ইউছোয়াল্লুনা আলান্নাবি-ই-ইয়া আই-ইউহাল্লাজীনা আমানূ ছোয়াল্লু আলাইহী ওয়া ছাল্লেমু তাসলীমা)= অর্থ নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ এবং আমার দূতগণ অর্থাৎ ফিরিস্তাগণ আমার নবীর ওপর দরুদ এবং সালাম পাঠ করি। হে আমার বিশ্বাসীগণ তোমরাও সম্মানের সাথে অর্থাৎ তাজীমের সাথে তাঁর ওপর দরুদ এবং সালাম পাঠ কর।

আল্লাহর সর্বোত্তম আদেশ জনিত বাক্য

“ইক্বরা” অর্থাৎ পাঠ করুন। “ক্বারা” অর্থ পাঠ। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে প্রাণী কুলে, স্রেষ্ট প্রাণী মানব নামের প্রাণী কুল। মানব-কুল আল্লাহ হতে আদিষ্ট হচ্ছে,তাঁর স্ব-বাণীতে বলছেন বা আদেশ করছেন। “ইক্বরা বিসমি রাব্বিকাল্লাজী খালাক্ব” অর্থাৎ নিজ প্রতি পালকের নামে পাঠ করো। যিনি সর্বস্রষ্টা, আল্লাহর সৃষ্টি মানব কুল আল্লাহ হতে আদিষ্ট হচ্ছে যে, যে কোন বৈধ কর্মের প্রারম্ভে সৃষ্টি কর্তার নামটি সর্বপ্রথম অর্থাৎ আল্লাহর নামটি উচ্চারণ করতে। তাই জ্ঞান বিকাশের জন্য অর্থাৎ অজানাকে জানতে পাঠ এবং ভ্রমন করতেই হবে। নবী (দ:) কে দিয়ে, গগনাকাশ ভ্রমন করিয়ে তথা “মিরাজ শরীফ করিয়ে” মানব কুলকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। যে জ্ঞান বিকাশেরে জন্য যত দূর ইচ্ছে চলে যাও। পরিলতি হচ্ছে স্রষ্টার আদেশ গুলোর মধ্যে সর্বোত্তম আদেশটি হচ্ছে পাঠ কর সর্বপ্রথম আমার নাম পাঠান্তে। দ্বিতীয় মহা আদেশটি হচ্ছে নবী (দ:) এর ওপর দরুদ এবং সালাম পাঠ না করলে সর্ব শেষ, প্রেরিত আল্লাহর মহা পবিত্র গ্রন্থ বা সংবিধান আল কুরআনের আওতায় ভুক্ত থাকবে না। কুরআন স্বা দিচ্ছে “সূরা আলাক্ব”  
বি:দ্র: নবী (দ:) এর সর্বপ্রথম উচ্চারিত শব্দ ‘বিসমিল্লাহ’ দ্বিতীয়টি হচ্ছে ‘ইক্বরা’।
পূর্বোল্লেখিত উক্তিটি পুনরাবৃত্তি করছি, তা হলো স্রষ্টার সৃষ্ট সকল আত্মাই আলোরাত্মা।

যমহা প্রলয় ময়দানের, তাঁরই মতো করে আলোতে আলো আকারে নীজেকে প্রদর্শন করাবেন এবং প্রয়োজন বাণী প্রদান করবেন। আল্লাহর প্রেরিত কোন মহা মানব তাঁকে দেখেছে কোন প্রমাণ নেই। শুধু মুসা (আঃ) দেখার জন্য অভিমান করলে, তাঁর সে বাসনা পূরণ করার ল্েয আল্লাহর নূরের ছায়া প্রদর্শন করিয়েছিলেন। কিন্তু নূরের ছায়ার প্রথম ঝলকেই মুসা (আঃ) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, নূরের ঝলকের ঝলকানীতে কূহে তূরের কিয়দাংশ জ্বলে কালো পথরে পরিণত হয়, তা আজও পরিলতি হচ্ছে এবং ল ল মানুষ দর্শনার্থে কূহেতূর পাহাড়ে ধর্না দিচ্ছে। সে জ্বলন্ত কালো পাথর এনে চুসুরমা হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (দঃ) যখন মিরাজ শরীফে অর্থাৎ আকাশ ভ্রমনাবস্থায়, যেখানে আল্লাহর সাথে কথা আদান প্রদান করেছেন, সেখানে, “ইয়া নাবী সালাম আলাইকা” বলেনি “আসসালামু আলাইকা, আইয়্যুহান্নাবিয়্যু” শব্দটি ইয়া শব্দের পরিবর্তে বলা হয়েছে। ইয়া শব্দটি ও বিনোই নম্র ভাব প্রকাশক শব্দ ব্যবহার করে মহান স্র্যষ্টা আল্লাহ তাঁরই সৃষ্টি নবী (দ:) কে সম্বোধন সূচক  শব্দে ডেকে বলেছেন, “ইয়া আইয়্যূহাররাসূল” বলে আহ্বান করেছেন। শব্দটি নিকটতম এবং দূরাবস্থিত জনকে আহবান সূচক শব্দ বুঝায়।
নবী (দঃ) আল্লাহ থেকে দূরে অবস্থান করেননি যে, “ইয়া” সম্বোধন করে ডাক দেবেন। এত নিকটে ছিলেন যে, “ইয়া” ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি, তাই আইয়্যূন্না বিইয়্যূ” শব্দে ডেকেছেন আল্লাহ এবং নবী (দঃ) এর মধ্যে কত দূরত্ব ছিলো যদিও দু একটু বলা আছে কিন্তু মূলত বলার মতো মতা বা সে দূরত্ব মাপ যন্ত্র মানবের নেই। যদি একটু ল্য করা যায় আধা গ্লাস পানির মধ্যে বাকি আধা গ্লাসে দুধ ঢেলে দেয়া হয়, তখন দুধ পানিতে মিশে একাকার হয়ে যাবে। মিশ্রিত পানি এবং দুধ একাকার হয়েছে কিন্তু তা যাঁদের নিকট সে যন্ত্র আছে, তাঁরাই জানতে পারেন দুধ এবং পানির মধ্যে দূরত্ব কত? আমার জানা নেই। তবে মিশ্রিত দুধ এবং পানির মধ্য খানে পদার্থ পর্দা আছে তা আমাদের এই দর্শন শক্তির বাহেরে। বিসমিল্লাহ বাণীটি ঊনিশ পারায় সূরা নমলে আঁয়াত হিসেবে যুক্ত হয়ে এসেছে, তুলনাহীন, সর্ব শক্তিমান একটি বাক্য, এ বাক্যটি হচ্ছে স্রষ্টার সৃষ্টির এবং কুরআনে পাকের ভিত্তি। এ বাক্যটিই স্রষ্টার সৃষ্টির এবং মহা পবিত্র কুরআনে পাকের মালীক এবং রক। এ বাক্যটি যেথা প্রয়োগ করা হবে, সেখানে কোন অবৈধতা মিথ্যা কুচক্রান্ত অসত্য উক্তির স্থান নেই। এ বাক্যে রয়েছে সর্ব শক্তিমান রাহমাত, বারক্বাত, করুণা এবং শক্তির তরঙ্গ। এ বাক্যটি অবহেলিত বা লঙ্ঘীত হলে সে সর্ব শক্তিমান স্রষ্টা আল্লাহর করুনা রাহমত, বারক্বাত থেকে বঞ্চিত হবে। এ বাক্যটি থেকেই সমগ্র সৃষ্টি জগতের একটি অণু পরমাণু ও বঞ্চিত হয় না। এ বাক্য শক্তি বলেই সৃষ্টি রতি হচ্ছে। যে দিন এ আলো মহা শক্তিমান তথা আল্লাহ কে স্মরণ করার মতো কেউ থাকবে না। সে দিন মহা প্রলয় সংঘতি হবে কিছুই থাকবে না।

মহাশক্তিমান আলো (৫ম পর্ব)

সূর্যের আলোকে যেমন বলা হয় সূর্যের আলো কিন্তু সূর্যের আলো সূর্য নয়। সূর্য আলো থেকে পৃথক নয়। চাঁদের আলো যেমন চাঁদ নয়, চাঁদও চাঁদের আলো থেকে পৃথক নয়। তেমনি মুহাম্মদ (দ:) নামের নূর বা আলো আল্লাহ হতে পৃৃথক নয়। কিন্তু মুহাম্মদ (দ:) আল্লাহ নামের নূর বা মহা আলোটি নয়। চাঁদের আলো যেমন চাঁদের সাথে-সাথে এবং সূর্যের আলো সূর্যের সাথে সাথে তেমনি আল্লাহর হাবীব নূরে মুহাম্মাদ (দ:) নূরে আল্লাহর সাথে সাথে সর্বত্র বিরাজ মান। এর ওপর বিশ্বাস না হলে সে আল্লাহ এবং রাসূল (দ:) এর ওপর বিশ্বাসী হতে পারলেন না। আল্লাহর সাথে-সাথে রাখার জন্যই তাঁর হাবীব  মুহাম্মদ (দঃ) কে সর্বপ্রথম আরশে আজীমে আল্লাহর নামের সাথে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ নাম যুক্ত করে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, তার দোস্ত মুহাম্মাদি নূর সর্বপ্রথম সৃষ্টি করে। আল্লাহ খাস করে নিজের সাথে সাথে রাখার জন্যই সর্বপ্রথম মুহাম্মাদি নূর সৃষ্টি করেন বলেই মুহাম্মাদ (দ:) কে আল্লাহর নূর বলা হয়। যেমন আবদুল করীমের ছেলে বলা হলে বুঝা যায় যে, তাঁর ছেলের রক্ত মাংশের সাথে করীমের রক্ত মাংশের স¯েপ্রক্ততা  আছে। তা ডাক্তারি পরীায় ধরা পড়ে বলে, করীমের ছেলে  বলে নিশ্চিত হয়। তাই নূরে মুহাম্মদ (দ:) এর সাথে নূরে আল্লাহর স¯েপ্রক্ততা আছে বলেই, মুহাম্মাদ (দ:) কে আল্লাহর নূর বলা হয়। করীমের ছেলেকে করীম বলা হয় নাম করীমের ছেলে করীম নয়, আর ছেলের জন্মদাতা করীম, ছেলের ছেলে নয়। দুই রক্ত মাংশে এক হলেও দুই আপন-আপন জায়গায় পৃথক পৃথক ভাবে অবস্থান করছে। এটাই চিরন্তন সত্য। করীমের সন্তান বলা হলেও করিমের সম্পূর্ণ তা সন্তানের মধ্যে নেই করীমের সন্তানের আত্মা সে মূল আত্মাটির মালিকও  সন্তান নয়, সন্তানের আত্মার মালিক সৃষ্টি কর্তা। নূরে মুহাম্মদ (দঃ) এর নূরের খাস মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ, মুহাম্মাদ (দ:) নয়। তাই নূর মুহাম্মদ (দ:) এর নূর তার মালীক আল্লাহর সাথে-সাথেই থাকেন। আল্লাহর খাস হাবীবে নূর মুহাম্মাদ (দ:) যদি আল্লাহর অর্থাৎ দোস্তের সাথে দোস্ত না থাকে, তবে আমাদের ঈমানী কালেমার মধ্যে আল্লাহর নামের সাথে মুহাম্মাদ (দ:) এর নাম উচ্চারিত হবে কেন? কোন মুসলিম মৃত্যুর পথিক হলে, তাকে কালেমা তাইয়্যেবা পড়িয়ে শুনীয় দিতে হবে। মৃত্যু পথিক সচেতন না থাকুন, সে শুনতে পেলে শান্তি পায়। ক্বুর আন এবং হাদীস  শরীফে এর বর্ণনা রয়েছে। যত নবী রাসূলগণ এসেছেন প্রত্যেকই ক্ববরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে সালাম দোয়া পাঠ এবং কথা আদান প্রদান করতেন। তার কালেমা তাইয়্যেবা সাথে মুহাম্মাদ (দ:) এর নাম উচ্চারিত না হলে, তার মুসলিম পরিচিতি থাকে না। নবী (দ:) এর সহ যোগিতা বা শুফারিস পাবে না। আল্লাহ এবং মুহাম্মাদ (দ:) কে ইন্টারনেট ওয়েব সাইডের মতো মহা স্রষ্টার স্বীয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাঁদেরকে অর্থাৎ আল্লাহ এবং রাসূল (দ:) কে স্মরণ নামের শক্তি দ্বারা অন্তর গভীরে কিক করলেই অন্তর দৃষ্টিতে দেখা যাবে অর্থাৎ নূর বা আলো দেখা যাবে মুহাম্মাদ (দ:) কে আকারেও দেখা যাবে  কারণ আল্লাহ তাঁকে আকার দিয়ে পাঠিয়েছেন। অণু-পরমাণু, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ইউরিনিয়াম, ফোলানিয়াম, দর্শন করার মতো যাঁদের দৃষ্টি রয়েছে তাঁরাই তা দর্শন করতে পারেন। তাই আল্লাহ এবং রাসূল (দ:) কে দর্শন শক্তি অর্জন করেন যাঁরা, কেবল তাঁরাই নূরে মুহাম্মাদ (দ:) কে আকারে দেখতে পান, তাঁকে আকার দিয়ে মানুষের মতো করে একালে পাঠিয়ে ছিলেন। প্রাণী কুলকে জীবন জীবিকার পথ প্রদর্শনের জন্য আলোর প্রয়োজন। সে আলোর উৎপত্তির স্থল বা কেন্দ্র সূর্য। যাকে আমরা একটি আলোর গোলক পিন্ড হিসেবে দেখতে পাই। সে আলোরই গোলক পিন্ড কি প্রস্তর গোলক পিন্ডের আলোটি কোথা হতে নির্গত হচ্ছে, সঠিক বলার মত খবর এখানো পাওয়া যায়নিই। “নাসা” রকেটের সাহায্যে যে পরীাটি চালিয়ে ছিলো তা থেকে কোন খবর এখনও আসেনি সম্ভবত আর আসবেও না পরস্পর শুনা যাচ্ছিলো রকেটটি জুলে গেছে। আল্লাহ নামের নূরের গোলক পিন্ড বলতে কিছু নেই, অণু-পরমাণু ও নেই, কারণ তিনি নিরাকার, তাঁর আকার নেই। অণু-পরমাণুর দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে। যার দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে তার আকার থাকে। আল্লাহ নামের আলোটি শুধু আলো আর আলো। মূসা (আ:) আল্লাহর আলো প্রদর্শনের জন্য যখন বারবার প্রার্থনা করেছেন তখন আলোর একটু ছায়া প্রদর্শন করিয়েছেন তাতে মূসা (আ:) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, সে ছায়ার আলোর ঝলকে অহুদ পাহাড়ের কিয়দাংশ জুলে কালো পাথরে পরিণত হয়, যা আজ আমরা চোখের সুরমা হিসেবে ব্যবহার করি এবং পাহাড়টি প্রদর্শনের জন্য বিশ্ব থেকে মানুষ আজও গমগামান করছে।

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

মহাশক্তিমান আলো (চতুর্থ পর্ব)

মহা প্রলয় ময়দানের, তাঁরই মতো করে আলোতে আলো আকারে নীজেকে প্রদর্শন করাবেন এবং প্রয়োজন বাণী প্রদান করবেন। আল্লাহর প্রেরিত কোন মহা মানব তাঁকে দেখেছে কোন প্রমাণ নেই। শুধু মুসা (আঃ) দেখার জন্য অভিমান করলে, তাঁর সে বাসনা পূরণ করার ল্েয আল্লাহর নূরের ছায়া প্রদর্শন করিয়েছিলেন। কিন্তু নূরের ছায়ার প্রথম ঝলকেই মুসা (আঃ) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, নূরের ঝলকের ঝলকানীতে কূহে তূরের কিয়দাংশ জ্বলে কালো পথরে পরিণত হয়, তা আজও পরিলতি হচ্ছে এবং ল ল মানুষ দর্শনার্থে কূহেতূর পাহাড়ে ধর্না দিচ্ছে। সে জ্বলন্ত কালো পাথর এনে চুসুরমা হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (দঃ) যখন মিরাজ শরীফে অর্থাৎ আকাশ ভ্রমনাবস্থায়, যেখানে আল্লাহর সাথে কথা আদান প্রদান করেছেন, সেখানে, “ইয়া নাবী সালাম আলাইকা” বলেনি “আসসালামু আলাইকা, আইয়্যুহান্নাবিয়্যু” শব্দটি ইয়া শব্দের পরিবর্তে বলা হয়েছে। ইয়া শব্দটি ও বিনোই নম্র ভাব প্রকাশক শব্দ ব্যবহার করে মহান স্র্যষ্টা আল্লাহ তাঁরই সৃষ্টি নবী (দ:) কে সম্বোধন সূচক  শব্দে ডেকে বলেছেন, “ইয়া আইয়্যূহাররাসূল” বলে আহ্বান করেছেন। শব্দটি নিকটতম এবং দূরাবস্থিত জনকে আহবান সূচক শব্দ বুঝায়।
নবী (দঃ) আল্লাহ থেকে দূরে অবস্থান করেননি যে, “ইয়া” সম্বোধন করে ডাক দেবেন। এত নিকটে ছিলেন যে, “ইয়া” ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি, তাই আইয়্যূন্না বিইয়্যূ” শব্দে ডেকেছেন আল্লাহ এবং নবী (দঃ) এর মধ্যে কত দূরত্ব ছিলো যদিও দু একটু বলা আছে কিন্তু মূলত বলার মতো মতা বা সে দূরত্ব মাপ যন্ত্র মানবের নেই। যদি একটু ল্য করা যায় আধা গ্লাস পানির মধ্যে বাকি আধা গ্লাসে দুধ ঢেলে দেয়া হয়, তখন দুধ পানিতে মিশে একাকার হয়ে যাবে। মিশ্রিত পানি এবং দুধ একাকার হয়েছে কিন্তু তা যাঁদের নিকট সে যন্ত্র আছে, তাঁরাই জানতে পারেন দুধ এবং পানির মধ্যে দূরত্ব কত? আমার জানা নেই। তবে মিশ্রিত দুধ এবং পানির মধ্য খানে পদার্থ পর্দা আছে তা আমাদের এই দর্শন শক্তির বাহেরে। বিসমিল্লাহ বাণীটি ঊনিশ পারায় সূরা নমলে আঁয়াত হিসেবে যুক্ত হয়ে এসেছে, তুলনাহীন, সর্ব শক্তিমান একটি বাক্য, এ বাক্যটি হচ্ছে স্রষ্টার সৃষ্টির এবং কুরআনে পাকের ভিত্তি। এ বাক্যটিই স্রষ্টার সৃষ্টির এবং মহা পবিত্র কুরআনে পাকের মালীক এবং রক। এ বাক্যটি যেথা প্রয়োগ করা হবে, সেখানে কোন অবৈধতা মিথ্যা কুচক্রান্ত অসত্য উক্তির স্থান নেই। এ বাক্যে রয়েছে সর্ব শক্তিমান রাহমাত, বারক্বাত, করুণা এবং শক্তির তরঙ্গ। এ বাক্যটি অবহেলিত বা লঙ্ঘীত হলে সে সর্ব শক্তিমান স্রষ্টা আল্লাহর করুনা রাহমত, বারক্বাত থেকে বঞ্চিত হবে। এ বাক্যটি থেকেই সমগ্র সৃষ্টি জগতের একটি অণু পরমাণু ও বঞ্চিত হয় না। এ বাক্য শক্তি বলেই সৃষ্টি রতি হচ্ছে। যে দিন এ আলো মহা শক্তিমান তথা আল্লাহ কে স্মরণ করার মতো কেউ থাকবে না। সে দিন মহা প্রলয় সংঘতি হবে কিছুই থাকবে না।

আলোর নবী মুহাম্মদ (দঃ)

“নূরে আল্লাহ” কে আমরা আল্লাহ শব্দ দ্বারা আমাদের স্রষ্টাকে স্মরণ করি, তিনি সর্ব শেষ সর্ব শক্তিধর একটি আলো, যে আলোর কোন মেছাল বা উদাহরণ সৃষ্টি জগতে নেই। তিনি আলোর কত পর্দা দ্বারা আবৃত বা আল্লাহ নামক আলোর কত গভীরে অবস্থান করছে কারো বলার মতা নেই। যেমন আমরা বাতাস বা হাওয়া নামক পদার্থের মধ্যে জীবন যাপন করছি জান্তাম না। বৈজ্ঞানীকগণ অর্থাৎ গবেষকগণ তা আবিষ্কার করেছেন। আল্লাহর বাণী “ইয়া আইয়্যুহাল্লাজীনা আমানু) আদর বিনোই অর্থাৎ আবদারের সাথে আহবান সূচক বাক্য। হে, ওহে এইযে, আমার বিশ্বাসীগণকে ডাকছি। তোমরা আমার দিকে ল্য কর এবং আমার বাণীটির দিকে মনোনিবেশ কর। আমি তোমাদের ল্েয বলছি “আমি এবং আমার ফিরিস্তাগণ অর্থাৎ আমার দুতগণ দরূদ অর্থাৎ দোয়া করুণা রাহমাত বারক্বাত স্বরূপ (ছোয়াল্লু) শব্দটি পাঠ করি অর্থাৎ পড়ি আমার হাবীব দোস্ত নবী (দঃ) এর ওপর।  হে, ওহে আমার ওপর বিশ্বাসীগণ তোমরাও তাঁর ওপর “দরূদ” অর্থাৎ দোয়া রাহামত, বারাক্বাত করুণা সূচক পাঠ কর অর্থাৎ পড়ো এবং সম্মানের সাথে অর্থাৎ তাজীমের আদবের সাথে সালাম, তথা, সালামত, অর্থাৎ শান্তি সূচক শব্দটি তথা সালাম পাঠ। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, উদ্ধৃতোক্তিটি, অতি আবদার জনিত আহবান সূচকোক্তি। আল্লাহর এই করুণ বিনোই সূচক আহবান, আবদার জনিত আহবানটি বা আদেশটি লঙ্ঘীত হলে, সে কুরআন শরীফের  আওয়াতয় থাকবে না, তা সহজে বুঝার মতো ইশারা রয়েছে। এ আদেশ আল্লাহর। আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘনকারী মুনাফিক নিমকহারামের দরজায় পড়ে তাই সে আল্লাহর করুণা হতে বঞ্চিত হবে। সে আল্লাহর পবিত্র ঘরে প্রবেশের অধিকার হতে ছিটকে পড়ে অন্ধকারের অতল গহবরে নিপতিত হবে।
নবী (দঃ) এর নিকট মাধ্যম ব্যতিত সরাসরি আগত সর্ব স্রেষ্ঠ একটি বাক্য, যা স্বয়ং একটি সূরা, পরে ঊনিশ পারাতে সূরা নমলে আঁয়াত হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এ অতুলনীয় সর্ব স্রেষ্ট বাক্য যা একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ সূরা, তার নাম “বিসমিল্লাহ”। এ বাক্যটি কিন্তু কুরআন শরীফের বাক্য বা আয়াত নয়, “বিসমিল্লাহ” পূর্বে যে ছিলো তারই পরিচিতি আমাদেরকে জানিয়েছেন। সূরা নমলের মাধ্যমে  বাতাসের “সাত”টা পর্দা প্রত্যেকটা পর্দা এক একটা জগত এ সাতটি জগতের মধ্যে একটি বিদ্যুৎ তরঙ্গ রয়েছে যার মধ্য দিয়ে বার্তা এবং চিত্র মহুর্তে আদান প্রদান করা হয়। আভ্যন্তরিন তরঙ্গ দিক, ওয়েব দিক বা চিত্র দিক অর্থাৎ আভ্যন্তরিন নেটওয়ার্ক। সর্ব শক্তিমান আলোর যত পর্দাই হোক সব আলোর পর্দা নিয়েই তিনি একক, আল্লাহ নামে পরিচিত এ নাম তাঁরই প্রদত্ত। এ নাম মানব কর্তৃক প্রদত্ত নয়। আর বিশেষ আলোচনা, কেউ কেউ বলে, নবী (দঃ) যখন আল্লাহর স্বাাতে যান, আল্লাহ এবং নবী (দঃ) এর মধ্যে দূরত্ব সত্তর হাজার পর্দা ছিলো কেউ বলেন দু- আঙ্গুলের মধ্যে দূরত্ব যত তত ছিলো, কেউ বলেন রোসনের একটি আবরনের মতো দূরত্ব ছিলো। মোট কথা মূল দূরত্বের খবর মানব জানে না। এ আলোর কোন অণু পরমাণু নেই। অণু পরমাণুর দৈর্ঘ্য প্রস্ত থাকে। যার দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে, তার আকার থাকে। আকার না হলে, দৈঘ্য প্রস্ত হয় না। আমাদের এ আল্লাহ নামক আলোর অনু পরমাণু নেই। তাই আকার ও নেই। বর্তমানে প্রকাশিত খবর গভেষকগণ, নাকি ঈশ্বরের কণা আবিষ্কার করেছে। যার আকার থাকে তারই কণা থাকে। কিন্তু সর্ব শক্তি ধর মহান আলো যাঁর নাম “আল্লাহ” তাঁর অণু পরমাণু নেই, তাই আকারও নেই, নিরাকারে সর্ব প্রথম মুহাম্মদ (দঃ) নামের নূর সৃষ্টি করে স্বয়ং সাথে সাথেই একাকার করে রেখেছেন। আরশ নামক জগতে আল্লাহ এবং মুহাম্মদ (দঃ) নাম দ্বয় লিপিপটে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন যা মুসলমানদের একমাত্র মুক্তির চাকি কাঠি সে মুক্তির কাঠির নাম “লা ইলাহা” ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) যারা এ এই চাকিকাটি গ্রহণ করেছে তাঁদের মুক্তি অবধারিত। স্বয়ং আল্লাহর বাণী, যারা আমার প্রদত্ত পথের পথিক হবে, আমি তাদের জন্য নরকের দ্বার চিরকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি। উদ্ধৃত বাণী অবিশ্বাসীদের জন্যে নরক দ্বার চিরকালের জন্য উন্মক্ত। নূরে মাহাম্মদ (দঃ) আল্লাহ থেকে দূরে নয়। নূরে আল্লাহ নূরে মাহাম্মদ থেকে পৃথক নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য ঃ আল্লাহ রাসূল (দ:) বলে সম্বোধন করেছেন একজনকে, যেমন “ইয়া আইয়্যুহাররাসূল” “ মুহাম্মাদর রাসূলল্লাহ (দ:) এর ল্েয। বলে, মুরসালীন শব্দটি আরবিতে জমা অর্থাৎ বাংলায় বহুবচন, এজন্য মুরসালীন শব্দটি বলা সঠিক বলে মনে হয় না। কারণ, স্রষ্টা সৃষ্টি জগতের জন্য, একজন মাত্র রাসূল সর্বপ্রথম সৃষ্টি করে আপন নামের সাথে, যুক্ত করে আরশে আজীমে আপননামের সাথে লিপিপটে, লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, যা প্রথম মানব আদম (আঃ) স্বয়ং প্রত্য করেছেন। স্রষ্টা অর্থাৎ আল্লাহ আর কোন রাসূল পাঠাবেন না। একল, দুল নবী এবং পয়গবর যা বলা হয়, তাঁদেরকে আল্লাহ রাসূল সম্বোধন করেননি কিন্তু প্রত্যেক জাতি বা গোত্র আল্লাহ কিছু বাণী দিয়ে নবী পাঠিয়েছিল যার নাম ছহীফে। যে তিন বড় গ্রন্থ  অর্থাৎ তাওরীদ, যাবর এবং ইনজীল কিতাব তাও অসম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ গ্রন্থ একমাত্র সৃষ্ট লোকের জন্য কুরআন শরীফ প্রেরিত হয়েছে।

রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

অবগতির জন্য

“আব.এ. জমজম সম্পর্কিত” উম্মুল মূমীনীন “মা” হাজেরা (আ:) কে হযরত ইব্রাহীম (আ:) যখন “ছাফাহ্ এবং মারওয়াহ” নামক পাহাড় দ্বয়ের মধ্য ভাগে নির্বাসনে রেখে গেলে মুরু ভুমির মধ্যে প্রখর রোদ্র তাপে তাপিত প্রাণে পিপাসায় পিপাসিত হয়ে, ছাফাহ্ এবং মারওয়াহ পাহাড় দ্বয়ের মধ্যে পানির সন্ধানে ধাবিত হতে লাগলেন তখন তাঁর নয়নের মণি, কলিজার টুকরো, আল্লাহর প্রেরিত নবী হযরত ইসমাইল (আ:) দুধের পিপাসায় পিপাসিতাবস্থায় উত্তপ্ত বালূর মুরুতে পিপাসিত। ইব্রাহিম (আঃ) এর দুগ্ধ শিশু ইসমাইল (আ:) হাত,পা ঝাকরাতে-ঝাকরাতে ক্রন্দনরতাবস্থায় তাঁর পবিত্র পদদ্বয়ের আঘাতে পায়ের বালু সরে যাওয়াতে একটি আধারের সৃষ্টি হলো। উক্তাধারে পানির ঝর্ণা প্রবাহিত হতে লাগলে, উম্মুল মূমীনীন “মা” হাজেরা (আ:) প্রত্যক্ষ করলেন এবং আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে, আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন এবং বললেন জম-জম অর্থাৎ থাম-থাম এখান থেকে নাম করণ করা হয় আব জম-জম (আব ফার্সি শব্দ অর্থ পানি)  এ প্রবাহমান পানিকে ধরে রাখার জন্য বালির দেয়াল বানিয়ে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলেন। ক্রমে ক্রমে গভীর থেকে গভীরতর কুপের সৃষ্টি এবং আল্লাহর ঘর অর্থাৎ “বায়তুল্লাহ্ শরীফ” কুপের পাশেই আবিষ্কার হলো। ইসলামী ইতিহাসে এর বৃত্তান্ত জানা যাবে “তাওয়ারীখে” পানি জমা হতে হতে কুপে পরিণত হয়েছে এর পানি মিষ্টি এবং রোগ প্রতিষেধক। তাই সমগ্র মুসলীম দুনাইয়া বোতল ভরে ছোট বড় ড্রামে নিত হয়। পানির কমতি নেই বর্তমানে যন্ত্রের মাধ্যমে উত্তলিত হয়। আল্লাহর কুদ্রাতে পানি এসে জমা হয়। “জম শব্দটি আরবী ভাষা জম অর্থ থাম, পানি থামা অবস্থায় যে বরাবর ছিলো এখনও তেমনই রয়েছে কম বা বেশী নয় একই অবস্থানে রয়েছে।

শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

Great Mistake of Bangla Academy


Bangla Dictionary
Bangla Academy Abidhan

  In the 115 page of Bangla Academy Bengali functional dictionary published by Bangla Academy in 2002 the identify of Ab Zamzam well is only shown below because the writing regarding identity of Ab Zamzam well by a letter, its meaning and sentence are not correct.

 As regards ‘Abe Zam Zam’ for information it is informed when Hazrat Ibrahim (A) left in exile Ummulmuminin “Mother” Hazera (A) between the mountains named “safah  & marwah” then she became thirsty due to very blaze of sun inside the desert & being thirsty she started running helter-skelter in search of water then eye ball of her eye, a piece of the liver, the prophet sent by the Allah Hazraat Ismail (A) was thirsty in the desert of the heated sands being thirsty with the thirst of milk. Infant Ismail (A) started crying shaking his hand, feet & when sands were removed by the strikes of feet of his holy legs a hole was created. Fountain of water started flowing from the said hole, and the ummulmuminin “Mother” Hazera (A) witnessed it & being overwhelmed with pleasure started expressing gratitude to the court of Allah. She made arrangement for preservation for water by making walls of sands to retain the flowing water. Slowly the well was deepened & it was discovered by the side of house of Allah that is “Baitullah Sharif” well. In the history of Islam the description of it can be known. Well was created from deposit of water in “Tawarikh” & its water is sweet & an antidote to diseases. So, the entire Muslim world collects water is small & big drum after filling it in bottle. There is no dearth of water. At present water id drawn by machine. Water is collected in well of Allah. The word “Zam is an Arabic word, zam means collection. As water is collected so the name “Abe zam zam” has been coined. The world Aab means in Arabic water that is collected water. As it was before it is so still today & it is more or less in the same location.

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সর্বশক্তিমান মহা আলো (তৃতীয় অংশ)

রেসাল অর্থ পত্র যিনি আল্লাহর পত্র বহন করেন তাকে রাসূল বলা হয় অর্থাৎ পত্র বাহক, তিনি আল্লাহ সর্বশেষ পত্র বা গ্রন্থ অর্থাৎ মুক্ত বাণী ‘আল-কুরআন’ দিয়ে গেলেন বলেই তাঁকে রাসূলাল্লাহ্ বলা হয়।
বিঃদ্রঃ মহা আল্লাহর অবস্থান অসীমে, অসীমে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র সীমিতাংশের নাম করণ করেছেন নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডল। মন্ডল দ্বয় অসীমে একটি সীমার মধ্যে নভোমন্ডলের মধ্যেই ভূমন্ডল বা সৌরমন্ডলগুলো অবস্থান। সৌরমন্ডল বা মর্তমন্ডল গুলো, নীহারিকা, গ্ল্যাক্সি, কসমস, গ্রহ নক্ষত্র, মোট কথা স্রষ্টার যত সৃষ্টি রয়েছে, সবই সীমিত নভোসীমায় অবস্থিত। এ নভোসীমার বাহেরে অর্থাৎ আল্লাহ নামক অসীম শক্তির অসীমে আর কোন সৌরমন্ডল বা মর্তমন্ডল নেই। সুতরাং আর কোন আবিষ্কারের অবকাশ নেই।

রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সর্বশক্তিমান আলো (দ্বিতীয় পর্ব)


নূরে মুহাম্মাদ (দ:) এর নূরকে, নূরে আল্লাহতে অর্থাৎ “ফানাহ ফিল্লাহতে” অর্থাৎ আল্লাহ নামের সর্বশক্তিমান মহা আলোতে লীন হয়ে যাওয়া, নূরে মুহাম্মাদ (দ:) এর নূর এবং নূরে আল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ নামের মহা আলো, এক অন্যতে মিশে একাকার অবস্থায়, অবস্থান করছেন। যাঁরা আল্লাহর আদেশ পালনের মাধ্যমে, আল্লাহর নৈকট্য লাভে কৃতকার্যতা লাভ করেন। তাঁরাই নূরে আল্লাহ এবং নূরে মুহাম্মাদ (দ:) কে প্রত্যক্ষ করেন। নূর দ্বয় এক অন্যে মিশে একাকার হলেও, আপনাপন গুণে গুণান্বিতাবস্থায় অবস্থান করছেন। কিন্তু মিশে একাকার হলেও নূরে মুহাম্মাদ (দ:)  নূরে আল্লাহ হয়ে যায়নি। নূরে আল্লাহও নূরে মুহাম্মাদ (দ:) হয়নি। যেমন, একটি গ্লাসের মধ্যে আধা গ্লাস পানি এবং আধা গ্লাস দুধ মিশে একাকার হয়ে যায়। কিন্তু তাতে পানি এবং দুধ আপনাপন গুণে অবস্থান করছে। কিন্তু দুধ এবং পানি মিশে একাকার হলেও দুধ পানি নয়, পানি দুধ নয়। আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণের মধ্যে যাঁদের আধ্যাত্মিক অর্থাৎ আভ্যন্তরীণ, ওয়েব সাইড, ফেইসবুক, খুলতে পারেন, তাঁদের ,পক্ষে আল্লাহ, রাসূল এবং মৃত ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব।

সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০১৪

সর্বশক্তিমান মহা আলো

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

এ আলো, সে আলো, যে আলো অদ্বিতীয় একক সর্বশক্তিমান, যাঁর কোন উপমা নেই। সে আলোটির নাম হচ্ছে “অদ্বিতীয় একক আল্লাহ্”। প্রত্যেক আলোর উৎপত্তিস্থল রয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্ নামের নূরটি অর্থাৎ সর্বশক্তিমান আলোটির উৎপত্তিস্থল নেই। যার উৎপত্তিস্থল নেই, তার আকার নেই। আকারের দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে। নিরাকারের আকার নেই বলে, তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ নেই। সদা সর্বদা একই আলো, একইরূপে অবস্থান করছেন। তিনি সর্বব্যাপী, তাঁর দৃষ্টির আড়াল, স্রষ্টালোকের আল্লাহ্ নামের আলোর জগতের একটি অনু বা পরমাণু নেই। অনু-পরমাণুর দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ আছে। আকার আছে বলেই দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ আছে। যে আলোর অণু বা পরমাণু নেই সে আকারহীন, অসীম-অনন্ত এবং সর্বশক্তিমান আলোর নামই ‘আল্লাহ্’। এ অনন্ত অসীম আলোর মধ্যেই সে আল্লাহ্ নাম আলোর সৃষ্ট জগত নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডল অবস্থিত বা আল্লাহ্ নামের সাগরের মধ্যে ডুবন্ত অবস্থায় অবস্থিত। সুতরাং নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের অর্থাৎ (নূরুসসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্) প্রদর্শিত আলো আল্লাহ্ নামের আলো কর্তৃক আবৃত তাই প্রতিয়মান হচ্ছে নভোমন্ডলের এবং ভূমন্ডলের যে জ্যোতির কথা বলা হচ্ছে উক্ত জ্যোতি ভূমন্ডলদ্বয়ের সৃষ্ট আলো নয়। তা আল্লাহর জ্যোতি, মন্ডল দ্বয়ের জ্যোতি সৃষ্টি করার ক্ষমতা নেই। সৃষ্টির সৃষ্টি করার ক্ষমতা নেই। তাই প্রতিয়মান হচ্ছে নভোমন্ডলের এবং ভূমন্ডলের যে জ্যোতি, সে জ্যোতি কর্তৃক আবৃত নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের আলো আল্লাহ্ নয়। সুতরাং মন্ডলদ্বয়ের কোন ক্ষমতা নেই আলো সৃষ্টি করে। আল্লাহ্র আলো কর্তৃক আবৃত বা বেষ্টিত। অর্থাৎ আল্লাহ্ নামের আলো বা আল্লাহ্র সৃষ্টি। আল্লাহ্র সৃষ্টির নিজস্ব কোন আলো বা শক্তি নেই। আল্লাহ্ নামের আলোর বাণী (আল্লাহু খালাক্বাস্সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্) অর্থাৎ আসমান বা নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডল আল্লাহর সৃষ্টি। সুতরাং সৃষ্টির নিজস্ব কোন আলো বা শক্তি থাকার কথা নয়। সৃষ্টির মধ্যে যে আলো বা শক্তি অনুভব বা প্রদর্শিত তা সম্পূর্ণ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ প্রদত্ত।

নূর = আলো। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের ১৮তম পারা সূরা নূর বাক্য নং-৩৫। আল্লাহু নূরুসসামাওয়াতি ওয়াল আরদি। অর্থ = আল্লাহ্ নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের জ্যোতি। মূলত নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের কোন জ্যাতি নেই। কারণ মন্ডলদ্বয় মহা স্রষ্টার সৃষ্টি। মন্ডলদ্বয় স্রষ্টার আলো বা জ্যোতিতে জ্যোতির্ময়। মন্ডলদ্বয়ের জ্যোতিতে আল্লাহ্ জ্যোতির্ময় নয়। আল্লাহর জ্যোতিতে মন্ডলদ্বয় জ্যোতির্ময়। মহা স্রষ্টা আল্লাহর বাণী “আল্লাহু খালাক্বাসসামাওয়াতি ওয়াল আরদি” অর্থাৎ মন্ডলদ্বয় আল্লাহর সৃষ্টি। আল্লাহ নামক-আলো বা নূরের কোন উৎপত্তিস্থল নেই। যৈতুনের তৈল কর্তৃক প্রজ্জলিত কাঁচের পত্রাবৃত প্রদীপ থেকে নির্গত আলো আল্লাহ্ নয়। যৈতুন এবং কাঁচের পত্রাবৃত প্রজ্জলিত দীপ-আল্লাহর স্ব-ইচ্ছায় সৃষ্টি করেছেন আপন খেয়ালে, যেমন করেছেন সমগ্র সৃষ্ট জগত। সেই যৈতুনের তৈল কর্তৃক প্রজ্জলিত প্রদীপ মহা আল্লাহ্ নামক মহা আলো কর্তৃক সৃষ্ট। লক্ষ্যণীয় বিষয়, স্রষ্টার সৃষ্টির মধ্যে দৃশ্য অদৃশ্য যে জ্যোতি বা আলো স্রষ্টারই জ্যোতি। নক্ষত্রগুলোর জ্যোতি বা আলো যেমন সূর্যের আলো। এদের মধ্যে অর্থাৎ ভূমন্ডল, তথা মাটির জগতের অভ্যন্তরে অণু পরমাণুতে যে আলো দর্শন হয় তা স্রষ্টার অর্থাৎ আল্লাহর আলো সৃষ্টির কোন সৃষ্ট আলো হতে পারে না। যে যা সৃষ্টি করে সে তার মালিক সুতরাং সৃষ্টটি তার। যিনি সব সৃষ্টি করেছেন, সে সব সৃষ্ট সৃষ্টির মালিক তিনি। সুতরাং সবই তাঁর যখন তখন তাঁর খাস্ সৃষ্ট হাবীব-নূরে মুহাম্মদির নূরের মালিক আল্লাহ হবে না কেন? ওয়া = অর্থ ‘এবং’ আরর্দা অর্থ ‘মাটি’। কঠিন, তরল, জড়বস্তু, আত্মা অর্থাৎ প্রাণী জগতকে বুঝাচ্ছে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, নূর অর্থাৎ আলো কর্তৃক সৃষ্টি করেছেন বা জ্যোতি দ্বারা আবৃত জ্যোতির্ময় করে রেখেছেন। আলোটি বা নূরটি কোথা হতে এলো? এ-নূর, আল্লাহ্ নামের যে সর্বশক্তিমান নূর সে নূর কর্তৃক এ নূর সৃষ্টি কিন্তু সর্ব প্রথম আল্লাহ্ নামের মহা নূর কর্তৃক মুহাম্মদ নামের তাঁর বিশেষ নূর- তাঁরই বন্ধু হিসেবে সদা-সর্বত্র সাথে সাথে একাকার করে থাকার জন্য বা রাখার জন্য সর্ব প্রথম তাঁর হাবীব মুহাম্মদ নামের নূর সৃষ্টি করেন। তাই ‘মুহাম্মদ’ নামের নূর সদা তাঁর সাথেই সর্বত্র বিরাজমান। তাঁর সৃষ্টি জগতের এমন কোন অণু পরমাণু বাকী নেই যেখানে তিনি এবং তার দোস্ত বা হাবীব নেই। সব কিছুর একটি শিকড় বা উৎপত্তিস্থল বা কেন্দ্র থাকে, সে কেন্দ্র বিন্দুটির দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে। আল্লাহ্ নামক নূরটির মাপন চিহ্ন নেই। দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকলে আকার থাকে, যার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ নেই তার আকার কোথায়? অণু পরমাণু দৈর্ঘ্য প্রস্থ থাকে, তার আকারও থাকে, যেখানে অনু-পরমাণু নেই, তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ বা আকার কোথায়?

সে একক্ই একটি মহা শক্তি সম্পন্ন আলো। উদ্ধৃত আলোটির নামই ‘আল্লাহ্’। এ আলোটি তাঁরই সৃষ্টি জগতের অণু-পরমাণুতে উপস্থিত রয়েছেন। তাঁর দর্শকগণ তাঁকে অর্থাৎ তাঁর নূরের আভাকে অর্থাৎ ছায়া সদৃশ্যকে দর্শন করেন। পূর্বেও উদ্ধৃত হয়েছে “ আল্লাহ্” নামক আলোর উত্থান বা উভ্যদয় কেন্দ্র বিন্দু নেই। তাঁর দৈর্ঘ্য প্রস্থ নেই। তার আকারও নেই, পতনও নেই। তিনি অনন্ত। তিনি ছিলেন আছেন এবং থাকবেন। তাঁর আলো দর্শনকারীগণের পক্ষ থেকে উদ্ধৃত, সে মহা আলোকের কোন প্রকার রূপের উপমা-উদাহরণ নেই। তাঁর রূপের বা আলোর ছায়া দর্শনকারী, মূসা (আঃ) আল্লাহ্র নূরের উপমা, উদাহরণ, রকম, মতো, ন্যায় বা ধরণ যেন অমূক রূপ সদৃশ্য এমন কোন উক্তি করেননি। তাঁর সে মহা আলোর কোন উপমা উদাহরণ নেই বলে, রূপকারগণ ধরণ বলেননি। তিনি তাঁর স্বরূপে রূপায়িত। স্ব-আলোতে আলোকিত। আপন জ্যোতিতে জ্যোতির্ময়। তিনি তাঁর স্বরূপে রূপমান, স্বশক্তিমান। তিনি উচ্চারিত, অনুচ্চারিত, কল্পিত, অনুভব চিন্তা ভাবনার তরঙ্গ ভাষার্থ বুঝতে পারেন বা শব্দ শ্রবণ করতে পারেন। তিনি পারেন না এমন কোন ভাষোক্তি নেই। তাঁর যে নূরকে তিনি খাস্ এবং তাঁর অতি প্রিয় মনে করেছেন সেই মহা নূর হতে মুহাম্মদ (দঃ) এর নূর সৃষ্টি করে আপন সাথে সাথী করে রেখেছেন। তাঁর সাথেই একাকার করে সর্বত্র বিরাজমান করছেন। মুহাম্মদ (দঃ) নামের নূর, নূরে মুহাম্মদ (দঃ) আল্লাহর প্রশংসাকারী। তিনি আল্লাহর নূর হবেন না কেন?




তাই তাঁর নির্বাচিত খাস নূরটির নাম রেখেছেন, মুহাম্মদ (দঃ) মুহাম্মদ নামক আলোটি শুধু আল্লাহরই প্রশংসা করবেন। আল্লাহ প্রদত্ত ঋতীনীতি অর্থাৎ আল্লাহর প্রদত্ত বিধান তাঁর সৃষ্টি জগতে প্রচার করবেন। নূরে মহাম্মদ (দঃ) এর নূরাংশ থেকে নূরে মুহাম্মদ (দঃ) জগতে প্রেরণোদ্দেশ্যে নূর পদার্থের তৈরি তনু পোষাকে মানবের মতো করে পাঠিয়েছেন। তাই তিনি বলেছেন, (আনা বাশারুম মিছলুকুম ইউহা ইলাইয়া)= অর্থাৎ আমি তোমাদের মতো মানুষ, এখানে লক্ষনীয় বিষয়, “মতো” শব্দটি, গরিলা, সিমপাঞ্জি বা বানর যেমন মানুষের মতো কিন্তু তারা মানুষ নয়। নবী মহাম্মদ (দঃ) আমাদের সাদৃশ্য ঠিক আমাদের সাধারণ মানুষের পদার্থে তৈরি নয়। লক্ষ করুণ তাঁর পচিনা অর্থাৎ ঘাম থেকে সুঘ্রান বিকশি হয় তাঁর মূ-মোবারকের লালা মোবারক মিষ্টি মধুর, তাই তাঁর সাথী ছাহাবায়ে কিরামগণ তাঁর পচিনা মোবারককে আপন গায়ে বা শরীরে সুঘ্রান হিসেবে মেখে নিতেন, লালা মোবারক মিষ্টি মধুর ছিল বলে খেয়ে ফেলতেন। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, নবী (দঃ) এর তনু বা শরীর মোবারক আমাদের শরীরের পদার্থের মতো নয় তিনি সম্পূর্ণ আমাদের হতে পৃথক পদার্থের তৈরী, তার সে পদার্থের মধ্যে আল্লাহর সাথে কথোপকথন যন্ত্র স্থাপিত রয়েছে তা আমাদের মধ্যে নেই সুতরাং তিনি আমাদের পদার্থের তৈরি মানুষ নয়। তিনি সম্পূর্ণ পৃথক আমাদের হতে আলাদা এক অতি মহা মানব, আমরা যে পদার্থের মানুষ তাকে সে পদার্থের তৈরি বলা মহাভুল তিনি অর্থাৎ নূরে মুহাম্মদ (দঃ) আল্লাহর সাথে একাকার হয়ে আছেন। যেমন আধা গ্লাস পানির মধ্যে আধা গ্লাস দুধ ঢেলে দিলে যেমন পানি এবং দুধে মিলে একাকার হয়ে যায়। কিন্তু লক্ষনীয় বিষয়। দুধ-পানি একাকার হলেও দুধ কিন্তু পানি নয় পানিও দুধ নয়। কিন্তু মিলানো অবস্থায় দুধ পানি থেকে পৃথক নয় পানিও কিন্তু দুধ থেকে পৃথক নয়। যদিও একাকার অবস্থায় আছে। তাঁরা যে পৃথক, পৃথকাবস্থায় আছে তা আমাদের সাধারণ দর্শন শক্তিতে ধরা পড়বে না যদি সে দর্শন যন্ত্র আমার মধ্যে না থাকে।
বিঃদ্র ঃ যিনি প্রথমে প্রশংসাকারী, তিনিই প্রশংসিত। প্রশংসাকারী না হয়ে, প্রশংসিত হতে পারেন না। তাই আল্লাহ তাঁর বন্ধুর নাম মুহাম্মদ রেখেছেন প্রশংসাকারী অর্থে কারণ তিনি আল্লাহর প্রশংসা কারী। তাই তিন আল্লাহর দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন, অর্থাৎ আহ্মাদ নামে ভূষিত হয়েছেন প্রশংসার উচ্ছাসনে আসিন হয়েছেন পূর্বালোচনায় এলাম, সূর্য কিন্তু আলো নয়, আলো কিন্তু সূর্য নয়, সূর্য থেকে আলো পৃথক নয়, আলো থেকে সূর্য পৃথক নয়। তেমনি মুহাম্মাদি নূর, আল্লাহ্ থেকে পৃথক নয়, নূরে আল্লাহ, অর্থাৎ আল্লাহ্, মুহাম্মদ (দঃ) থেকে পৃথক নয়। মূল কথা আল্লাহ্ মুহাম্মদ (দঃ) নয় এবং মুহাম্মদ (দঃ) আল্লাহ নয় আল্লাহ স্বইচ্ছায় যা চাহেন করতে পারেন। ভাঙ্গা গড়া সবই তাঁর কর্ম তাঁরই সৃষ্টি, তা পারে না। মানব একটি কণা বা অণু গড়তে পারে না শুধু পারে ভাঙ্গতে। গড়েন আল্লাহ, ভাঙ্গে বান্দায়। এ ভাঙ্গার উত্তর বান্দাকে একদিন দিতে হবে। আলোর নিদ্রা জাগরণের প্রশ্ন নেই। তিনি সদা সতর্ক সচেতন সদা জাগরিত। তিনি শুনেন, বুঝেন, কথা বলেন, উত্তর দেন, তিনি সদা তাঁর সৃষ্টির মাঝে বিরাজ মান এবং তাঁর হাবীব বন্ধু নূরে মুহাম্মদ (দঃ) তাঁর সাথেই রয়েছেন। আল্লাহ নামক মহা শক্তিমান বা সর্বশক্তিমান আলোটির আর কোন প্রতি আলো বা প্রতিশব্দ সূচক কোন শব্দ নেই। স্বয়ং একক অদ্বিতীয় মহা শক্তি ধর আলো। এর নামই “আল্লাহ”। কোন লিঙ্গান্তর শব্দ নেই। তাই তাঁর সৃষ্ট জগত সৃষ্টকুল তাঁরই প্রদত্ত নিয়ম নীতি মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছে এবং হব্ েমহা প্রলয় পর্যন্ত


মহা স্রষ্টা আল্লাহর
মহা আদেশ দুটু
প্রথম আদেশটি “বিসমিল্লাহ”= অর্থাৎ “বিসমি”= অর্থাৎ নামে বা নাম দ্বারা, “আল্লাহর নামে” উদ্ধৃত মহা বাক্যটি। প্রত্যেক শুভ- বা বৈধ কর্মের প্রারম্ভে উচ্চারনাদেশ।

দ্বিতীয়টি, সম্মানের সাথে “দরূদ” এবং সালাম পাঠের আদেশ
প্রত্যেক শুভ কর্মের প্ররম্ভে “আল্লাহর নামে” বাক্যটি উচ্চারণ করার উদ্দেশ্য বা অর্থ হচ্ছে মহা সৃষ্টি কর্তা আল্লাহকে সাক্ষী রাখা। যেখানে আল্লাহকে সাক্ষী রাখা হবে সেখানে অবৈধতা কুচক্র তা বা শয়তানী চক্রতার স্থান নেই। কারণ সেখানে আল্লাহকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। সুতরাং যে ক্ষেত্রে যে বিষয়ের উপর মহান আল্লাকে সাক্ষী রাখা হয়, সে ক্ষেত্রে সে বিষয়ের মধ্যে কোন প্রকার অবৈধতা, অন্যায়, অসত্য, মিথ্যা কোন চক্রের চক্রান্তের স্থান হবে না। কারণ আল্লাহ স্বয়ং উক্ত কর্মের ওপর দৃষ্টি রেখেছে এবং স্বয়ং স্বাক্ষী রয়েছেন। তাই উদ্ধৃতোক্তিটি অলঙ্ঘনীয়। বলা প্রয়োজন বলে বলা হলো “বিসমিল্লাহ্” অবতির্নের মাধ্যম জিব্রাইল (আঃ) নয় স্বয়ং আল্লাহ ইয়া শব্দটি উপস্থিত অনুউপস্থিত সর্বাবস্থায় ব্যবহার করা যায়। ইয়া শব্দটি আরবী, বাংলায় বলা হয়, হে, ওহে, ওগো, এইযে, স্ব, দিকে নির্দিষ্ট দৃষ্টি আকর্ষন করার লক্ষ্যে এ শব্দটি ব্যবহার হয় সম্ভোধন সূচক।নিকটস্থ দূরবর্তী অথবা পর্দারাডাল থেকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যেও এশব্দটি ব্যবহৃত হয়।

লক্ষ্য করা যাক, সৃস্টিকর্তা “মহান আল্লাহর মহা গ্রন্থের একটি আহবান জনিত উক্তি (ইয়া আই-ইউহাল্লাজীনা আমানূ) অর্থাৎ হে, ওহে, যারা আমাকে বিশ্বাস কর) তাঁর সৃষ্টিদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন বা আহবান বা ডাক দিয়ে বলছেন। মনে হয় যেন বহু দূর থেকে ডাক দিচ্ছেন, কিন্তু না, তিনি আমাদের এত নিকটে যে তাঁর মধ্যে আমদের মধ্যে কোন দূরত্ব্ নেই, আমাদের তনু আতœার প্রতিটি অণু পরমাণুতে বিরাজ করছেন। তিনি নেই এমন কোন অণু পরমাণু সৃষ্টি হয়নি। তিনি আমাদের দৃষ্টির আড়াল থেকে সব সমাধান দিয়ে যাচ্ছেন। নূরে আল্লাহ দর্শন করার শক্তি সৃষ্টিরনেই যেমন তাঁরই দোস্থ নবী মূসা (আঃ) এর আবদার রক্ষা মানষে আপন নূরের ছায়া দর্শন করে ছিলেন। কিন্তু মূসা (আঃ) তা সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং সে নূরের ছায়ার ঝলকে, কূহেতূর, পাথড়ের কিয়দাংশ জ্বলে কালো পাথরে পরিণত হয়। যা আজও বিশ্বমানব তা দর্শনাশে “কূহেতূর” পাহাড়ে গমন করেন।

আল্লাহ কিন্তু আকার নিয়ে এসে মানবকে বাস্তবে দাঁড়িয়ে আহবান সূচক “ইয়া” শব্দটি ব্যবহার করেননি। নবী মুহাম্মদ (দঃ) উপস্থিত অথবা অনুপস্থিত তিনি কিন্তু অর্থাৎ নূরে মুহাম্মদ (দঃ) সদা সর্বত্র তাঁর দোস্থ বা হাবীব তাঁর মালিক তাঁর স্রষ্টা মাবূদে ইলাহী, অর্থাঃ আল্লাহর সাথে ফানাহফিল্লাহ্ অবস্থায় একাকার হয়ে, বিরাজ করছেন, তাঁর লক্ষ্যে “ইয়া” শব্দ ব্যবহারে অনিহা কেন? বরং তিনি বাস্তবে আমাদের মধ্যে এসেছেন বা তাঁকে মহা সর্ব মহা গ্রন্থ দিয়ে, নূর পদার্থের তনু পোষাক অর্থাৎ শরীর পোষাক পরিয়ে মানব আকার দিয়ে, আমাদের মধ্যে পাঠিয়েছেন। মানব জাতিকে মুক্তির পথ প্রদর্শন করার লক্ষ্যে। শাসন করেছেন. দেশ পরিচালনা করেছেন। তাঁর অনুসারীগণের নিকট আকারে স্বপ্নের মাধ্যমে এবং তন্দ্রাবস্তায় স্ব-শরীরে নিজেকে প্রদর্শন করেন। এ শক্তি তাঁর দোস্থ আল্লাহরই দেয়া।
মহান স্রষ্টা আল্লাহর বাস্তাতা তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগত এবং স্বয়ং আমি বা আমরা। তিনি গঠন করেছেন, তিনি ধ্বংস করবেন, সবই তাঁর হতে আগমন এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করবে, অর্থাৎ সব সৃষ্ট ষ্রষ্টা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে। এ অবস্থায় নশ্বর জগত সবকে ছাড়তে হবে। পূর্বোদ্ধৃতোক্তি বিসমিল্লাহ, পুনোর্ল্লোখিত হচ্ছে যে, বিসমিল্লাহ্ শরীফ স্বয়ং আল্লাহর নবী (দঃ) কে শিক্ষা দিয়ে আল্লাহ স্বয়ং নবী (দঃ) এর শিক্ষক হয়ে বিসমিল্লাহ্ শিক্ষা দানের মাধ্যমে কুরআনে পাকের ভিত্তিস্থাপন করে, তাঁর প্রদত্ত শান্তিনীতি ইসলাম নমক ধর্ম রক্ষার দায়িত্ব স্বয়ং রাখলেন। নবী (দঃ) এর ‘মূ’ মোবারকের মাধ্যমে বিসমিল্লাহ শরীফ মানব জগতে প্রেরণ করেছেন বলেই মানব জান্তে পেরেছে যে, যখন যা যেখান থেকে প্রথম শ্রবন করা যায় বা পাওয়া যায় সেটাই প্রথম পাওয়া, তা বস্তু বা বাণী হতে পারে। নবী (দঃ) এর মাধ্যমে বিসমিল্লাহ পেয়েছে বলেই, “বিসমিল্লাহ” প্রথম শব্দ, কারণ “বিসমিল্লাহ” শরীফ, নবী (দঃ) কে জিব্রাইল (আঃ) শিক্ষাদেননি, খোদ স্রষ্টা আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই, বিসমিল্লাহ শরীফ আল্লাহর পক্ষ থেকে “স্বয়ং প্রেরিত হয়েছে, তাই এ বাক্যটি সম্পূর্ণ স্বাধীন স্বয়ং একটি সূরা বা আঁয়াত সুতরাং ১১৪ সূরা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক এবং সর্ব প্রথম আগমন সংঘটিত হয়েছে। পরে ১৯ পারার সূরা “নমলে” কুরআনের বাক্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে এবং গারে হেরায় বিসমিল্লাহ শরীফের শানে নজুল সর্ব প্রথম সংঘটিত হয়েছে। তাই তাঁর নিজেস্ব আতœ পরিচিতি রয়েছে। বিসমিল্লাহ্ এর শানে নজুল প্রথম গারে হিরা পর্বতে অবতীর্ণ হয়েছে। পরে জিব্রাইল (আঃ) কর্তক প্রেরিত শব্দ “ইক্বরা, তাই এ শব্দটি দ্বিতীয়। উদ্ধৃত বিসমিল্লাহ বাক্যটি সৃষ্টি জগতের ভিত্তি। আল কুরআনের ভিত্তি, ইসলামের ভিত্তি এবং বিসমিল্লাহ্ শরীফই স্রষ্টার সমস্ত সৃষ্টি জগতের ভিত্তি অর্থাৎ অদ্বিতীয় একক আল্লাহর এবং সমগ্র সৃষ্ট, মহা প্রলয় পর্যন্ত একই নিয়মে চলতে থাকবে। এ মহা বাক্যটি যার মাধ্যমে প্রেরণ করেছেন, তাঁর নাম মোবারক মু¤ম্মদ (দঃ) তিনি আল্লাহর প্রশংসাকারী এবং সৃষ্টি জগতের সেবক, আল্লাহ বলেছেন, যে আমার সৃষ্টির সেবা দেবে সে আমার সেবা দিলো। তাই মুহাম্মদ (দঃ) স্রষ্টার প্রশংসাকারী হলেন, পরে আল্লাহ কর্তৃক তাঁর কর্ম গুনের জন্যে “আহ্মাদ” নামে খিতাব লাভ করে প্রশংসিত হলেন। সৃষ্টির রহমত, করুনা, বরক্বত হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেন। প্রশংসাকারীই প্রশংসিত শব্দ উপাধি হিসেবে লাভ করেছেন। নবী (দঃ) আল্লাহর প্রশংসাকারী বিধায় মুহাম্মদ (দঃ) নামে ভূষিত হয়েছিলেন। মহান করুণাময় আল্লাহর, নবী (দঃ) আল্লাহর প্রশংসায় মত্তছিলেন বলেই, আল্লাহ তাঁকে আহমাদ নামে উপাধিতে ভূষিত করলেন। প্রশংসা না করে প্রশংসিত হতে পারে না। দ্বিতীয় উচ্চারিত শব্দ, “ইক্বরা” শব্দটির বিষয়। নবী (দঃ) এর মূ মোবারকের মাধ্যমে প্রথম বিসমিল্লাহ্ শরীফ মহান স্রষ্টা আল্লাহ কর্তৃক উচ্চারিত হওয়ায়, “বিসমিল্লাহ” শরীফই প্রথম অবতির্ণ শব্দ বা বাক্য বা সূরা। দ্বিতীয় শব্দ জিব্রাইল (আঃ) এর আনিত শব্দটি যখনই নবী (দঃ) এর মূ মোবারকের মাধ্যমে উচ্চারিত হলো, তখনই “ইক্বরা” শব্দটি দ্বিতীয় অবতির্ণ শব্দ হিসেবে পরিগণিত হলো। কারণ স্রষ্টার বা প্রতিপালকের নাম প্রথম উচ্চারণ করতে আদিষ্ট হয়েছিলেন, তাই প্রতিপালক আল্লাহর নাম না নিয়ে “ইক্বরা” শব্দ উচ্চারিত হচ্ছিলো না। তাই প্রথম প্রতি পালকের নাম অর্থাৎ আল্লাহর নাম উচ্চারিত হলো। সুতরাং এ মহান গ্রন্থানুসারিগণ, প্রতি মঙ্গল কর্মের, অর্থাৎ প্রতি বৈধ কর্মের প্রারম্ভে “বিসমিল্লাহ্” উচ্চারণ করেন। বিসমিল্লাহ্ এমন একটি শব্দ যা একক নিরাকার মহান সৃষ্টি কর্তা মহা আলোর নাম হিসেবে স্থির রয়েছে। সে নাম সূচক শব্দটি হলো, “আল্লাহ” এ আল্লাহ নামটি নিয়ে যে কর্ম করবে সে কর্মে থাকবে স্বয়ং আল্লাহ নামের মহা আলোটি সাক্ষী বা সে কর্মের ভিত্তি হিসেবে, তাতে থাকবে বরক্বত, রহমত, করুণা, দয়া, বিনয়ীভাষণ।
বিঃদ্রঃ= আলো আমাদেরকে স্পর্শ করে, কিন্তু আমরা আলোকে স্পর্শ করতে পারি না। তাই মুহাম্মদী নূর এবং আল্লাহ নামের নূর, আমাদের শরীরে সর্বত্র বিরাজ করছে স্ব-স্ব শক্তিতে। তাই আমাদের কল্পিত, চিন্তিত ধ্যান দ্বারা দূর্বল এবং সবলদের নামাজ এবং নবী (দঃ) এর লক্ষ্যে সালাম পাঠ গ্রহণ করেন। সূর্যের আলো আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাহেরে, আলো আমাদেরকে স্পর্শ করে কিন্তু আমরা সূর্যের আলো স্পর্শ করতে পারি না। গ্লাসের, বা গোলক বলের মধ্যে দিনের বেলায় সূর্যের আলো ভর্তি বা পূর্ণ করে, মুক বন্ধাবস্থায় রেখে গভীর রাতে বাক্সটি উন্মুক্ত করলে, গোলক বলের ভেতরের রক্ষিত আলোটি প্রদর্শিত হবে কী? গোলক বলটির ভেতরাংশ আলো শূন্য হয়ে রয়ে গেলো। কিন্তু আলোটি স্ব-স্ব রূপের আলোতেই লীন হয়ে গেলো। আলোকে আমরা- আলো বলে অনুভব করি। কিন্তু আলোকে স্পর্শ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আলোটি আমাদের শরীরের এবং সৃষ্ট জগতে যত রূপের সৃষ্ট বস্তু বা প্রাণ রয়েছে, প্রত্যোকটি অণু পরমাণুতে আলো বর্তমান রয়েছে এবং থাকবে। সে আলো, ব্যতীত কোন বস্তু বা প্রাণ, তরল-কঠিন স্বতেজ-স্বচেতন থাকবে না। আল্লাহর সৃষ্ট কোন অণু পরমাণুকে ছিড়ে যেতে পারে না, ছেড়ে যাবে না, আলোর কোন আকার নেই যে, যে কেউ তাঁকে স্পর্শ করবে। এটা আলো-বলে-শুধু অনুভব করা যাবে। আপনি যদি মনে করেন তাঁর আকারে-আকারী। যার স্বীমা নেই-দৈর্ঘ্য-প্রস্থ নেই, তাঁর আকার কোথায়? আলোটি এ স্বীমা পর্যন্ত আর আলো নেই এমন হলে, তখন আলোটির আকার ধরা যেতে পারতো। যার স্বীমা নেই, তাঁর আকারও নেই, তিনি একক নিরাকার, আলো গুলো যে আছে শুধু অনুভব বিশ্বাস করতে হবে। নূরে-আল্লাহর সাথে নূরে মুহাম্মদ (দঃ)  রয়েছেন। এতে অনুভব এবং বিশ্বাস করতে হবে, তবে সে বিশ্বাসী বা ঈমানদার হলো। তিনিই একমাত্র শক্তিমান আলো, “তিনি” অর্থাৎ আল্লাহ নামে স্থির আছেন। তিনি ঠান্ডা আলো এবং গরম আলো, অর্থাৎ জ্বালাময়ী রূপের আলো, যখন যা চাহেন করতে পারেন। সর্বশক্তিমান আলোর শক্তির শেষ নেই, হরেক বর্ণের আলো সৃষ্টি করতে পারেন। সৃষ্টির মধ্যে সর্ব প্রথম যে, আলো-সদা সর্বত্র তাঁরই সাথী হিসেবে সাথে থাকবে এবং তা প্রলয় পর্যন্ত আল্লাহর জমিনে, আল্লাহর প্রশংসা বর্ণনার ব্যবস্থা করে যাবেন, তিনি, সর্ব স্রেষ্ঠ সৃষ্টি আলো যে আলো আল্লাহর হাবীব নামে পরিচিতি লাভ করবেন। সে আলোটির নাম মুহাম্মদ (দঃ) আহ্মাদ স্থির রেখেছিলেন। আমাদের মূল মুক্তি বানী হচ্ছে (লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলাল্লাহ্) যা-কায় মনো বাক্যে একবার আবৃত্তি করলে সে নরকের জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে, জান্নাত, বা স্বর্গের উত্তরাধীকারী হিসেবে মালিকানা পেয়ে যায়, বটে কিন্তু ছাত্র, সন্তান, সন্ততীগণ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আদেশ অমান্যকারীকে, আজাব, তথা, সাজা ভোগ করতে হয়। কিন্তু পাঠশালায় পড়ার এবং পিতৃ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয় না।  চির কালের জন্যে যতক্ষন না মহা স্রষ্টা আল্লাহকে এবং তাঁর হাবীবকে অস্বীকার করছে। লক্ষ্য করা যাক মুক্তি বাণীটির প্রতি, মুক্তি বাণীর প্রথম অক্ষর, আরবী ভাষায় অক্ষরটি “লা” বাংলা অর্থ না বা নেই আরবী শব্দটি “ইলাহা” বাংলায় অর্থ হচ্ছে মাবূধ, অর্থাৎ উপাসনা পাওয়ার যোগ্য ইল্লা, বাংলায় অর্থ ব্যতীত, আল্লাহ্ নিরাকার অস্বীম তথা, স্বীমা-হীন, সর্বস্রষ্টা সর্বশক্তিমান, একটি মহা আলোর নাম। যার কোন লিঙ্গান্তর বা বিপরীত শব্দ বা অংশিদার নেই। তিনি সর্বে সর্বা একক স্ব-রূপে সর্বত্র বিরাজ করছেন। তাঁর রূপের বা আলোর কোন উপমা বা উদাহরণ নেই। আল্লাহর নামের সাথে-সাথে মুহাম্মদ (দঃ) নামটি যুক্ত কেন? মুহাম্মদ= অর্থ= প্রশংসাকারী, রাসূল= অর্থঃ প্রেরিত। রাসূলাল্লাহ্= অর্থাৎ আল্লাহর প্ররিত পুরুষ। মহা স্রষ্টা আল্লাহ যখন, তাঁর জগত সৃষ্টি করার ইচ্ছে পোষন করলেন, তখন সর্ব প্রথম তাঁর সহকারী, বা সাথী, তাঁর ইচ্ছেনোযায়ী সকল আলোর স্রেষ্ঠ আলো সৃষ্টি করে তাঁর নাম “মুহাম্মদ (দঃ) নাম স্থির করে আপন সাথে, সাথী করে, আপন নূরে “ফানাহ্” অর্থাৎ মিশ্রন করে, একাকারাবস্থায় আলমে যান্নাতে স্বীয় নামের সাথে যুক্ত করে তাঁর লিপি পটে লেখে রেখেছেন যা সর্বপ্রথম আদম (আঃ) এ মর্ত জগত থেকে দর্শন করে, সে আল্লাহর সাথীর নামে মুক্তির প্রার্থনা করে আপন ক্রটি বা দোষ থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। সে আদম (আঃ) এর সন্তান বর্তমান মানব কুল।
রেসাল অর্থ পত্র যিনি আল্লাহর পত্র বহন করেন তাকে রাসূল বলা হয় অর্থাৎ পত্র বাহক, তিনি আল্লাহ সর্বশেষ পত্র বা গ্রন্থ অর্থাৎ মুক্ত বাণী ‘আল-কুরআন’ দিয়ে গেলেন বলেই তাঁকে রাসূলাল্লাহ্ বলা হয়।
বিঃদ্রঃ মহা আল্লাহর অবস্থান অসীমে, অসীমে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র সীমিতাংশের নাম করণ করেছেন নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডল। মন্ডল দ্বয় অসীমে একটি সীমার মধ্যে নভোমন্ডলের মধ্যেই ভূমন্ডল বা সৌরমন্ডলগুলো অবস্থান। সৌরমন্ডল বা মর্তমন্ডল গুলো, নীহারিকা, গ্ল্যাক্সি, কসমস, গ্রহ নক্ষত্র, মোট কথা স্রষ্টার যত সৃষ্টি রয়েছে, সবই সীমিত নভোসীমায় অবস্থিত। এ নভোসীমার বাহেরে অর্থাৎ আল্লাহ নামক অসীম শক্তির অসীমে আর কোন সৌরমন্ডল বা মর্তমন্ডল নেই। সুতরাং আর কোন আবিষ্কারের অবকাশ নেই।

দ্বিতীয়ত, সম্মানের সাথে ‘দরুদ’ এবং নবী (দ:) এর ওপর সালাম পাঠের মহা আদেশ। লক্ষণীয় বিষয়, সর্বশক্তিমান, আল্লাহ, কুরআন, শরীফের কোথাও এমন উক্তি করেননি, যেমন করেছেন নবী (দ:) এর ওপর সম্মানের সাথে ‘দরুদ’ এবং সালাম পাঠেরোক্তি। যেমন আমি এবং আমার ফেরেশতাগণ আমার নবী (স:) এর ওপর দরুদ আদবের সাথে সালাম, তথা সালামত, করুণা, বারক্বাত,রহমত সূচক শব্দ পাঠ করি, তোমরাও আমার অনুসরণ কর! লক্ষ্য করুণ আল্লাহর যে কোন আদেশ লঙ্ঘনকারী, জান্নাত, তথা স্বর্গ থেকে বঞ্চিত হবে। যেমন সংসদের কোন একটি সাংসদ যদি উক্ত সংসদের সংবিধানের একটি বিধান লঙ্ঘন করে সে সাংসদের স্থান আর উক্ত সংসদে নেই। এমনি সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রদত্ত অতুলনীয় মহা সংবিধান ‘আল-কুরআন’ আল কুরআনের মহাবাণী আল্লাহর মহা উক্তি মহা বিধানের অতুলনীয় মহা বিধান লঙ্ঘন করে  চলেছে, মুসলিম জগতের একটি বিরাট অংশ। উদ্ধৃত মহা বাণী বা মহোউক্তি সম্পূর্ণরূপে লঙ্ঘন করেছে। উদ্ধৃত বাণীটির ন্যায় কুরআন শরীফের, কোথাও আল্লাহ এমন বাণী প্রয়োগ করেননি। যদিও নামায সম্পর্কে ৮২ বার বলেছেন, নামায কায়েম বা প্রতিষ্ঠা করতে। উদ্ধৃত বাণীর ন্যায় এমন উক্তি করেননি, যে, আমি এবং আমার ফেরেশতাগণ নামায পড়ে, তোমরাও সম্মানের সাথে নামায ক্বায়েম কর। রোজা, যাক্বাত, এবং হজ্জ সম্পর্কেও এমন উক্তি করেননি। সুতরাং প্রতিয়মান হচ্ছে যে, “বিস্মিল্লাহ্” সমগ্র সৃষ্টি জগতের ভিত্তি এবং সর্বমহা গ্রন্থ অবতীর্ণের সর্ব প্রথম আল্লাহর পক্ষ থেকে স্বাধীন অবতীর্ণ শব্দ বা সূরা “বিসমিল্লাহ” বাক্যটি স্বয়ং একটি অতুলনীয় সর্বোৎকৃষ্টতম বাক্য। এ বিসমিল্লাহ বাক্যটি পূর্বেও ছিলো বলে, ১৯ পারার সূরা নমলে উদ্ধৃত করে নবী (দ:) কে অবগত করান তাই বিসমিল্লাহ শরীফের আঁয়াত বা বাক্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করলো। স্রষ্টার সৃষ্টির জীবের মধ্যে উত্তম জীব মানব। মানব যখন সভ্যতা ছেড়ে অসভ্যতার জগতে প্রবেশ করে এবং যে সমাজ সভ্যতা হারিয়ে ফেলে, সে সমাজ বা রাষ্ট্র আদর্শ সমাজ বা রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য হতে পারে না। সেখানে ন্যায়, সততা, সত্যতা, সভ্যতা, মানবতা, লজ্জা মান্যতা, আদর, স্নেহতা, পবিত্রতা, ভালবাসা থাকে না। জীব এবং বস্তু তরল বা কঠিনে আপন-আপন, ধর্মের নীতিতে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে তা চিরকাল প্রতিষ্ঠিত থাকবে। মানব যখন অমানবতার জগতে প্রবেশ করে তখনি মহা মানব, কবি দার্শনিকের আবির্ভাব ঘটে, ধর্মহীনতার কোন মূল্যায়ন হয় না। ধর্মহীন বস্তু বা পদার্থের কোন মূল্য নেই, যেমন চুম্বকের ধর্ম আকর্ষণ, আকর্ষণ শক্তি যদি  না থাকে সে চুম্বকের কোন মূল্যায়ন হয় না। যা ব্যবহার যোগ্য নয় বুঝতে হবে তাতে ব্যবহারের যোগ্যতা পবিত্রতা, বৈধতা, কার্যক্রম নেই সুতরাং অনুমেয় হচ্ছে যে, যা ব্যবহার যোগ্য নয় তা মূল্যহীন। যা মূল্যহীন তা অনাদৃত। সকল তরল, কঠিন, বস্তু, পদার্থ, প্রাণ স্রষ্টা থেকে ধর্ম প্রাপ্ত হয়েছে। যেমন চুম্বক পেয়েছে আকর্ষণ ধর্ম তার কর্মই আকর্ষণ করা, অন্যটা নয়। পানির ধর্ম বৃক্ষ তথা উদ্ভিদ জগতে বা প্রাণ জগতে বর্ষিত হয়ে সতেজ, সচেতন করা। তৃষ্ণার্থের, পিপাসা নিবারণ করা। বৃক্ষের ধর্ম অক্সিজেন, ছায়া এবং ফল দান করা। মানব ব্যতীত সকল জগত যে ধর্ম পেয়েছে সে, সে ধর্ম মতে কর্ম করে যাচ্ছে। অন্য কিছু করার মতো বা আপন মতে রুপান্তর করে ভোগ করার জ্ঞান বা বিবেক প্রাপ্ত হয়নি। একমাত্র মানবই তা পেয়েছে। স্রষ্টার সৃষ্টি জগতকে বিভিন্ন রূপে রুপান্তর করে ভোগছে তাই তাদের মধ্যে দিক নিদের্শক মহামানব প্রেরিত হন। তাই আক্বল জ্ঞান, প্রাপ্তির মূল্য দিতে হবে। অবৈধকে পরিহার করে বৈধতাকে প্রাধন্য দিয়ে। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, মানবজাতির জন্য ধর্মই কর্ম, কর্মই ধর্ম নয়। কারণ অবৈধতা জ্ঞান বিবেকের কর্ম নয় বলে, কর্ম হিসেবে গণ্য হয় না। তাই মানবজাতির কর্মই ধর্ম নয়, ধর্মই কর্ম, ধর্মীয় দৃষ্টিতে যা গ্রহণীয় তাকে কর্ম হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। অন্য সব সৃষ্টি জগতে নির্দিষ্ট যে কর্মটি প্রাপ্ত হচ্ছে তাছাড়া অন্যটা করার ক্ষমতা নেই বিধায় আপন-আপন প্রাপ্ত কর্মটি সম্পন্ন করে যায়। চুম্বকের কর্ম বা ধর্ম একটাই, আকর্ষণ করা। তার এ আকর্ষণ শক্তি হারিয়ে গেলে তার কোন মূল্য নেই কারণ সে কর্মহীনাবস্থায়, এখন সে নিষ্প্রাণ প্রাণহীনকে মৃত বলা হয়। তার কোন মূল্যায়ন নেই, মূল্যহীন নি®প্রাণ একটি জড় বস্তু মাত্র। সৃষ্টি জগতের অন্য কোন জীব, বস্তু, প্রাণের স্রষ্টার সৃষ্টির মর্ম বুঝার রূপ রং রস  আপন চাওয়া বিবেক মোতাবেক প্রস্তুত করে ভোগ করার মতো ক্ষমতা নেই। কিন্তু মানব, তা পারে কারণ তারা বৈধ-অবৈধ বুঝার মতো আক্বল জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে। তারা জ্ঞান থেকে বাচতে শিখেছে। অসত্যতা, অসভ্যতা, তাদের কর্ম নয় মহামানব কর্তৃক আনিত মহা গ্রন্থের বিধান পালন, তাদের ধর্ম, ধর্মীয় দৃষ্টিতে যা গ্রহণীয় তা-ই তাদের কর্ম বা ধর্ম। সুতরাং মানবজাতির জন্য ধর্মই কর্ম যা ধর্ম নয় তা কর্ম নয়। তাই মানবের জন্য ধর্মই কর্ম। কর্মই ধর্ম বাক্যটি মানবের তরে নয়। মহামানবগণের মাধ্যমে অবতীর্ণ বিধি-বিধান অর্থাৎ সর্বশক্তিমান অপরূপ শক্তিধর “আল্লাহ্” নামক আলোর প্রদত্ত বিধান অনুসরণেই অসভ্যতার সমাজ, সভ্য সমাজে পরিণত হয়। মহামানবগণ নিজেস্ব কোন বাণী প্রয়োগ করার অনুমতি প্রাপ্ত হন না। মহামানবগণ স্রষ্টা হতে যে বাণী প্রাপ্ত হন, তাকে স্রষ্টার বিধান বাণী তথা নীতি বাণী বলা হয়। স্রষ্টার বাণীগুলো হতে, যে কোন একটি বাক্য বা বাণীকে উপেক্ষা, অবহেলা, এঙ্কার, তুচ্ছ, এবং অবমূল্যায়ন করে বা ত্যাগ করলে, স্রষ্টা প্রদত্ত সে বাণী বা বিধানের সীমায় অবস্থান করার অধিকার রাখে না বা সে, সে ধর্মের আওতাভুক্ত থাকবে না। “কুরআনে কারীমের সর্বস্রেষ্ট বাক্যটির বিষয় আলোচনা”

সর্ব স্রেষ্ট বাক্যটি পারা নং ২২ (বাইশ) কুরআনে কারীমের বাইশতমাংশের ৫৬তম বাক্যটির দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে বুঝা যা যে, বাক্যটি কুরআনে কারীমের সকল বাক্য বা আদেশ থেকে সর্বোত্তম বাক্য বা আদেশ। মহা গ্রন্থ আল কুরআনে কোথাও এমন বাক্যোক্তি করা হয়নি যে, আমিও করি আমার ফেরেস্তারাও অর্থাৎ আমার দূতেরাও করে, হে আমার বিশ্বাসীগণ, আমার কৃত কর্মটি তোমরাও সম্মানের সাথে সম্পূর্ণ কর!। পূর্বোদ্ধৃত বাক্যটি হলো “ইন্নাল্লাহা= নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ এবং আমার দূত বা ফেরেস্তাগণ ছোয়াল্লু আলাইহি অর্থাৎ তাঁর ওপর দরুদ পড়ি অর্থাৎ দোয়া তথা রহমত, বারক্বাত, করুণা, বর্ষণ করি আলান নাবীই, আলা অর্থ ওপর অর্থাৎ আমার দোস্ত আমার হাবীবের ওপর অর্থাৎ। আমার নবীর ওপর তথা মুহাম্মাদ (স:) এর ওপর। করুণাময় আল্লাহ করুণার সাথে বলছেন, ইয়া- অর্থাৎ হে, ওহে  ওগো এই যে, তোমরা যারা আমার ওপর বিশ্বাস করেছ, সন্ধোধন সূচক হে আমার বিশ্বাসীগণ তোমরাও আমার দোস্ত, হাবীব, মুহাম্মাদ (দ:) এর ওপর, দরুদ অর্থাৎ দোয়া করুণা, রহমত, বারক্বাত, সূচক শব্দ পাঠ কর বা রহমত বর্ষণ কর। এবং সম্মানের সাথে তাজীমের সাথে সালাম পাঠ কর তথা সালামত শান্তি বর্ষণ কর! পূর্ণ বাক্যটি (ইন্নাল্লাহা-ওয়া-মালাই=কাতাহু ইউ ছোয়াল্লাুনা আলান্নাবীই ইয়া-আই-ইউহাল্লাজীনা- আমানু ছোয়াল্লু আলাইহী ওয়া সাল্লেমু তাসুলীমা”)। আমি এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী (দ:) এর ওপর দরুদ পড়ি, হে, আমার বিশ্বাসীগণ তোমরাও সম্মানের অর্থাৎ তাজীমের সাথে দরুদ এবং সালাম পাঠ কর। মহাগ্রন্থ কুরআনে কারীমের উদ্ধৃতোক্তিটি সর্বোৎকৃষ্টতম উক্তি, যে কর্তৃক লঙ্ঘীত হবে সে আল্লাহর রহমত, বরক্বাত, করুণা এবং জান্নাত অর্থাৎ স্বর্গ থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহর, সে আদেশ সমূহের মধ্যে সর্বোত্তম সর্বোৎকৃষ্টতম সর্বপ্রথম আদেশটির প্রতি দৃষ্টি বিবদ্ধ করা যাক।  জিব্রাঈল (আ:) এর মাধ্যমে সর্বপ্রথম সর্বপ্রধান আদেশ সূচকোক্তিটি, (ইক্বরা বিসমি রাব্বি কাল্লাজী খালাক) উদ্ধৃতোক্তিটি উচ্চারিত হওয়ার পূর্বে জিব্রাঈল (আ:) এবং নবী (দ:) এর মধ্যে আলীঙ্গন হওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি শিক্ষাপ্রাপ্ত, উচ্চারিত শব্দটি-ই  কুরআনে কারীমে সর্বপ্রথম উচ্চারিত শব্দ। ‘ইক্বরা’ প্রথম উচ্চারিত শব্দ নয় প্রথম  উচ্চারিত শব্দটি ব্যতীত, নবী পাক (দ:) (ইক্বরা) উচ্চারণ করেননি। যাঁর নাম উচ্চারণান্তে ইক্বরা শব্দটি পাঠের আর্দিষ্ট হচ্ছেন। তাঁর সে নাম সূচক শব্দটি হচ্ছে, (আল্লাহ) এ আল্লাহ নামে বাক্যটি উচ্চারণান্তে ইক্বরা শব্দ উচ্চারণ করতে আর্দিষ্ট হচ্ছেন অর্থাৎ (আল্লাহর নামে) বাক্যটি “বিসমিল্লাহ্”। বিশেষ লক্ষণীয় বিষয়ঃ নামাযের মধ্যে যে দরুদে ইব্রাহীম (আ:) এবং সালাম পাঠ করা হয় তা হচ্ছে যে তাশাহুদের মধ্যে পাঠের জন্য নির্দিষ্ট। আল্লাহ এবং ফেরেস্তাগণ দরুদ এবং সালাম পাঠ করেন। যে কোন সময় পবিত্রাবস্থায় পাঠ করতে হয় এবং করার বিশেষ আদেশ আল্লাহ এবং ফেরেস্তাগণের খাস দরুদ এবং সালাম সর্বাবস্থায় সর্ব জায়গায় পাঠ করা যায় তবে স্থান এবং শরীর পাক পবিত্র থাকা উত্তম।

বিঃদ্রঃ নামাযের যে “দরুদ এবং সালাম পড়ি নবী (দ:) এর তাঁর স্বজনগণের অর্থাৎ আলে রাসূলগণের উপর, ইব্রাহীম (আ:) এর এবং আলে ইব্রাহীম (আ:) এর ওপর শান্তি, দয়া, করুণা, রহমত, এবং বারক্বাত, বর্ষণ লক্ষ্যে পাঠ করা হয়। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, “আসসালামু আলাইনা” উদ্ধৃত বাক্যে এটাই প্রতিয়মান হচ্ছে যে, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ তাঁরই  বন্ধু নবী (দ:) এর ওপর স্বয়ং আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে রহমত এবং বরক্বাত বর্ষণ করেছেন। দ্বিতীয়টিতে নবী মুহাম্মাদ (দ:) আসসালামু- আলাইকুম বলে তাঁর অনুসারী অর্থাৎ তাঁর উম্মাতগণের জন্য আল্লাহর নিকট শান্তি রহমত, বারক্বত, কামনা করেছেন। কিন্তু ২২ (বাইশতম) পারার সূরা (আহজাবের) ৫৬তম আয়াত বা বাক্যের মধ্যে যে সালাম শব্দ উচ্চারিত হয়েছে এবং দরুদের কথা বলা  হচ্ছে তা এক নয়। এক হলে (ছোয়াল্লু) এবং সাল্লেমু তাসলিমা পৃথক-পৃথক ভাবে বলা হতো না। দরূদ শরীফ যতই বেশী-বেশী পাঠ করা হয়। ত-ততই ভালো, কিন্তু নবী (দ:) এর ওপর আল্লাহর আদেশ মতে সম্মানের সাথে প্রদান বা পাঠ না করলে, আল্লাহর বিশেষ আদেশ লঙ্ঘনকারী হিসেবে গণ্য, তখন স্বর্গ বা জান্নাত থেকে বঞ্চিত হয়ে গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হলো এবং মুনাফীক, নিমকহারাম, নাফরমান ও ভ্রষ্ট পথের পথিক হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে রিক্ত হস্তে মুমীনগণ হতে দূর থেকে দূরান্তরে ছিটকে নরক গহ্বরে পতিত হয়ে চির তরে ধ্বংশের পথে ধাবিত হবে। আল্লাহর এ মহান আবদারজনীত উক্তি বা আদেশটি সম্পর্কে সম্মানীত ওলামায়ে কিরামগণ বিশেষ ভাবে অবগত বা এ বিষয়ে বিশেষাভিজ্ঞ। এ মহা আবদারজনীত উক্তিটি নিশ্চয়ই-নিশ্চয়ই আমি এবং আমার দূত বা ফেরেস্তাগণ আমার হাবীব মুহাম্মাদ (দ:) এর ওপর দরূদ পাঠ বা পড়ি অর্থাৎ রহমত, বারক্বাত, দয়া, করুণা, শান্তি, সালামত বর্ষণ করি। বিজ্ঞ ওলামায়ে কিরামগণ যখন অবগত তখন লেখার প্রয়োজন কেন? উদ্ধৃত উক্তি সম্পর্কে সকল অবগত নয় বিধায় লেখতে হয়। মানবজাতির মুক্তির পথ প্রদর্শক হিসেবে নবী মুহাম্মাদ (দ:) কুরআন এবং হাদীস শরীফ রেখে গেছেন। প্রত্যেক উম্মাতি মুহাম্মাদীগণের তা অবশ্যাবশ্যই অনুসরণীয়  বা অনুকরণীয় বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় “কুরআন”,                             


এ সম্পর্কে সম্মানিত ওলামায়ে কিরামগণ অবগত থাকা সত্বেও লেখার প্রয়োজন কেন বোধ করলাম। কারণটি হচ্ছে, আমি, বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন স্থানে যেমন- বান্দ্রা, যোগেশ্বরী, মালুনি, মালাড, ইত্যাদি কয়েক স্থানে  এবং দিল্লী, আজমীরও গিয়েছি, এমন কি চৌদ্দ বছর মুম্বাই পূর্ব বান্দ্রা বাহরাম নগর মাদ্রাসা রেজবিইয়া , এবং মসজিদে রেজবিইয়াতে কর্মরত ছিলাম। করাচী দুই বছর বাটোবা  আঞ্জুমান-ই হিমাইতে ইসলাম নামক সংস্থার ইমাম হিসেবে এবং  সৌদি আরব দু বছর কর্মরত ছিলাম। এ সুবাদে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ইসলামী অনুষ্ঠানে যেমন তাবলাগী অনুষ্ঠান, তাবলীগ করা ফরজ কারণ আল্লাহ মহামানবগণের মাধ্যমে তাবলীগ  করিয়েছেন (এজন্য ফরজ বলা হচ্ছে) বক্তাগনের বিভিন্ন বক্তব্য শ্রবণ করতাম তাদের কর্মগুলো প্রত্যক্ষ করতাম কোথাও কোন অনুষ্ঠানে নবী (দঃ) এর দরুদ এবং সালাম এবং কোরআন পাঠ করতে প্রত্যক্ষ দর্শন বা শ্রবণ করিনি। তাই এতে আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে, আল্লাহর একটি বিশেষ অতি আবদার জনীত বাণীর প্রতি, যে বাণীতে মুমীনগণকে অর্থাৎ বিশ্বাসীগণকে ডেকে বলেছেন, হে আমায় বিশ্বাসীগণ। আল্লাহর প্রেরিত ভাষায় “ইয়া আই-ইউহাল্লাজীনা আমানূ” হে আমার বিশ্বাসীগণ আমার হাবীবের ওপর “ছোয়াল্লু আলাইহি” অর্থাৎ তাঁর ওপর দোয়া দরূদ, রহমত, বারাক্বাত, করুণা সূচক শব্দ পাঠ কর। আমি এবং আমার ফিরিস্তাগণও তা করে থাকি। কিন্তু উদ্ধৃত অনুষ্ঠানাদিতে নবী (দঃ) এর ওপর সালাম এবং দরূদ এবং কুরআন পাঠ করা থেকে তারা বিরত থাকে। উদ্ধৃত বাক্যটি অর্থাৎ দরূদ এবং সালাম সূচক আল্লাহর বিশেষ আগ্রহের এবং অতি আবদারজনীত উক্তিটি পাঠ ও সালাম প্রদান থেকে বিরত থাকা অর্থাৎ উদ্ধৃতোক্তিটি কে এঙ্কার করা তথা আল্লাহকে এঙ্কার করা, আল্লাহ প্রদত্ত একটি বাক্য বা আদেশকে অবহেলা বা এঙ্কারকারী অমুসলীম হিসেবে গণ্য, তাই মস্জিদে প্রবেশ করা তার জন্য কঠিন ভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম হয়ে যায়। তারা দরূদ এবং সালাম পাঠ থেকে, কেন বিরত থাকে তাদের একজনকে প্রশ্ন করলে, উত্তরে যা বলে, তাতে প্রতিয়মান হয় যে, আল্লাহর প্রেরিত সে মহা পবিত্র বাণীটি তাদের কর্তৃক প্রত্যাক্ষাত হয়েছে। বিবেকবান মুমীনগণের বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে যাদের কর্তৃক আল্লাহর বাণী প্রত্যক্ষাত হয়, তারা নবী মুহাম্মদ (দঃ) কর্তৃক প্রবর্তিত মস্জিদে  প্রবেশের অধিকার রাখে কি? উত্তর আসবে, না। আল্লাহর মহা পবিত্র বাণীর পূর্বোদ্ধৃতোক্তিটির পুনরাবৃত্তি।
“ইন্নাল্লাহা ওয়া মালা-ই কাতাহু ইউছোয়াল্লুনা আলান্নাবীয়্যে- ইয়া আই-ইউহাল্লাজীনা আমানূ ছোয়াল্লু আলাইহি ওয়া সাল্লিমু তাসলীমা” আল্লাহর স্বীয়োক্তি, আমি- আমার নবী (দঃ) এর ওপর দোয়া দরূদ রহমত বারাক্বাত বর্ষণ করি এবং আমার ফিরিস্তাগণও দরূদ পড়ে অর্থাৎ করুণা বারাক্বাত রহমত বর্ষণ করে। মুমীনগণের লক্ষ্যে আল্লাহর বাণী, “হে, আমায় বিশ্বাসীগণ, তোমরাও আমার নবীর ওপর দরূদ পাঠ কর। অর্থাৎ রহমত, বারাক্বাত, করুণা-শান্তি সালামত বর্ষণ কর। উদ্ধৃত মহা পবিত্র বাণীটি যাদের দ্বারা বর্জিত হলো, তাঁরা অবশ্যাবশ্যই আল্লাহর রহমত  বারাক্বাত থেকে চির শান্তি স্বর্গময় জীবন থেকে বঞ্চিত হলো।
মিলাদ বা মাওলুদ শরীফ
বিজ্ঞ ওলামায়ে কিরামগণ থেকে জান্তে পেরেছি যে, “মাওলুদ বা মিলাদ” শব্দটি আরবী। বাংলা ভাষায় এর অর্থ জন্ম, আগমন, উত্থান বা পর্দাপন। স্মরণ রাখার মতো এমন সরনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী এমন জন্ম সম্পর্কে কোন আলোচনা অনুষ্ঠানকে সাধারণত “জন্ম” বা মিলাদ শব্দ ব্যবহার করি। যেমন অমুক দিন তাঁর জন্ম। যাঁর গুনে মানব এবং দেশ গর্বানুভব করে এবং যাঁরা বিশেষ অতি বিশেষ ব্যক্তিত্বের অধিকারী এমন গুণি জন সম্পর্কে যে কোন আলোচনায় তাঁদের লক্ষ্যে সম্মান সূচক শব্দ ব্যবহার করি। যেমন উনি, অমুক বৎসর, অমুক মাসের, অমুক দিন, অমূক সময় তাঁর আগমন উত্থান বা পদার্পন ঘটে। এ নশ্বর বিশ্বে তাদের অবদান সম্পর্কিত বিষয় আলোচনার লক্ষ্যে যে অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, সে অনুষ্ঠানকে একমাত্র মুসলীম সমাজে মাওলুদ বা মিলাদ শরীফ নামে সরনীয় করে রাখা হয়েছে এবং প্রায় হাজার বৎসর তা পালিত হয়ে আসছে এবং পালিত হতে থাকবে। যারা এ অনুষ্ঠানকে এঙ্কার বা বাতিল বলে জানবে তারা মুসলীম সমাজ থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ এ “মিলাদ” শব্দটি ব্যবহৃত হয় এমন জনের লক্ষ্যে যিনি সর্বস্রষ্টার বন্ধু, মানব জগতের স্রেষ্ঠ মানব এবং স্রষ্টার পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্ব শেষ তুলনাহীন অতি মহা মানব যিনি স্রষ্টার পক্ষ থেকে মুহাম্মদ এবং আহমাদ” নামের উপাধিতে ভুষিত, তাঁর লক্ষ্যেই “মিলাদ” নামের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। যে কোন মুসলীম এ মিলাদ অনুষ্ঠানকে বাতিল ঘোষনা করতে পারে না। যে বাতিল করলো সে মুসলীম নাম থেকে বঞ্চিত এবং মুসলীম উপাসনালয় মসজিদে এবং কাবা বা মসজিদে হারাম বায়তুল্লাহতে প্রবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত হলো। মিলাদকে অবমূল্যায়ন তথা ইসলাম ধর্মকে অবমূল্যায়ন করার সমান।
কোন মহা ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তি পৃথিবী থেকে গমন করার পরই তাঁর ব্যক্তিত্বের এবং কর্মের ও অবদানের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, জীবদ্দশায় নয়। তাঁর আগমন থেকে গমনের মধ্যবাগে অর্থাৎ জীবনকালে যা সংঘটিত হয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করা একান্ত ফরজ অন্যথা সে ধর্ম, সে জাতির ধ্বংস অবধারিত। মহান ব্যক্তিগণের ক্রিয়া কর্ম এবং বিশ্বের প্রতি তাঁদের অবদান সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠান পালিত করা, ভবিষ্যত প্রজন্মদের জন্য দিক নির্দেশনা। আল্লাহর সৃষ্টি এ বিশ্ব জগতে অসংখ্য প্রাণের গমনাগমন হচ্ছে। মহাপ্রলয় পর্যন্ত হতে থাকবে। এ সংখ্যাহীন প্রাণী গুলোর গমনাগমন সম্পর্কে ডাক, ঢোল বাজিয়ে সাজন সাজিয়ে আচারানুষ্ঠান পালিত হয় না। কারণ প্রানীগুলোর মধ্যে জীবন জীবিকার, শান্তি শ্রীঙ্খলার, সভ্যতার আদর্শ সমাজ এবং আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের পথ নির্দেশনার নির্দেশক কোন বিধান বাণী আসেনি। তাই প্রাণী গুলোর জন্ম বা গমনাগমন সম্পর্কিত অনুষ্ঠানাধি পালিত হয় না। কোন বিশেষ জনের আগমন এবং গমন উপলক্ষে দিবস পালিত হওয়ার কারণ হলো, তাঁদের মাধ্যমে স্রষ্টা জগত বাসিকে কি দিয়েছে। সমাজ রাষ্ট্র এবং জাতির প্রতি তিনি কি অবদান রেখে গেলেন? সৃষ্টি জগতের এবং মানব জাতির মুক্তির লক্ষ্যে, যখন বিবেকবান গুনি জনদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়, তখন তাঁদের অবদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেই তাদের আগমন এবং গমন দিবস পালিত হয়। যেন তাঁদের অবদানের দিকে বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মগণের দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে শান্তি সুখের জীবন জীবিকার পথ উন্মুক্ত রাখতে পারে। এ নশ্বর জীবন পথ অতিক্রম করে মর্ত থেকে অমর্তে সহজ ভাবে গমন সম্পন্ন করতে পারে। উদ্ধৃত গুনিজনগণের গমনাগমন অর্থাৎ জন্ম, মৃত্যু উপলক্ষে অনুষ্ঠানাধি পালনের মাধ্যমে তাঁদের জীবন বৃত্তান্ত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আরবী ভাষায় এ অনুষ্ঠাকেই মাওলুদ বা মিলাদশরীফ বলা হয়। আপ্রলয় পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান পালিত হতে থাকবে। এ অনুষ্ঠান ইসলাম প্রচারে বিশেষ অবদান রাখে। যত দিন এ মিলাদ অনুষ্ঠান পালিত হতে থাকবে, ততদিন মর্ত জগতে শান্তি শৃঙ্খলার আলো জ্বলতে থাকবে। তাই সর্ব স্রেষ্ট এবং সর্বশেষ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সর্ব স্রেষ্ট বিশ্বমানবের মুক্তিরালো, মহা গ্রন্থ, আল ক্বুরআন” নামের মুক্তি পথ নির্দেশনা মূলক সংবিধানটির ওপর গুরুত্বারোপ করেই তাঁর আগমন বা জন্ম এবং গমনের দিন, সময় নির্ধারণ করে, যে অনুষ্ঠান-অনুষ্ঠিত হয়, তা মিলাদ বা মাওলুদ শরীফ নামেই অনুষ্ঠিত হয় এবং হতে থাকবে তাঁরই কৃত কর্ম আদর্শ এবং অবদান স্মরণ লক্ষ্যে।
বর্তমানে দ্বীনের দাওয়াত নামক ইসলাম প্রচারানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় কিন্তু যাঁর মাধ্যমে ইসলাম নামক মহা পবিত্র ধর্ম অর্থাৎ পার্থিব জীবন জীবিকার এবং সুস্থ সুন্দর সমাজ রাষ্ট্র গঠনের নীতি নিয়ম অর্থাৎ সংবিধান প্রাপ্ত হয়েছে, সে সর্বশ্রেষ্ঠ সর্বশেষ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর প্রতি সালাম এবং শ্রদ্ধার চিহ্ন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যে সালাম শ্রদ্ধা তাজীম বা সম্মান সম্পর্কে স্বয়ং সৃষ্টি কর্তা অতিব গুরুত্ব সহকারে তাঁর প্রদত্ত মহা গ্রন্থের ২২ (বাইশতম) পারা,সূরা, আহজাবের ৫৬ (ছাপান্নতম) বাক্যে তাঁরই বিশ্বাসীগণের প্রতি আদেশ প্রদান করেছেন। পরিলক্ষিত হচ্ছে যে উদ্ধৃত বাক্যটি সম্পূর্ণ রূপে লঙ্ঘীত হচ্ছে। স্রষ্টার যে কোন আদেশ যার দ্বারা লঙ্ঘীত হবে। সে ব্যক্তি স্রষ্টার বাণী বা গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত থাকবে না। “সাল্লেমু তাসলীমা” এ শব্দ দ্বয় মহান আল্লাহর অতি প্রিয় মহা আদেশ বাণী যাঁর অর্থ তত্ত্ব- তথ্য বর্ণনা দেয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের নেই। যা টুখানি বুঝি “সাল্লেমু তাসলীমা” অর্থে বুঝানো হচ্ছে যে, সম্মানের সাথে সালাম প্রদর্শন কর। এ বাণীটির মধ্যে রয়েছে। শান্তি. রহমত, বারাক্বাত করুণা এমন একটি মহা মূল্যবান বাণী নবী (দঃ) এর ওপর বর্ষন করতে তাঁর বান্দাগণের প্রতি বিশেষ আদেশ প্রদান করছেন। এ মহা মূল্যবানোক্তিটি উচ্চারণ করতে মুসলীম দাবীদার একটি অংশ অনিহা প্রকাশ করে। সে অংশের এক ব্যক্তিকে যখন প্রশ্ন করলাম ভাই, আপনারা নবী (দঃ) এর প্রতি “ইয়া নাবী” শব্দ উচ্চারণে অনিহা প্রকাশ করেন কেন? উত্তরে সে বলে, “ইয়া” শব্দটি উচ্চারিত হয় তখন, যখন যাকে “ইয়া” বলে সম্বোধন করবো, তিনি যদি আমার সামনে বা সম্মুখে উপস্থিত থাকেন। নবী (দঃ) আমাদের সম্মুখে উপস্থি নেই বলে “ইয়া নাবী” বলা হয় না, কিন্তু আল্লাহ বলেছেন আমার নবী (দঃ) এর ওপর সম্মানের সাথে সালাম প্রদর্শন করার জন্য। পূর্বেই উদ্ধৃত হয়েছে, আল্লাহর একটি বানী লঙ্ঘীত হলে, আল্লাহর মহা গ্রন্থই লঙ্ঘীত হলো। যেখানে আল্লাহ বলেছেন “জালিকাল কিতাবু লারাইবা ফীহ্” অর্থাৎ এ গ্রন্থে বিন্দুমাত্র কোন সন্দেহ নেই। এ গ্রন্থ পুঙ্খানূ পুঙ্খরূপে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত।