বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৩

মহাসঙ্কেত

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আমার মুমীন-মুসলমান ভাইবোনদেও প্রতি বিশেষ সতর্ক বণী।
ইসলামের চির দুশমনেরা ইসলামের উপর সরাসরি আঘাত হানিয়াছে।
১। কোরআন শরীফের নাম “ক্বোরআন” শব্দ বাদ দিয়া ইহারা স্থলে ‘হামায়েল শরীফ’ নাম রাখিয়াছে। আল্লাহতায়ালা স্বয়ং তাঁহার কালামুল্লাহ শরীফের নাম কোরআন নামে নামকরণ করিয়া ‘লওহে মাফুজে’ সংরণ করিয়া রাখিয়াছেন। সেই সম্পর্কে আল্লাহ পাক ক্বোরআন শরীফে আয়াত নাযিল করিয়ছেন। তাহা এই “বালহুয়া ক্বোরআনুন মাজিদুন ফি লাওহিম মাহফুজ।‘’ আর্থাৎ কুরআন মাজিদকে লওহে মাফুজে সংরতি রাখিয়ছি। এই নাম বাদ দেওয়ার আধিকার কাহারো নাই। যেমন: কোন লেখক কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম বাদ দেওয়ার আধিকার কাহারো নাই। আল্লাহতায়ালা প্রদত্ত ক্বোরআন শরীফের উপনাম অনেক আছে। যেমন: ফোরকান, কালামুল্লাহ ইত্যাদি। কিন্তু মুল নাম কোরআন শব্দ সারাইয়া আসল বা মুল নামের জায়গায় উপনাম ব্যবহার করার অধিকার কাহারো নাই। কেহ কেহ বলেন, আকারে ছোট অল-ক্বোরঅনকে হামায়েল বলা যায়। কিন্তু ৩০ পারা ক্বোরআন শরীফ আকাওে বড় বা ছোট হোক তাহা র্প্নূ ক্বোরআন শরীফ। কোন ক্রমেই তাহাকে ছোট বলা যাইবে না।

    কেহ কেহ বলেন, প্রিন্টিং ভুল হইতে পারে। হাঁ তাও হইতে পারে। কিন্তু তাহা হইলে আল-ক্বোরঅনের মত আল্লাহতায়ালা প্রদত্ত গ্রন্থ, ভুল বাজারে ছাড়িবে কেন? সংশোধন করেনি কেন? ক্বোরআন শরীফের একটি জের, জবর, পেশা এবং একটি হরকতত্ত ভুল করা চলিবে না। কারণ ইহা একমাত্র  আল্লাহতায়ালা প্রদত্ত কিতাব। ইহার উপরই আমাদের জীবন এবং মরণ।
    একখানি পূর্ন ৩০ পারা ক্বোরআন শরীফের নাম বাদ দিয়ে সেই স্থানে ইপনাম ব্যবহার করা আমর্জননীয় অপরাধ। দুশমনেরা শুধু নাম বাদ দিয়া ান্ত হয় নাই. সুরা ছোট বড় করিয়াছে। সুরার নাম পরিবর্তন করিয়াছে। এক সুরার নাম অন্য সুরাতে ব্যবহার করিয়াছে। রুকু ছোট বড় করিয়াছে। যে কয়েকটি রুকু চিহ্ন দিয়াছে তাহাও নিদিষ্ট জায়গায় দেয় নাই। পারা চিহ্নগুলিকেও এইরূপ করিয়ছে। কোথাও না দেওয়ার মত কোথাও দেয়ই নাই।
    মুসলমান এবং আলেমদের সুরত ধরিয়া মুসলমানদের ভিতর এইরূপ করিতেছে। মুসলিম ভাইবেনগণ আজই এই চক্রান্তের মোকাবিলা করেুন, এখনও সময় আছে।
    ২। কালেমা শাহাদাত: আস্হাদু আল্ল-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ ওয়াহ দাহু-লা-শারী কা লাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
    এই কালেমা শাহাদাত হইতে ওয়াহ্ দাহু এবং লা-শারী কারাহু বাদ দিয়ছে। তাশাহুদকে কালেমা শাহাদাত নাম দিয়া বাচ্চাদেরকে পড়াইতেছে কেন? এর কি কারণ? এই শব্দ দুইটি আমাদের কি তি করিতেছে? আর বাদ দেওয়াতে কি লাভ হইতেছে? অথচ এই শব্দ দুইটিই হইতেছে আমাদের ধর্মের মৌলিক অকিদা। ইহার উপরই আমাদেও ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত। আমাদের জীবনের শুরুতে এবং শেষ সময়ের সম্বল অর্থৎ ইহাই একমাত্র মুক্তির সম্বল বা মুক্তির পথ। ওয়াহ্দাহু অর্থ অল্লাহ এক। লা-শারী-কালাহুÑ তাহার কোন অংশীদার নেই। ইহাই আমরা আমাদের রক্ত কণিকার মধ্যে প্রতিষ্ঠা করি এবং আল্লাহর এই একাত্ববাদের স্যা বহন করিতে করিতে আমরা মৃত্যুবরণ করি। এহাই আমাদের মুক্তির চাবিকাঠি। যাহারা ইহাকে বাদ দিতেছে তাহারা নিশ্চয়ই ইসলামের দুশমন কেনই সন্দেহ নেই। সুতারাং মুমিনগণ এখনও সময় আছে আমাদের এই চির শত্র“দের মোকাবিলা করুন। অন্যথায় আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদেও সন্তানদের ইসলাম ধর্ম হইতে হারাইতে হইবে।

    ৩। ইমানে মোজমাল ঃ
    আমানতু বিল্লাহি কামাহুয়া বি-আস্মা ইহি ওয়া-সিফাতিহি ওয়া-কাবিলতু যামি-আ আহকামিহি ওয়া আরকানিহি।
    ইমানে মোজমাল হইতে আরকানিহি শব্দটি সরাইয়া দিয়ছে কেন? কি কারন? এই শব্দটি দ্বারা আমিাদের কি তি হইতেছে ?
    আহকামিহি শব্দটির দ্বারা আল্লাহতায়ালার সমস্ত হুকুম বা সমস্ত আদেশকে বুঝানো হইয়াছে। বিশেষ বিশেষ হুকুম বা কি কি হুকুম কোন ধরনের হুকুম।
    হুকুম আবশ্যকীয়, হুকুম অত্যাবশ্যকীয়। যেমন : ফরজ ফরজে অইন এবং ফরজে কেফায়া। আহ্কামিহি শব্দটিতে হুকুমের ধরন রকম বা কিসিম বুঝাইতেছে।
আরকানিহি শব্দটি কিন্তু তাহা বুঝাইতেছে। যেমন: আরকান অর্থাৎ রোকন বা স্তম্ভ বা খুটিসমূহ। আমাদের     ইসলামের রোকন বা খুটি এই কয়টি। যাহার উপর আমাদের ইসলাম ধর্ম খাড়া রহিয়াছে। ইহাতে তাহাই বুঝাইতেছে বা বুঝাইয়াছে। তাহা কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত। ইহার উপর আমাদের ইসলাম নামক ঘরটি খাড়া রহিয়াছে। এই শব্দটি হইতে আমাদের সন্তানদেরকে বঞ্চিত করার অধিকার কে দিয়েছে। নিশ্চয়ই তাহারা ইসলামের আসল দুশমন। তাহাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘেষণা করা ফরজ হইয় গিয়াছে।
    ওয়দ্ দাহু-লা-শারী-কালাহু এবং আরকানিহী এই শব্দ কয়টির উপর আমাদের ইসলাম পূর্ণত্ব প্রতিষ্ঠিত রহিয়াছে। এই শব্দগুলি বাদ দিলে আমাদের ক্বোরআন এবং হাদিসের ও দরকার হয় কি? কত বড় চক্রান্ত চিন্তা করুন আর সময় নষ্ট না করিয়া ময়দানে নামিয়া আসুন।
    ৪।    তথাকথিত প্রকাশনাগুলি হইতে ছাপানো কোরআন, শরীফ শিার কায়দাগুলি পর্যন্ত পরিমাণে পাইয়াছি।
ক) কোরআন শরীফ যাহা হামায়েল নামে প্রকাশিত ঃ
ফয়েজ হামায়েল শরীফ, ফয়েজি কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা দোকানের নাম্বার নাই।
খ)    আসমানী কোরআন শরীফ ঃ
মোহাম্মদী লাইব্রেরী, চকবাজার ঢাকা-১১।

কোরআন শরীফ শব্দটির উপর দিয়া লিখিয়াছে “আসমানী” শব্দটি। কেন কি কারণ? এখানে প্রশ্ন আসিতেছে যে, কোরআন শরীফ আবার জমিনীও হইতে পারে কি? আছমানী লিখার কি প্রয়োজন ? ইহাতে মনে হইতেছে যে, কালক্রমে কোরআন শব্দটি সরাইয়া শুধু আছমানী শরীফ নাম ধারন করিতে পারে। পৃথিবী হইতে “কোরআন” শব্দটি উঠাইয়া দেওয়ার চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নহে।

৫। নুরানী কায়দা ঃ যাহার মধ্যে কালেমা শাহাদাত হইতে শব্দ ওয়াহদাহেু লা-শারী কা-লাহু বাদ দিয়া তাশাহুদকে কালেমা শাহাদাত নাম দিয়া প্রকাশ করিয়াছে এবং কারআন শরীফের বাক্যগুলিকে এলোমেলো করিয়া বাক্যের মত  লিখিয়াছে। কেন কি কারণ? ইহা এমদাদিযা লাইব্রেরী , চক বাজার, ঢাকা হইতে প্রকাশিত এবং তাবলিগী কুতুবখানা ও বিভিন্ন কুতুবখান। হইতে প্রকাশিত।

৬। আদইয়ায়ে মাছনুনাহঃ যাহার মধ্যে ঈমানে মোজমাল হইতে আরকানিহী শব্দাটি বাদ দিয়া প্রকাশ করিয়াছে। তাহা নাদয়িাতুল কোরআন প্রকাশনী, চক বাজার, ঢাকা।
৭। আসমানী কোরআন শরীফ: মোহাম্মদী লাইব্রেরী, চক বাজার ঢাকা। 

এই কোরআন শরীফ খানার মধ্যে সুরা জুমারকে বাড়াইয়াছে সূরা মুমীনের ১নং , ২নং ও ৩নং রুকু হইতে কিছু কিছু অংশ সংযুক্ত করতেঃ সূরা জুমারকে বড় এবং সূরা মুমীনকে ছেট বা সংপে করিয়া ফেলিয়াছে।
৮।    ফয়েজি হামায়েলের মধ্যে অনেক রুকুরই চিহ্ন দেয় নাই। যেমনÑ দুই রুকুকে এক রুকু করিয়ছে। আর সাধারণতঃ রুকুর চিহ্ন যে পার্শ্বে থাকে সেইখানে না দিয়া ডানের চিহ্ন বামে দিয়াছে। যেখানে রুকু আদৌ ছিল না সেইখানে রুকু দিয়া  এক রুকুকে দুই রুকুতে পরিণত করিয়াছে।

সূরা ছোয়াদের মধ্যে কিছু জায়গায় ছোয়াদ এবং কিছু অংশে সূরা ছাফফাত লিখিয়া রাখিয়াছে। সূরা মুমীনের মধ্যে সূরা হামীম এবং সূরা হামীমের মধ্যে মুমীন নাম লিখিয়া রাখিয়াতে। যেন আল্লাহ এবং রাসূলের সাথে এবং ইসলাম ধর্মের সাথে লুকোচুরি খেলিতেছে। আরো যে কত জায়গায় কি করিয়াছে আমার জানা নাই। যতটুকু দেখিলাম ততটুকুই আমার মুমীনÑমুসলমান ভাইÑবোনদের খেদমতে এবং মাননীয় বাংলাদেশ সরকার প্রধানের খদমতে পেশ করিলাম।

৯। কিছু কিছু মনগড়া নতুন সিষ্টেমগুলির মধ্যে এই ধরনের কর্মকান্ড বেশী বেশী ল্য করা যাইতেছে।

১০। আমাদের শ্রদ্ধেয় হযরত মাওলানা ওবায়দুল হক সাহেব খতিব বাইতুল মোকাররম, ঢাকা, তিনি বলিয়াছেন, যদিও কোন কোন জায়গায় ওয়াহদাহুÑলাÑশারী কালাহু  ছাড়াও কালেমা শাহাদাত দেখো যায়, তবে ওয়াহদাহুÑলাÑশারী কালাহু শব্দ যুক্ত কালেমা শাহাদাত উত্তম। সুতারাং আমাদের সাধারণের জন্য এই ওয়াহদাহুÑলাÑশারী কালাহু শব্দ যুক্ত কালেমা শাহাদাত এবং আরকানীহি শব্দ কয়টিই আমাদের জন্য একমাত্র সম্বল। সুতারাং ওয়াহদাহুÑলাÑশারী কালাহু এবং আরকানীহি শব্দ কয়টি বাদ দেওয়া কোন ক্রমেই চলিব না। কারণ এই কয়টি কথা বা এই কালেমাটিই আমাদের একমাত্র সম্বল।

১১। হযরত মাওলানা মোখলেছুর রহমান সাহেব, ইমাম, বাইতুল মোকাররম, ঢাকা, তিনি বলিয়াছেন, উক্ত শব্দগুলি বাদ দেওয়া যাইবে না।

১২। জনাব মুফতি ইয়াহিয়া  সাহেব, লালবাগ শাহী মসজিদ, ঢাকা, তিনি বলিয়াছেন, এই শব্দগুলি উত্তম। উত্তম কালেমাইতো আমাদের প্রয়োজন। কারণ ইহাই আমাদের জীবনের এবং পরÑকালের মুক্তির চাবি কাঠি। এই শব্দ কয়টি বাদ দেওয়ায় ইসলামের আলো বাড়ে নাই বরং চরমভাবে আঘাত প্রাপ্ত হইয়াছে। গভীর অন্ধকার নিমজ্জিত হইতে চলিয়াছে। আমাদের সন্তানের এই অতি নিকটতম এবং অতি তাৎপর্যপূর্ণ শব্দগুলি হইতে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত হইতেছে। কেন? কি কারণে?

১৩। মাওলানা নেছার  উদ্দিন সাহেব, পেশা ইমাম, মাদারটেক জামে মসজিদ সরকার পাড়া, ঢাকা তিনি বলিয়াছেন, উক্ত শব্দগুলি ব্যতীত কালেমা দুইটি অসমাপ্ত থাকিয়া যাইবে। সুতারাং কিয়ামত পর্যন্ত এই কালেমা দুইটি অপরিবর্তনীয় থাকিবে। এবং অবিকৃত অবস্থয় থাকিবে।

    এই শব্দ কয়টি সরাইবার কারণ কি? উক্ত শব্দ কয়টি সরাইলে ইসলামের মূল শিকড়-ই শেষ হইয়া যায়। মুমীন –মুসলমান ভাইÑবোনগণ চিন্তা করুন আর সময় অপচয় না করিয়া এদের চক্রান্তের মোকাবিলা করুন। যদিও কেহ কেহ বলেন, বা কেহ কেহ বলিতে পারেন, এতবড় বটবৃ তাহার বিশাল শাখাÑপ্রশাখা নিয়েইতো দাঁড়াইয়া আছে চিন্তা কিসের? অর্থাৎ কোরঅন-হাদিসতো আছেই। এই শব্দ কয়টির জন্য মাথা ব্যাথা কেন? আমি বলব, এই শব্দগুলি প্রথম থেকেই চলিয়া আসিতেছে। সেই আমাদের নবী পাকের জামানা হইতে মুলতঃ আদম (আঃ) এর জামানা হইতে। তাহা কিতাব হইতে সরাইবার জন্য এদের এত মাথা ব্যাথা কেন?

    সকলেরই জানা যে, মুল শিকড় হীন বটবৃ যেমন বাতাসের স্বাল্প দাপটে কি কে থাকিতে পারে না পড়িয়া যায়, তেমন ইসলামের মূল শিকড় হইল আল্লাহর ওয়াহদানিয়ত (ওয়াহদাহু) আল্লাহ এক (লাশারীকা লাহু) তাঁহর কোন অংশীদার নাই এবং (আরকানিহী) রেকন স্তম্ভ বা খুঁটি, তাহা কালোমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ, এব্ং যাকাত। উক্ত বর্ণিত শব্দগুলি না থাকিলে ইসলাম নামটিই অর্থহীন। আর যত কিতাবই থাকুক না কেন সবই নিরর্থক। উক্ত শব্দগুলি হইতে আমাদেরকে এবং আমদের সন্তানদেরকে মাহরুম বা বঞ্চিত করিবার জন্য এরা উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছে  কেন? এর কারণ?

১৪।    কায়দাগুলির মধ্যে জুমলার মত করিয়া এমন এলোÑমেলো বিশ্রি করিয়া লিখিয়াছে অথচ তাহা জুমলা বা বাক্য নহে। কিন্তু বাক্যের আাকরে লিখিয়াছে। সময়, কাগজ, কালি, শ্রম সবইতো গেল, এইরূপ লিখার কি অর্থ হইতে পারে? কালামুল্লাহ শরীফ যেমন Ñ কাল ফারাশীল মাবসুসি....কাল ইহনিল মানফুস, মাঝখান দিয়া ‘ওয়াতাকুনুল যি বালু’ ছািড়য়া দিয়েছে। এইরূপ বহুতই করিয়াকছে কিন্তু কেন? মহা কালামমুল্লআহর সাথে এই চরম বেয়াদবী কেন? কি কারণ? ইহা অমার্জনযি অপরাধ নয় কি? কাগজ-কালি সময় সবইতো গেল এইরূপ না করিয়া ছোট সুরাগুলি বাচ্চাদের শিখার সুবিধার জন্য লিখিয়া দিলেই হইত। বানান,ম চালু মুখস্ত সবই হইয়া যাইত। এইরূপ না করিয়া সুরা পরিবর্তনা বা আয়াত পরিবর্তন কারা পিছনে সংকলকদের নিজের যুক্তি নিশ্চয়ই আছে? সেই যুক্তি কি? যদি বল হয় শব্দ শিা  দেওয়ার জন্য তাহা হইলে জুমলা সেন্টেন্স বা বাক্য আকারেকেন? বাক্য নিশানা দিয়া কেন, লিখাগুলি এমন বিশ্রীভাবে লিকা হইল যেন মহান আল্লাহর মহা কালামুল্লাহর মাথে ছিনিমিনি খেলিল। লুকোচুরি খেলিল কেন? কি কারণ? যাহারা আমাদের মহা কালামুল্লাহর সাথে ঐরূপ করিল, অর্থাৎ ইসালামের মুল ভিত্তির শব্দগুলিকে লইয়া এই খেলা করিতেছে। তাহাদের পিছনে নিশ্চয়ই বিজাতি অমুসলিম চক্রান্ত কাজ করিতেছে ইহাতে সন্দেহের কােন অবকাশ নাই।  সুতরাং মুমিন-মুসলিম বোনদেরকে , এই মহা চক্রন্তের বিরুদ্ধে বিশেষ সতর্কভাবে সমস্যা সমাধানের পন্থা  অবলম্বন করিতে হইবে। ইহাদে মোকাবিলা করিয়া আল্লাহর বাণীকে রা করুন।

১৫।     স্কুলের পাঠ্য, ইসলামী বইয়ের মধ্যেও এক জায়গায় লিখা আছে শুধু আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল-এই পর্যন্ত বলিয়া শেষ করিয়া দিয়াছে। কেন কি কারণ? কবরে  বা গোরের যাহারা আছে তাহাদের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষণের জন্য দোয়া করা হইয়াছে একেবারে আমভাবে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান যত জাত আছে প্রত্যেকের উপর। ইসলামের নিয়মতো এইরূপ নয়। ইসলামের দৃষ্টিতে যাহারা আল্লাহর নির্দেশের আনুগত ও রাসূল মোহাম্মাদ(সাঃ) এর উম্মত তাহারাই একমাত্র এই দোয়া পাওয়ার অধিকারী। কাফের নাফরমান এবং নিমক হারাম যাহারা তাহারা মুমিন মুসলমান হইতে এই দোয়া পাওয়ার আধিকার রাখে না। তাই এইভাবে শুধু আমভাবে কবরবাসীদের উপর বলা উচিৎ হইবে না। অন্ততঃ এতটুকু বলা উচিৎ যে, সমগ্র মুসলিম নরÑনারী কবরবাসীদের উপর শান্তি বর্ষিত হউক। অর্থাৎ আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুরে মিনাল মুসলেমিনা ওয়াল মুসলিমাতে। কমপে এতটুকু বলিতে হইবে। আবার অনেকেই মোনাজাতের মাধ্যে পাঠ করেন শুধু ‘রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি ছাগিরা।’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ, যাহারা আমাদেরকে ছোট বেলায় ষেইরূপ আনুগ্রহ-দয়া করিয়াছে সেইরূপ দয়া অনুগ্রহ তুমি তাহাদের উপর কর।) এইখানে প্রশ্ন হইতেছে, যাহারা ছেট কালে অনুগ্রহ দয়া করিয়াছে তাহাদের জন্য দোয়া। তাহারা কাহারা? সকলেইতো ছোটকালে ফুলের মত বেগুনাÑ মাছুমÑ সুন্দর থাকে তাই হিন্দুবৌদ্ধখৃষ্ট্রান  এক কথায় সকলেই তাহাকে ভালবাস বা আদর স্নেহ, মায়াÑমমতা, দয়া বা অনুগ্রহ করিয়া থাকে। এইভাবে কি আমভাবে সকলের জন্য দোয়া করা চলিবে। এই দোয়ার শব্দগুলি তো খাস করিয়া  পিতা  মাতার জন্য তাই এইভাবে পিতা  মাাতার শব্দটি গোপন বা উহ্য রাখিয়া পাঠ করিলে কি ঠিক হইবে? কেহ কেহ বলেন, মনের খবরতো আল্লাহই জানেন, পিতা Ñ মাতার উদ্দেশ্যেইতো বলা হয়। কারণ হাদীস শরীফে আছে  ইন্নামাল  আ  মালূবিন নিয়্যাত। নিয়তের বা উদ্দেশ্যের উপর ছাড়িয়া দিলেইতো হয়। না, তাহা সব জায়গায় সব সময় সকলের উদ্দেশ্যের উপর বা নিয়তের উপর ছাড়িয়া দিলে ঠিক হইবে কি। তাই পিতা  মাতার উদ্দেশ্য খাস  দোয়া করিতে পিতা মাতার জন্য দোয়া এই কয়েকটি শব্দ বাক্যটির অন্তগর্ত রাখিয়া উচ্চারণ করিলে উত্তম হইবে বলিয়া আমি মনে করি। (যেমন অন্ততঃ এতটুকু বলা দরকার আল্লাহুম্মাগ ফিরলি ওয়লি ওয়া লিদাইয়া ওয়ার হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানি ছাগিরা)। ওয়ালি ওয়াÑলিদাইয়া শব্দ বাদ দিয়া শুধু রাব্বের হুমা বলিলে আমভাবে প্রত্যেকের জন্য হিন্দু  বৌদ্ধ খৃষ্ট্রান  যাহারা ছোট বেলায় আদরে  স্নেহ করিয়াছে তাহাদের জন্য হইয়া যায়। পিতাÑমাতার জন্য এই খাস দোয়াটি আমভাবে পাঠ করিবার জন্য ইসলাম অনুমতি দিয়াছে কি? এর জন্য আমুসলিমকে জান্নাতে বা বেহেস্তে পাঠাইবার জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করিলে বা দোয়া করিলে আল্লাহ তাহা কবুল করিবেন কি? না, কস্মিনকালেও না।

    একজনকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি শুধু রাব্বের হামÑহুমা কামা রব্বাইয়ানি ছাগিরা  বলিলেন কেন? তিনি বলিলেন বাবা-মার উদ্দেশ্যে বলিয়াছি। তখন আমি বলিলাম জনাব, পিতাÑমাতা শব্দটাইতো উল্লেখ করেন নাই। তিনি বলিলেন, বাবাÑমার জন্য দোয়ার েেত্র তাহাদের নাম উল্লেখ করার কি দরকার ? অন্তরে তো তাহা আছেই। তাহা হইলে অন্তরে সবটিইতো আছে আর এতটুকুবলার দরকার কি? তাই আমি মনে করি আল্লাহুম্মাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়াÑলিদাইয়া শব্দটি ব্যবহার করিয়া ওয়ার হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানি ছাগিরা। এইভাবে কলিলে ভাল হইবে। উদ্দেশ্য পূরণ হইবে। আবার অনেকেই দেখা যায় দরূদ পাঠেই অনিহা। ইহার উপর গুরুত্ব না দেওয়া ইহাও কিন্তু ভাল লণ নহে। মনÑমানসিকতা এইরূপ হইতেছে কেন? কি কারণ?


হযরত মাওলানা আশরাফ আলী খানাভী (র:) সাহেবের নামে প্রকাশিত মোনাজাতে মকবুল হেজবুল বাহাারের মধ্যেও “আরকানিহি” এই মহা মূল্যবান শব্দটি বাদ গিয়াছে। কেন ও কি কি কারণ?

অথচ,    এই শব্দটির মধ্যে গোটা ইসলামী আকিদার প্রশ্ন জড়িত রহিয়ছে। কেননা, এই শব্দটি ইসলাম ধর্মের রোকন বা স্তম্ভ বা খুঁটিসমহের দিকে নির্দেশ দিতেছে। যাহার উপরে গোটা ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত।  ইসলামের মৌলিক সেই রোকনগুলি হইতেছে কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্জও যাকাত। এই খুঁটিগুলি সনাইয়া দিলে গোটা ঘরটাই পড়িয়া যায়। অর্থাৎ কালেমা, নামাজ, রোাজা, হজ্জ ও যাকাত বাদ পড়িয়া যায়। উক্ত শব্দগুলি অর্থাৎ ওয়াহদাহুÑলাশারী কালাহু এবং আরকানিহী শব্দ কয়টি না থাকিলে কোরআন এবং হাদিসের প্রয়োজন হয় না। এমন গুরুত্বপূর্ন শব্দটি ঈমানে মোজমাল এবং কালেমা শাহাদাত হইতে বাদ দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে?

    এই মৌলিক ভিত্তিগত শব্দগুলি তাহাদের নিকট আনীহা হইল কেন? কিতাবের মধ্যে হইতে বাদ দেওয়ার অর্থ একেবারে পৃথিবী হইতে শব্দটিকে সরাইয়া দেওয়া নয় কি? কিতাবের মধ্যে থাকিলে আমি না পড়িতে পারিলেও অন্যেরাতো পড়িতে পারিত। সুতারাং দেখা যাইতেছে যে শব্দ কয়টিকে সরাইয়া দেওয়া নয় কি? কিতাবের মধ্যে থাকিলে আমি না পড়িতে পারিলেও অন্যেরাতো পড়িতে পারিত। সুতারাং দেখা যাইতেছে যে শব্দ কয়টিকে সরাইয়া ফেলা নয়, নানাদিক হইতে ইসলামের মূল ভিত্তিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যেই এইরূপ চক্রান্ত মাত্র। কিন্তু কেন?

    গত ৫০ বৎসর হইতে যে সকল নতুন নতুন সিষ্টেম চালু হইয়াছে এবং নতুন নতুন বই লিখা হইয়াছে এইগুলির মধ্যে বেশী বেশী এই সকল কর্মকান্ড ল্য করা যাইতেছে। কেন কি কারণ? রশিদ আহাম্মাদ গংগুহী সাহেবের লিখা তাওয়ারীখে ইসলামের মধ্যে মোহাম্মাদ তারিক বিন জায়িদ এবং মোহাম্মাদ খালিদ বিন ওয়ালীদ এবং বিষাদ সিন্ধুর মধ্যে মোহাম্মদ মুসলিমের নামের সাথে সংপে দরূদ (সাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের) ছোয়াদ লিখিয়া রাখিয়াছে। অথচ, এ দরূদ শরীফ কেবলমাত্র হযরত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-র জন্যই সুনিদিষ্ট রহিয়াছে।

    আমার আকুল আবেদন হে প্রিয় মুসলমান ভাই-বোনগণ, এখনও সময় আছে। এইরূপ ঘৃণ্য চক্রান্তের মোকাবিলা করুন। মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করিয়া বিপদহামী করিবার জন্য বহু চক্রান্ত বিশেষভাবে বহুভাবে ময়দানে তৎপর রহিয়াছে। কোন কোন বিশেষ চক্র বিশেষ নামে ধারণ করিয়া কেহ কেহ পীর দরবেশ নাম ধারন করিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করিতেছে। কেহ কেহ বলিতেছে ইসলামে নাকি পুর্ন জন্ম আছে। সোজা-সরল মুসলমানদের মধ্যে ভ্রান্ত প্রচার করিয়া বিভ্রান্ত করিতেছে। কেহ কেহ ভন্ড পীর বুজুর্গ সাজিয়া বলিতেছে, মানুষ মরিলে তাহার আতœা নাকি তাহার নাভিতে লুকিয়ে থাকে। অনুকুল প্রবাহে নাকি মানুষ রূপে বা জানোয়ার রূপে, বৃ রূপে আবার জন্ম লাভ করে। ইসলামে এই ধরনের উক্তির স্থান নাই। এক কথায় ইসলামে পুনর্জন্ম নাই। তথাকথিত সুফিÑপীরর রূপ দরিয়া এই ধরনের কথা প্রচার করিতেছে। সাবধান মুমীনÑমুসলমান ভাইÑবেনগণ (উম্মতে মুহাম্মদী সকলেই মুমীন)।

    সাবধান, এখনও সময় আছে,এদের ভন্ডামীর মোকাবিলা করুন। আর একটি বিশেষ কথা, মির্জা গোলাম আহাম্মদ কাদিয়ানীর অনুসারীরা নিঃ সন্দেহে বেÑদ্বীন হইয়া গিয়াছে।

    নবী, রাসূল আর আসিবেন না। অথচ সে নবী দাবী করিয়াছে। সুতারাং সে নি:সন্দেহে কাফের হইয়া গিয়াছে। এতে কোন সন্দেহ নাই। সন্দেহ থাকিলে মুসলমান থাকবে না।

প্রিয় মুসলমান ভাইÑবোনরা সাবধান, সাবধান, সাবধান এখনও সময় আছে মোকাবিলা করুন।

বি: দ্র:Ñ    আমাদের দো’জাাহানের সরদার নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (দ:) ফরমাইয়াছেন যে, (আনা খাতামুন্নাবীঈন) আমিই শেষ নবী। অবার ফরমাইয়াছেন, (লাÑনাবীয়্যা বায়াদী) আমার পরে আর কোন নবী নাই । উক্ত বানী অবিশ্বাসকারী মুসলমান থাকিবে না। সুতারাং মির্জা গোলাম আহম্মদ কাদিয়ানী নবী দাবী করিয়া কাফের হইয়া গিয়াছে।

    আর একটি ল্য করার বিষয় এই, হাজার হাজার বৎসর ধরিয়া আরবী অর অলীফÑবেÑতেÑছে পড়িয়া আসিতেছে। ইহাকে শুদ্ধ করিয়া পড়ার নাম করিয়া, উল্টাইয়া অর্থাৎ বাÑতাÑছা করিয়া মুসলমানদের মধ্যে আরেকটি বিভ্রান্তি সুষ্টি করিয়াছে ইহাও ইসলামের দুশমনেদের মধ্যে বিশেষ একটা চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নহে। যাহারা ইসলাম প্রচার করিয়া গিয়াছেন তাহারা বেÑতে পড়িয়া ভুল প্রচার করিয়া গিয়াছেন কি?

    আলিফকে হামজা পড়াইতেছে কেন? কি কারণ? আমার বয়স পঞ্চাশাধিক লেখাপড়া তেমন করিতে না পারিলেও শিা জগতের সাথে প্রায় ১৮ বৎসর জড়িত ছিলাম। জড়িত ছিলাম। আাামার অব্বা মরহুম পীর কেবলা হযরত মাওলানা হাফেজ ফকীর মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল ছাহেব। বাঘডুবী বড় হুজুর নামে খ্যাত ছিলেন। আমার দাাদা মরহুম হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আহম্মদ উল্যা ছাহেব এবং পর দাদা হযরত মাওলানা মোহাম্মদ জালীমদ্দিন ছাহে। তাঁহারা সুদ ব্যক্তি এবং বিশেষ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। এমনকি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসাবেও সুপরিছিত ছিলেন। মুসলিম সমাজের পেশওয়া পথÑপ্রদর্শক বা ইসলামী উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করিয়া গিয়াছেন। স্কুলÑমাদ্রাাসা প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন এবং বহু মসজিদ নির্মাণেও সহযোাহিতা করিয়াছেন। শত শত মুসলিম সন্তানদেরকে হাফেজ, কারী, আলেম এবং সুফি আদর্শ মুমীন বানাইয়া গিয়াছেন। উনারা কখনও কাহাকেও আলিফকে হামজা পড়ান নাই। পড়ার জন্য বা পড়ানোর জন্য বলেনও নাই। উনারা যদি আলিফকে হামজা পড়াইতেন, তবে আলিফ যবর (আ) না বলিয়া, আলিফকে হামজা যবর (আ) বলিতেন বা পড়াইতেন। কিন্তু উনারা উক্ত নিয়মে পড়ান নাই। তাঁহারা বর্তমান যোগের উলামায়ে কেরামগণ অপো কোন অংশ কম ছিলন না। সুÑশিা এবং কামিলিয়ত ও আমলিয়াতের কারণে আল্লাহর অতি নিকটতম প্রিয় বান্দা ছিলেন। যা তাঁহাদের কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়া প্রকাশ পাইয়াছিল। তাঁহাদের সম্পর্ক একের পর এক করিয়া যাঁহাদের সাথে ছিল। তাঁহারা ভারত এবং আরবের মধ্যে কামেলিয়াতের উচ্চ শিখরে উপবিষ্ট ছিলেন। নিম্নে তাঁহাদের নাম শরীফ প্রদত্ত হইলঃ

১।     হযরত মাাওলানা আহাম্মদ ছাবেহব (জৌনপুরী)।
২।     আমিরে শরীয়ত হযরত মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুয় রব ছাহেব রহমাতুল্লাহে আলাইহ, (জৌনপুরী)। তিনি ইলমি জাহের ও ইলমি বাতেন এর মধ্যে উচ্ছ কামালাত হাসিল করেন। তাহার সম্পর্কে বাংলার মুসলমানগণ বিশেষভাবে অবগত আছেন।
৩।     হযরত মাওলানা হাফেজ আহম্মদ ছাহেব রহমাতুল্লাহে আলাইহ (জৌনপুরী) মাজার শরীফ চক বাজার মসজিদ, ঢাকা।
৪।     হযরত মাওলানা কেরামত আলী ছাহেব রহমাতুল্লাহে আলাইহ (জৌনপুরী), মাজার শরীফ রংপুর। তিনি সাইয়েদ আহম্মদ ছাহেব হইতে খিলাফাত ও ফয়েজ হাসিল করেন এবং নোয়াখালী ছাদুল্লাপুরী, জনাব মাওলানা ইমামুদ্দীন ছাহেবের খিদমতে থাকিয়া তরীকতের শাস্ত্র পুনঃ পাঠ করতঃ ইলমে জাহের ও ইলমে বাতেন শাস্ত্রে এক বিশেষ শিা হাসিল করেন। হযরত দৈয়দ আহাম্মদ বিরলভী রহমাতুল্লাহ আলাইহ, বৃটিশ এর যোগসাজশে পাঞ্জাবের রাজা রনজিত সিং মুসলমান ধর্মে হস্তপে করাতে ১২৪১ হিজরী ৭ই জমাদিউসসানী তাহার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘেষণা করেন এবং ১২৪৬ হিজরী ২৪শে জিলকদ বালাকোটের যুদ্ধে শহীদ হন।
৬।     হযরত মাওলানা আজিজ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহ জন্ম: ১১৬৯ হিজরী এবং ১২২১ হিজরী ৭ই শাওয়াল ইন্তেকাল করেন। মাজার শরীফ দিল্লী।
৭।     হযরত শাহ মাওলানা ওয়ালী উল্যাহ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহ। মাজার শরীফ দিল্লী।
৮।     হযরত মাওলানা শেখ আবদুর রহীম মোহাদ্দেস দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহ। তিনি চার তরিকার নিয়ম প্রবর্তক ছিলেন। মাজার শরীফ দিল্লী।
৯।     হযরত সৈয়দ ওবায়েদ উল্যাহ আকবাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহ। তিনি আগ্রার অধিবাসী মাজার শরীফ যমুনা নদীর তীরে।
১০।     হযরত মাওলানা শেখ আদম বান নুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহ। মাজার শরীফ মদীনা শরীফ।
১১।     হযরত শেখ আহাম্মদ সিরহেন্দ রহমাতুল্লাহি আলাইহ। তিনি খিলাফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর ফারুক রাদি আল্লাহু তা’আলা আনহুর বংশধর। মাাজার শরফি সিরহেন্দ। তিনি আমাদের দো’জাহানের সরদার নবী মোহাম্মাাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম এর আগমণের এক হাজার বৎসর পরে ইসলাম ধর্মে নতুন জীবন সঞ্চার করেন। তিনিই মোজাদ্দেদে আল-ফেসানী নামে বিশ্বে পরিচিত হন।
১২।     হযরত খাজা বাকি বিল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাই, মাাজার শরীফ দিল্লী।
১৩।     হযরত খাজা আমকাজী রহমাতুল্লাহি আলাইহ, মাাজার শরীফ আমকাঈ।
১৪।     হযরত মাওলানা দরবে শমোহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহ, ১৭০ হিজরীতে ১১শে মহাররম ইন্তেকাল করেন।
১৫।     হযরত মাওলানা জাহেদ রহমাতুল্লাহি আলাইহ মাাজার শরফি ওয়াক্র।
১৬।     হযরত মাওলানা ওবায়দুল্যাহ জহরাব রহমাতুল্লাহি আলাইহ , মাাজার শরীফ সমরকন্দ।
১৭।     হযরত মাওলানা ইয়াকুব ছররী রহমাতুল্লাহি আলাইহ মাজার শরীফ কাবুল।
১৮।     ইমাম শরীয়ত ও তরীকত হযরত খাজা বাহা উদ্দিন নকাশ বন্দী রহমাতুল্লাহ আলইহ উনার অসেল নাম মোহাম্মদ ইবনে মোহাম্মদ আল বোখারী রহমাতুল্লাহ আলইহ মাজার শরীফ বোখারার কছবাই আরাকানে।
১৯।     হযরত খাজা বাবা সামাসী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৭৫৫ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
২০।     হযরত খাজা আলী রামী তাতী রহমাতুল্লাহ আলইহ, বোখারা বামীতন গ্রামে ৬৯১ হিজরীতে জন্মগ্রহন করেন। এবং ৭২১ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। মাজার শরীফ খরীজম শহরে।
২১। হযরত খাজা মাহমুদ আবুল খায়ের ফাগনবী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৭১৬ হিজরীতে ১৭ই রবিউল আউয়াল ইন্তেকাকল করেন।
২২। হযরত খাজা আরিফ রিউগিরী রহমাতুল্লাহ আলইহ, বোখারা রিউগির গ্রামে জন্মগ্রহন করেনÑ ৬১৬ হিজরীতে ১লা শাওয়াল ইন্তেকাল করেন।
২৩। হযরত খাজায়ে খাজেগান খাজা অবদুল খালেক সিজ  দিওয়ানী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৫৭৯ হিজরীতে ১২ই রবিউল আউয়াল ইন্তেকাল করেন।
২৪। হযরত খাজা আবু ইউসুফ হামদানী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৪৪০ হিজরীতে হামদান শহরে জন্মগ্রহন করেন। ৫৩৫ হিজরীতে ২৭শে রজব ইন্তেকাল করেন।
২৫। হযরত খাজা আবু আলী পারমুদী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৪৭৭ হিজরীতে ৪ঠা রবিউল আউয়াল ইন্তেকাল করেন।
২৬। হযরত আবুল কাশেম কোশইরী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৩৭৬ হিজরীতে জন্মগ্রহন করেন। ৪৬৫ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
২৭। হযরত আবু আলী দাক্কাক রহমাতুল্লাহ আলইহ,৪০৫ হিজরীতে নিশাপুরে ইন্তেকাাল করেন।
২৮। হযরত আবুল কাশেম নাছিরাবাদী রহমাতুল্লাহ আলইহ, নিশাপুরে জন্মগ্রহন করেন এবং ৩৭২ হিজরীতে মক্কা শরীফে ইন্তেকাল করেন।
২৯। সাইয়েদ তোয়াফ হযরত জুনাইদ বোগদাদী রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৬ই রজব ২৯৭ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
৩০।     হযরত আবু বকর শীবলি রহমাতুল্লাহ আলইহ, ১০ই জিলহজ্জ ইন্তেকাল করেন।
৩১।     হযরত আবুল হাসান ছররী ছখতি রহমাতুল্লাহ আলইহ ৯০  বৎসর বয়সে ৩রা রমজান ইন্তেকাল করেন।
৩২।     হযরত শেখ মাররুফ কুরখী রহমাতুল্লাহ আলইহ, তিনি হযরত আবু হানিফ রহমাতুল্লাহ আলইহ, এর সাগরিদ ছিলেন। ২রা মহররম ৯০০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
৩৩। হযরত ইমাম আলী রোজা রহমাতুল্লাহ আলইহ, তিনি হযরত ইমাম মুছা কাজিমের প্রত্র ছিলেন। জন্ম মদিনা শরীফ ১০৩ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
৩৪। হযরত ইমাম মুছা কাজিম রহমাতুল্লাহ আলইহ, তিনি হযরত ইমাম জাফর ছাদিক রহমাতুল্লাহ আলইহ, এর পুত্র ছিলেন। ১২৮ হিজরীতে ৭ই সফর ইন্তেকাল করেন।
৩৫। হযরত ইমাম জাফর ছাদিক রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৮০হিজরীতে ১৭ই রবিউল আউায়াল জন্মগ্রহণ করেন। ১৪৭ হিজরীতে ১৫ই রজব ইন্তেকাল করেন। মাজার শরীফ জান্নাতুল বাকী মদীানা শরীফ।
৩৬। রাইছুল ফিকাহ ওয়াত্তবিঈন হযরত কাশেম ইবনে মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ আলইহ, ৭০বৎসর বয়সে ২৪শে জমাদিউল আউয়াল ইন্তেকাল করেন। মাজার শরীফ মক্ক শরীফ এবং মদীনা শরীফের মধ্যভাগে
৩৭। হযরত ছালমান ফারছি রহমাতুল্লাহ আলইহ, হযরত নবী করিম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া খাছ ছাহাবী ছিলেন। ১৫০ বৎসর বয়সে ১০ই রজব ৩৩ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
৩৮। আমীরুল মুমীনিন ছাইয়েদুল মুসলিমিন আফজালুল খোলাফায়ে  রাশেদীন হযরত আবু বকর ছিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু তাÑ আলাÑ আনহু ১৩ই হিজরী ২২শে জমাদিউল অউয়াল ইন্তেকাল করেন। মাজার শরীফ মদীনা শরীফ।
৩৯। জনাব সাইয়েদুল আম্বিয়াউল মুরসালিন মাহবুব রাব্বীল আলামীন আহাম্মদ মোজতবা মোহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি আখেরী জমানার পয়গাম্বার এবং আশরাফুল মাখলুকাত ওয়া খাতামুন্নাবিইন ও খাতামুল মুরসালিন ওয়া রহমাতুল্লিল আলামিন ৫৭০ খৃষ্টাব্দে পবিত্র মক্কা শরীফে তাওয়াল্লুদ ফরমান এবং সমস্ত জগতে দ্বীন ইসলাম প্রচার করিয়া ৬৩ বৎসর বয়সে পবিত্র মদীনা শরীফে ১২ই রবিউল আউায়াল সোমবার রেহালত ফরমান।

আমার আব্বা মরহুম (বাঘডুবীর বড় হুজুর) হযরত মাওলানা হফেজ আবদুল আউয়াল ছাহেব আমার চাচা হরহুম (বঘডুবীর ছোট হুজুর নামে খ্যাত) হযরত মাওলানা হফেজ মাহবুব উল্যাহ ছাহেব, দুধমুখা পীর হযরত মাওলানা আবদুল হক ছাহেব, হযরত মাওলানা রেজাউল হক ছাহেব। তাহারা হাজার হাজার মুমীন মুসলমানের পথ প্রর্দশক ছিলেন। যদি বলা হয়, তাহারা ভুল পড়াইয়াছেন। যদি ভুল পাড়াইয়া থাকেন। বলিতে হয়, এই ভুলের জন্য তাঁহারা সম্পূর্ন দায়ী। ভুল শিা দানের কারণে রোজ কিয়ামতে তাঁহাদেরকে দোষী সাব্যাস্ত করিয়া বিচারের সম্মুখীন হইতে হইবে। আর যদি তাহা না হয়, ছহি সুদ্ধ সত্য শিাদানের কারণে নিশ্চয়ই তাঁহারা পুরস্কৃত হইবেন।

আর যাহাারা এইভাবে আলিফকে হামজা ‘বে কে বা’ বলিয়া কোরান শরীফের নাম পরিবর্তন, ছুরা, রুকু বাদ দিয়া কামাইয়া রুকু চিহ্ন এবং পারা চিহ্ন না দিয়া, যাহা দিয়ছে তাহাও সঠিক জায়গায় না দিয়া ডাইনের চিহ্ন বামে, এক ছুরাতে দুই নাম যুক্ত করিয়া ঈমানে মোজমালকে এবং কালেমা শাহাদাত বাদ দিয়া এবং মহা পবিত্র আঁয়াতে কালেমা শরীফকে এলোমেলো করিয়া দো’জাহানের সরদার নবী পাক মুহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য নির্ধারিত দরূদ শরীফ সাধারণর নামের সঙ্গে যুক্ত করিয়া দরূদ শরীফর মানহানি করিয়া, শুধু দরূদ শরীফর মানহানি নয় আমার নবী পাকের মানহানি করিয়াছে এবং ইসলামেরও মানহানি করিয়াছে। অর্থাৎ এই দরূদ শরীফ শুধু আমাদের নবী পাকের নাম উচ্চারণ করিবার সাথ সথে পাঠ করিতে হয়। পৃথিবীতে অন্য কোন নবী বা আমাদের মুমীনÑমুসলমান ভাইÑবোনগণের নাম উচ্চারণের সাথে দরূদ শরীফ পাঠের অধিকার রাখে না। তাই দরূদ শরীফ, নবী পাকের নাম ব্যতীত অন্য নামের সাথে পাঠ করিলে হক্কে না হক করা হয় বলিয়া আমি মনে করি। হক্কে না হককারীর সাজা খুবই শক্ত বলিয়া ওলামায়ে কেরামগণ বলেন। যখন আমি বোম্বাই ছিলাম, তখন রশিদ আহম্মদ গাংগুহীর লেখা তাওয়ারীখে ইসলামের মধ্যে উক্ত কয়েকটি নামের সাথে দরূদ শরীফের সংপে চিহ্ন “ছোয়াদ” দেখিয়াÑ ছিলাম। তাই উল্লেখ করিলাম।

যাহারা গোটা ইসলাম জগতকে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলিয়া দিয়া চরম ধ্বংসের দিকে নিয়া গিয়াছে রোজ কিয়ামতের ময়দানে তাহাদেরকে নিশ্চয়ই বিচারের সম্মুখীন হইতে হইবে।

মুমীনÑমুসলমান ভাইÑবোনগণ, এই দুষ্মনে ইসলামীÑ দেরকে কষ্মিনকালেও মা করিবেন না। দো’জাহানের সরদার সাইয়েদুল মুরসালিন খাতামুন্নাবিইন, হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা আহাম্মদ মোজতাবা সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর শুভাগমনের বা মর্তে পদার্পণের সময় হইতে সেই সকল মুসলিম মনষীÑপন্ডিতÑআল্লামাগণ, ইসলামের উপর গবেষণা চালাইয়া ইসলামকে উন্নতির শিখরে পৌঁছাইয়া গিয়াছেন, তাঁহারা বর্তমান আল্লামা পন্ডিৎগণ অপো শিায় শিতি কম ছিলেন কি? অথচ তাঁহারা যেই শিা পদ্ধিতি প্রবর্তন করিয়া গিয়াছেন, তাহা সমগ্র মানব জাতিই তাঁহাদেরকে অনুসরণ করিতেছে এবং করিতে থাকিবে। এইভাবে অনুসরণ করিয়া চলিলে কোন জাতিই সহজে ধ্বংস হইবে না।

তাঁহারা আলিফÑযবর (আ) বেÑযবর (বা) পড়াইয়া শিখাইয়া গিয়াছেন। তাই আমাদের ওস্তাদ মহোদয়গণও আমাদেরকেও সেই ভাবেই পড়াইয়া লিখাইয়া বা শিখাইয়া গিয়াছেন আমার এতটুকু জীবনে বহু ওলামা কেরামের সাথে সাাতের সুযোগ হইয়াছিল। বিশেষ করিয়া বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে থাকাকালীন। কোন সময় কাহারো নিকট আলিফকে হামজা পড়ার কথা শুনি নাই। এই সম্পর্কে আলোচনা করিবার সময় ও সুযোগ হয় নাই। এই এই বিষয়ে চিন্তা করিবার প্রয়োজনও মনে করি নাই। শুধু এতটুকু শুনিয়াছি বা শিা পাইয়াছি যে, আলিফের উটর যখন কোন হরকত বা চিহ্ন হইবে অর্থাৎ জের, জবর ও পেশ হইবে কেবল তখনই আলিফ বর্ণটি হামজার মত উচ্চারণ হইবে। যেমন আলিফ-যবর (আ) এবং হামজা-যবর (আ)। আলিফকে হামজা বলিলে দুই হামজা এক সাথে উচ্চারিত হয়। হামজাকেও ‘হরকত যবর’ দিয়া বলা হয় Ñহামজা-যবর (আ)। আর যদি আলিফকেও আলিফ না বলিয়া, আলিফকে হামজা নাম দিয়া যদি বলা হয় হামজা-যবর (আ)। তাহা হইলে হামজা-যবর (আ), হামজা-যবর (আ)। একই অরের নাম দুইবার উচ্চারণ করা হয়। মুসলিম জগতে মুসলিম পন্ডিত, আল্লামাদের দ্বারা পরিচালিত ইসলামের শিা পদ্ধতি ভুল ছিল কি? ইহা আমার বিবেকের প্রশ্ন। বর্তমান যুগের পন্ডিতগণ যতই পান্ডিত্বের পরিচয় দিতে চাহিতেছে, ততই অতি দ্রুতগতিতে ইসলামের অরনতি ঘটিতেছে। তাই সময় থাকিতে মুমূন-মুসলমান ভাইবোনগণ অতি সতর্কতার সহিত এই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেুন।

ইসলামের দুষ্মনেরা প্রবল গতিতে সর্বদিক হ্টতে, সর্বত্রে আক্রমণ করিয়া চালিয়াছে। এখনই প্রতিরোধ করুন। যেখানেই আমার নিকট খটাকা লাগিতেছে বা ভুল বলিয়া সন্দেহ করিতেছি বা বিভ্রান্ত বোধ করিতেছি। কেবল তাহাই যথা সম্ভব যতটুকু পারিতেছি আমি আমার আশেক রাসুল, আশেক দ্বীন, আশেক আল্লাহ, মুসলমান ভাইগণের খেদমতে এবং আল্লামা ও নায়েব রাসুল মহোদয়গণের খেদমতে পেশ করিতেছি। আরো যে কতদিকে আঘাত হানিয়াছে আমার জানা নাই। বিশেষজ্ঞকৃন্দ বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রাখিলে বুঝিতে পারিবেন এবং মোকাবিলা করিতে পারিবেন।

আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অর বাদ দিয়া দিয়াছ। অর্থাৎ আরবী বর্ণমালার মধ্য হইতে “লাম-আলিফ” বর্ণটি সরাইয়া দিয়াছে। এই পৃথিবীতে প্রত্যেক ভাষার মূল্যার বা বর্ণগুলোর উপরেই নিজ নিজ ভাষা প্রতিষ্ঠিত। তাই মূল বর্ণুগুলো হইতে একটি বর্ণও সরানোর অধিকার কাহারো নাই। একটি বর্ণ সরাইলে গোটা জাতিই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়িয়া যায়। এখন আরবী (লাম-আলিফ) বর্নটি বাদ দেওয়াতে কালেমা তাইয়্যেবা, কালোমা তাওহিদ, কালেমা শাহাদাৎ উক্ত কালেমা গুলিই বাদ পড়িয়া গিয়াছে। অথচ লাম-অলিফ অরটির উপরই আমাদের ইসলামের মূল ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত। যেমন:-

১। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
২। আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া-আশহাদু আন্না-মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
৩। লা-ইলাহা ইল্লা-আন্তা ওয়াহিদাল্লা সানিয়া লাকা-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি ইমামুল মোত্তাকিনা রাসুলু রাব্বিল আলামীন।
এই লাম-আলিফ অরটিকে অতিরিক্তাার বা ভুল অর বলিয়া সরানোর কারণে আমাদের সন্তানেরা এই অরটি হইতে চিরতরে বঞ্চিত হইল। যখন তাহারা এই ভুল অরটি বা এই অতিরিক্তারটি কালেমাগুলোর মধ্যে দেখিবে, তখন কালেমাগুলোকেই ভুল কালেমা বলিয়া বসিবে।
অরটি আগত সন্তানেরা আর পড়িবে না। তাই লাম-আলিফ অরটির গুরুত্বও বুঝিবে না। তখন সন্তানেরা বলিবে বা বলিতে বাধ্য হইবে। কালেমা তাইয়্যেবও ভুল অরে লিখ হইয়াছে। সুতারাং কালেমা তাইয়্যেবটিই ভুল। ইসলামই ভুলের উপর প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, ইহা কোন ধর্মই নহে।

এই লা-আলিফ অরটি দ্বারা “লা-শারীকা লা সানিয়া” লিখা হইয়াছে। এই লাম-আলিফ অরটি কায়দার মধ্য হইতে বাদ দেওয়ায় বাচ্চারা এই অরটি হইতে চিরতরে বঞ্চিত হইয়াছে। সুতারাং এই লাম-আলিফ দ্বারা লা-শারীক, লাসানিয়া ইত্যাদি লিখা দেখিলে ভুল বলিয়া ফেলিয়া দিবে। সুতরাং কালমা শাহাদাতের মধ্যে লা-শারীকা লিখা দেখিলে বলিবে ইহাও ভুল। সুতরাং কালোমা শাহাদাৎ ভুল। কালেমা তাওহিদের মধ্যে যখন দেখিবে লা-সানিয়া লাকা লিখার মধ্যে এই “লাম-আলিফ” অরটি তখন বলিবে এই কালেমাটিও ভুল। কারণ বাদ পড়া একটি অতিরিক্ত অর দ্বারা লিখা  হইয়াছে। নিশ্চয়ই এই কালেমা লিখকগণ, অজ্ঞ-অনভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন।

কালোমাটি যখন ভুল অর দ্বারা লিখা হইয়াছে সম্পূর্ণ কালেমাটিই ভুল। সুতরাং ইসলাম ধর্মটাই ভুলের উপর প্রতিষ্ঠিত বলিয়া উক্তি করিতে দিধা বরিবে না। ঈমানে মোজমালের মধ্যে যখন আরকানিহি শব্দটি দেখিবে, তখন উহাকেও ভুল বলিতে কুন্ঠিত হইবে না। কারণ এই শব্দগুলি হইতে সন্তানদেরকে বঞ্চিত করিতেছে। এই শব্দগুলি হইতে বঞ্চিত করার অধিকার কে দিয়েছে?

১। আলিফকে হামজা বলিতে
২। ওয়াহদাহু লা শারী কালাহু
৩। আরকানিহী
৪। মুমীন মুর্দোগণদেরকে সালাম দেয়ার সময় মিনাল মুসালমিনা ওয়াল মুসলিমাত বলা হইতেছে না কেন এবং স্কুলের পাঠ্য বইয়ে সংযোজনের জন্য কর্তৃ পরে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
৫। প্রার্থনা বা মুনাজাতের সময় যখন পিতা মাতার জন্য খাস দোয়াটি পাঠ করা হয় তখন পিতা মাতার খাস দোয়াটির সাথে পিতা মাতাজনিত শব্দ না পাঠ করতে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হইয়াছে ফলে যাহারা উক্ত শব্দগুলি পাঠ করিবে আর যাহারা করিবে না এই দুইয়ের মধ্যে ঝগড়া হানাহানি মারামারি পর্যন্ত হইতে পারে। যাহারা এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করিল, তাহারাই ইসলামের মূল দুষ্মন। মোকবিলা করুন। কৌশলে ইসলাম ধর্ম হইতে বাচ্চাদেরকে সরাইয়া নিতেছে সাবধান, সাবধান, সাবধান মোকাবিলা করুন।
এই লম-আলিফ যুক্তারটি, বিশেষ করিয়া আমাদের কালেমা গুলির মধ্যে ব্যবহার হইয়াছে। এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করিলাম, জনাব “লাম-আলিফ” বর্ণটি আরবী বর্ণমালাগুলি হইতে সরাইয়া দেওয়া হইল কেন? উত্তরে বলিল, ইহা একটি অতিরিক্ত অর, আগেকার লোকেরা ভুল করিয়াছে তাই বলে আমরাওকি ভুল করিব? তাই মূল বর্ণমালা হইতে উহাকে সরানো হইয়াছে। যদি এই লাম-আলিফ ভুল বয়িা বাদ দেওয়া হয়, তাহা হইলে আমাদের কালেমাগুলিই ভুলের উপর প্রতিষ্ঠিত। ইহাই বুঝাইতে চাহিতেছে। যাহারা এইরূপ করিয়া আমাদেরকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলিয়া দিয়াছে।  তাহাদেরকে কষ্মিনকালেও মা করিব না। এখনও সময় আছে মোকাবিলা করুন।

কারী ছাহেবগণ আলিফকে নকল হামজা নাম দিয়াছেন। তাহা হইল আলিফ ঠীকই হামজা নহে। হামজার মত উচ্চারণ হয় বটে। সুতরাং নকল হামজা বলিবার প্রয়োজন আছে বলিয়া আমি মনে করি না। যেমন ভেঁড়াকে ছাগলের মত দেখাইলেও ভেঁড়াকে নকল ছাগল বলা যাইবে না। তেমনি আলিফ বর্ণটি হামজার মত উচ্চারণ হইলেও আলিফকে হামজা বলা যাইবে না। আলিফ হামজা নহে, হামজার মত উচ্চারণ হয় মাত্র। সুতারাং আলিফ হামজা নহে, হামজা ও আলিফ নহে।


যদিও বর্ণ দুইটির উচ্চারণ এক। দুইটি দুই নামেই স্বীয় অস্তিত্বের পরিচয় ঘটায়। যেমনঃ- আলিফ যবর (আ) আর হামজা যবর (আ)। আসল হামজা আর নকল হামজ হইতে পারে না। হামজা, হামজাই। আলিফ্ আলিফই। নকল বলিতে গুণগতভাবে কম মুল্যের বুঝায়। এই পৃথিবীতে কোথায়ও কেহই নকলকে ভাল বাসে না। সুতারাং নিজের গুণেই পরিচিত। আলিফের মুল্য দেওয়ার মত কেহই নাই। তাহাকে অমুল্য ধন বলে। পবিত্র কোরান শরীফ ইহার মুল্য কেহই দিতে পারিবে না। তেমনি আলিফ অরটি শুধু মহামুল্য নহে। ইহা একটি অমুল্য অর। কেননা, মহান করুণাময় আল্লাহ পাকের আসল কাতি নামের প্রথম অরটিই হইতেছে আলিফ। ইহা একটি অমুল্য অর। আলিফ দিয়া (আল্লাহ), আলিফ দিয়া ), (আউয়াল), আলিফ দিয়া (আখের), আলিফ দিয়া (আকবার) ইত্যাদির শব্দের প্রথম অর আলিফ।

কোন ছাত্রকে আল্লাহ লিখিতে বলা হইল ঃ তখন ছাত্র ওস্তাদের নিকট “অল্লাহ” শব্দের বানান জানিতে চাহিল। ওস্তাদ বলিলঃ “হামজাÑলাম-যবর আল, লাম-যবর লা-হ আল্লাহ। এখন ছাত্রটি আলিফ দিয়া না লিখিয়া হামজা লাম যবর আল-লাম যবর (লা) হ, লিখিয়া দিল। হামজা দ্বারা লিখা আল্লাহ শব্দটি শুদ্ধ হইল কি? হামজা প্রায় অন্য বর্ণের সাথে যুক্ত হইয়া উচ্চারিত হয় যেমনঃ- ইউ মেনুনা (ইয়া হামজা ওয়াপেশ)।

আলিফ কিন্তু তাহা নহে। আলিফ অন্যের সাহায্য ব্যতীত নিজ গুণেই চলে। এমনকি সে অন্যের গুণকেও বৃদ্ধি করে। যেমনঃ- বে-যবর (বা), কে আলিফ যোগ হইয়া বের মর্যাদা টানিয়া বাড়াইয়া দিল। আলিফ যে বিশেষ গুণের অধিকারী কোন সন্দেহ নাই। সুতারাং আলিফকে হামজা বলিয়া তাহার মান কমাইয়া দেওয়া হইল। আলিফ কিন্তু স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি শক্তিধর বর্ণ। ইহাকে একটা কম্মানের বা শক্তিহীন অর্থাৎ যাহা অন্যের সাহায্য ছাড়া চলিতে পারে না। এমন একটি বর্ণের সারিতে নিপে করা মোটেই উচিত হইবে না বলিয়া আমি মনে করি। সুতারাং আলিফকে হামজা বলা যাইবে না। বলিতে হইবে আলিফের উপর যখন কোন হরকত বা চিহ্ন হইবে। যেমনÑ আলিফের উপর যবর আলিফ-যবর (আ) আলিফের উপর পেশ, আলিফ পেশ (উ) আলিফের নিচে জের আলিফ জের (ই)।

আরিফকে সরাসরি আলিফ যবর (আ) না বলিয়া হামজা যবর (আ) বলিয়া কেন শিা দিতেছে? যুগ যুগ ধরিয়া আলিফ-বে-তে-ছে পড়ানো ইইয়াছে। এখন শুদ্ধতার নামে বা তা ছা পড়াইতেছে কেন? কেহ পড়াইতেছে বে, কেহ বা, আলিফকে আলিফকে আলিফ না বলিয়া আলিফকে হামজা নাম দিয়া হামজা যবর আ বলিতেছে। আর হামজাকেও হামজা যবর আ পড়াইতেছে। কেহ কালেমা শাহাদাতের মধ্যে ওয়াহদাহু লা শারী কালাহু পড়াইতেছে। আর কেহ ওয়াহদাহু লা শারী কালাহু বাদ দিয়া পড়াইতেছে। আর ইমানে মোজমালের আরকানিহী শব্দটি বাদ দিয়া পড়াইতেছে। আর বেহ আরকানিহী শব্দটিসহ পড়াইতেছে।

কেহ কেহ মুসলমান কবরবাসীদেরকে সালাম পেশ করিবার সময় বলিতেছে, “আসসলালামু আইকুম ইয়া আহলাল কবুর” আর কেহ বলিতেছে, “আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর” এর সাথে মিনাল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত। এইখানে ল্য করা যাইতেছে যে, উক্ত দোয়া বা সালামের মধ্যে যাঁহারা মিনাল মসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত বলিতেছে না তাহাদের সালামের উদ্দেশ্যেই অসম্পূর্ণ  থাকিয়া যায়। বলিতে পারেন যে, সকল শব্দ এবং অর বাদ পড়িয়াছে বা বাদ দেওয়া হাইয়াছে বলিয়া বল হইতেছে, সেই সকল শব্দগুলি এবং অরগুলিতো বইয়ের অন্যান্য দোয়া তসবির মধ্যে আছে। বাদ দেওয়া হইল কি করিয়া?

বাদ দেওয়া হইয়াছে বলা হইতেছে, এই জন্যে যে, শব্দ এবং অরগুলি এতকাল যাবৎ যেইস্থানে ছিল, সেইস্থোনে শব্দ এবং আরগুলি নাই। আসল স্থান হইতে শব্দ এবং অরগুলিকে সরানো  হইতেছে। কোন জিনিস মালিকের অগোচরে স্থানান্তর করা, ইহা সম্পূর্ণ চৌর্ষবৃত্তির লণ। চোরেরাই এই ধরণের কর্ম করিয়া থাকে। সুযোগ বুঝিয়া চিরতরে গায়েব করিয়া করিয়া দেয়। এই শব্দ এবং অরগুলি বাদ দেওয়া এবং স্থান্তর করিবার অধিকার কে দিয়েছে? ঐরূপকারীদের অবশ্যই মোকাবিলা করিতে হইবে।

মালিকের জিনিস মালিক যেইখানে রাখিয়াছিল, সেইখানে না দেখিলে দু:খ ভারাক্রান্ত মনে ফিরিয়া যায়। কিন্তু বিনা অনুমতিতে স্থানান্তর করনেওয়ালার বিরুদ্ধে আল্লাহর মহা আদালত মামলা পেশ করিয়া চলিয়া যায়। যাহার ফলে একদিন না একদিন চোর ধরা পড়িয়া যায়। চুরির প্রতিফল ভোগ করে। চোর ধরা পড়িয়া সাজা ভোগ করিবার সময় যদি বলে, আমিতো ঘরের জিনিষ বহিরে নেই নাই। ঘরের মধ্যেই এক জায়গায় আছে। তখন সেই চোর রেহাই পাইতে পারে কি? মালিক নিশ্চয়ই এই কথা বলিবে, আমার বিনা অনুমতিতে দৃষ্টির আড়াল বা স্থানান্তর করা চোরর কর্ম। সুতারাং স্থানান্তর করা হইল কেন? ইহা জঘন্য অন্যায়, এই অন্যায়কারীর সাজা হওয়া উচিত নয় কি? সাজা না হইলে চোরের সংখ্যার বৃদ্ধি পাইবে।

কালেমা- ঈমান- কোরান শরীফের শব্দ লইয়া একদল চক্রান্তকারী যেইভাবে লুকোচুরি খেলিতেছে ইহা একটি অমার্জনীয় অপরাধ বলিয়া আমি মনে করি। আজ এদের মোকাবিলা করুন।

চক্রান্তকারীগণ সাধারণভাবে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে ইসলামের গভীরে প্রবেশ করিয়াছে। সমগ্র ইসলামী জগৎটাই চক্রান্তকারীদের কবলে পড়িয়া গিয়াছ। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক, সামাজিক, শাসনতান্ত্রিক, বিচার বিভাগ, ব্যবসার েেত্র এবং শিা েেত্র মোট কথা সর্বেেত্র চক্রান্তকারীগণ নিখুঁতভাবে প্রবেশ করিয়া বহু উপায়ে ইসলামকে ঘায়েল করার চেষ্টা করিতেছে।

বুদ্ধিজীবী মুমীন-মুসলমান ভাইবোনগণ, সর্বদিকে একটু তীè দৃষ্টি রাখিলে এই চক্রান্তকারীদেরকে ঘায়েল করিতে সম হইবেন আল্লাহর রহমতে। ইসলামী সঠিক আকিদাকে এত দুর্বল করিয়াছে যে, ভবিষৎ বংশধরদের মধ্যে ইসলামকে একটা কাল্পনিক নীতিমালা হাসাবে দাঁড় করাইয়া বিভ্রান্তিতে নিপে করিবে। এখনও সময় আছে এই অন্ধকারের করাল গ্রাস হইতে ইসলামী আকিদাকে রা করুন। ইসলাম রা করা উম্মতে মোহম্মেদীদের জন্য ফরয।

ইসলামকে রা করিতে হইলে একটি ইসলামী প্রকাশনা সেন্টার বোর্ডের প্রয়োজন। যাহারা অনুমদন ব্যতীত কোন পাব, লিসার্স ইসলাম সম্পর্কিত কোন বই পাবলিষ্ট না করেন। দেশের এবং জাতির তিকর উক্তিগুলি পরিহার করাই হবে এই বোডের দায়িত্ব।

নূরাণী ঃ
নূরাণী শব্দটি এমন একটি শব্দ যাহা নূর নহে, নুরের মত যেমন সোনালী শব্দটি স্বর্ণের মত স্বর্ণ নহে। নূরাণী শব্দটিও ঠিক তেমনি নূরের মত, নূর নহে। যদি কোন তরল স্বর্ণের মধ্যে এক খন্ড লোহাকে ডুবাইয়া তুলিলে আলোকিত হয় বা নূরাণী হয়। যদি কোন কাপড় বা বস্তুর মধ্যে তৈল দেখা যায় তখন সেই কাপড় বা বস্তুটিকে সরাসরি তৈল বলা যায় না। তৈল তৈলই, তৈল কোনদিন তৈলান্ত হইতে পারে না। স্বার্ণ স্বার্ণই, স্বার্ণকে সোনালী বলা যায় না। তৈলাক্ত শব্দ যেমন সম্পুর্ণটা তৈল নহে, সোনালী শব্দটাও সম্পূর্ণ স্বর্ণ নহে। তেমনি নূরাণী  শব্দটিও সম্পূর্ন নূরে নহে। যেমন আলোহীন বস্তুটি আলোর সংস্পর্শে আসিয়া আলোকিত হইল। তেমনি নুরহীন বস্তুটি যেন নুরের সংস্পর্শে আসিয়া নুরানী হইল।

ফয়েজ আধ্যাত্মিক এক মহা শক্তিকে বুঝায়। সেই শক্তির মাধ্যমে অর্ন্তদৃষ্টি বৃদ্ধি পায় এবং আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ জ্ঞান লাভ করা যায়। এই শক্তি অলী-পীর-বুজুর্গণ এলেম এবং আমলের দ্বারা আল্লাহর নিকট হইতে লাভ করিয়া অসাধারণ মানবে পরিনত  হন। সাধারণ মানুষ যখন উনাদের সান্নিধ্যে বা সংস্পর্শে থাকেন, তখন অলীগণের নিকট হইতে ফয়েজ হাসিল করিয় ফয়েজীয়াব হন। ফয়েজ শব্দ আর ফয়েজীয়াব শব্দ এক নহে। যাহা ফয়েজ তাহা ফয়েজীয়াব নহে। আর যাহা ফয়েজীয়াব তাহা ফয়েজ নহে ফয়েজ ফয়েজই।

নূর নূরই, নূর নূরানী নহে। স্বর্ণ স্বর্ণই, স্বর্ণ সোনালী নহে। আলোহীন বস্তুর মধ্যে যখন আলো প্রবেশ করানো হয়। তখন তাহাকে আলোকিত বলা হয়।

তেমনি নূরহীন বস্তুর মধ্যে নূর প্রবেশ করাইয়া যেন নূরানী করা হইল। এখন ল্য করার বিষয় হইল এই যে, মহা পবিত্র কোরান আলোহীন বস্তু নহে। কোরআন শরীফতো স্বয়ং নূর। নূরানী হইতে যাইবে কেন? পাঠকবৃন্দ চিন্তা করুন। কোরআন শরীফতো নিজেই আলোর পিন্ড সুতারাং আলোকিত হইতে যাইবে কেন?

যেইখানে ইসলামকে নূর বলা হইয়াছে, সেইখানে ইসলামকে আলোকিত নূরানী বলিলে ঠিক হইবে কি? ইহা করিয়া শুধু কোরআন শরীফকে হেয় করে নাই। গোটা ইসলামী বিধানকেই অপমান করা হইয়াছে। কেন? কি কারণ? আজ অবশ্যই এদের মোকাবিলা করতে হবে।

একটি বিশেষ কথা। গড-ঈশ্বর-ভগবান এই শব্দগুলির সাথে আল্লাহ শব্দের মোটও সামজস্য নাই। কারণ উক্ত শব্দগুলির স্ত্রী  লিঙ্গ আছে। কিন্তু আল্লাহ শব্দের লিঙ্গান্তর নাই। যেইখানে স্ত্রী লিঙ্গ আছে সেইখানে ঝগড়ার সম্ভাবনা আছে। আল্লাহ শব্দের স্ত্রী লিঙ্গ নাই। তাই ঝগড়াও নাই। আল্লাহ এক তাই এই বিশ্বে আকাশে-পাতালে সব একই নিয়মে চলিতেছে। এবং কিয়ামত পর্যন্ত চলিতে থাকিবে।

অর, শব্দ এবং ভাষা যেই সকল পন্তিতগণ আবিষ্কার করিয়া গিয়াছেন, তাঁহারাই এই আল্লাহ শব্দটির বিপরীত শব্দ অর্থাৎ আল্লাহ শব্দের স্ত্রী লিঙ্গ আবিস্কার করিতে পারেন নাই। আর কেহ পারিবেও না। মহান আল্লাহ নিজেই এই সম্পর্কে সংকেত দিয়াছেন, পবিত্র কোরআন শরীফের মধ্যে। যেমনঃ কোলাহু-আল্লাহু, বল আল্লাহ আহাদ, তিনি একক। পরিষ্কার করিয়া দিয়াছেন। কারণ, মানব জাতি বহু বস্তু, প্রানী, বৃ, নদী, মাটি, পাথর, ইত্যাদিকে ভগবান-দেবতা আল্লাহ রূপে দেখিয়া খাকে। যেমনঃ মহা পবিত্র কাবা শরীফের মধ্যেও ৩৬০টি দেবতা রাখিয়াছিল এবং ঈসা (আঃ) কেও আাল্লাহর পুত্র বলিয়াছিল। এখনও বলিয়া থাকে।

এইখানে লনীয় বিষয় এই যে, মানুষের পুত্র যেমন মানুষ হয়, সুতারাং সেই হিসাবে দেখা যায় ঈসা (আঃ) এর অনুসারীগণ। ঈসা (আঃ) কে আল্লাহর পদে অধিষ্ঠিত করিয়াছে। নাউজুবিল্লাহ। ঈসা (আঃ) কে আল্লাহর পুত্র বলিয়া থাকে এই জন্য আল্লাহ পাক ফরমাইয়াছেন। হু-আহাদ তিনি এক দ্বিতীয় নাই। আবার ফরমাইয়াছেন, লাম-ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ কোন আওলাদ বা সন্তান-সন্ততি নাই। তিনি কাহারও সন্তান নহে।

সুতারাং আল্লাহ এক, তাঁহার স্ত্রী লিঙ্গ নাই। তাই তাঁহার কোন অংশীদারও না। যেইখানে। অংশীদার থাকে সেইখানে ঝগড়ার সম্ভাবনা থাকে। ঝগড়া বাঁধিলে, এক খোদা বলিত আমি আমার প হইতে একটি সূর্য আকাশে ভাসাইব, অন্য আল্লাহ বলিত আমি আমার ইচ্ছেমত চাঁদ-সূর্য আকাশে ভাসাইয়া তোমার সূর্যের আলোকে অন্ধ করিয়া দিব। তোমার সূর্যর আলো বিকিরণ করিতে দেওয়া হইবে না। কিন্তু এই ধরনের কিছুই  সংঘটিত হইতেছে না। কারণ আল্লাহ এক। আল্লাহ শব্দটিও  একক। জিরোর মান জিরো। একই কারণে বিশ্ব একই নিয়মে চলিতেছে এবং চলিতে থাকিবে। সুতারাং আল্লাহ শব্দের সাথে ঈশ্বর-ভগবান-দেবতার এবং গডের কোন প্রকারেই তুলনা হইতে পারে না। আল্লাহর কোন উদাহরণ বা মেসাল নাই। আল্লাহর মেসাল আল্লাহই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ এক। তিনি লা-শারীকা। অর্থাৎ তাঁহার কোন অংশীদার নাই। মুমীন-মুসলমান ভাইবোনেরা আল্লাহ শব্দটিকে উপরোক্ত দেব-দেবীওয়ালা শব্দগুলির সাথে মোটই এক করিয়া দেখিবে না। এমনটিও বলিবে না যে দেব-দেবী যেমন আল্লাহও তেমন। নাউজুবিল্লাহ। সর্ব কালে, সর্ব সময়, সর্ব জায়গায়, সর্ব ভাষায় আল্লাহর জাতি নাম আল্লহ-ই উচ্চারিত হইবে।


হোসাইনিয়া কুতুবখানা, ৬৩, চক সার্কুলার রোড, ঢাকা। কায়দার মধ্যে লিখিয়া রাখিয়াছেঃ ইহা আর হামাররা হেমিনকে, ইয়া যার হামররা হেমিন। কেন? কি কারণ? মোকাবিলা করুন।

আমীন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন